সাঁওতাল বিদ্রোহের স্মরণে বুধবার সর্বত্র উদযাপিত হল হুল দিবস। এই দিনে বীরভূমের প্রান্তিক এলাকা রাজনগরের মানুষ স্মরণ করলেন নির্মমভাবে খুন হওয়া সাঁওতাল বিদ্রোহের সেনানীদের। এলাকাবাসীদের আক্ষেপ, একসময় অবিভক্ত বাংলার রাজধানী থেকে শুরু করে পাঠান, ব্রিটিশ, সাঁওতাল বিদ্রোহ, বর্গী হানা সহ হরেক ইতিহাসের সাক্ষী থেকেও অবহেলিতই রয়ে গিয়েছে রাজনগর।
শোনা যায়, বীরভূমের অসংখ্য সাঁওতাল বিদ্রোহীকে কখনও গুলি করে, কখনও আবার খোলা মাঠে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। সেই সমস্ত ঘটনার কথা ইতিহাসে তুলে ধরেছেন জেলারই এক ইতিহাসবিদ গৌড়ীহর মিত্র। পরবর্তীকালে বীরভূমের গবেষক অরুণ চৌধুরী রাজনগর এলাকার অসংখ্য বিদ্রোহীর হত্যার বিবরণ তুলে ধরেন।
গণহত্যার ইতিহাস
রাজনগর রাজবাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি সুপ্রাচীন গাব গাছ আছে। সেই গাছেই এই অঞ্চলের আদিবাসীদের বিদ্রোহী নেতা মঙ্গলা মাঝিকে ফাঁসি দেয় ব্রিটিশরা। এক ব্রিটিশ আধিকারিককে তীর মেরে হত্যা করার পরেই ইংরেজ বাহিনী উন্মত্ত হয়ে কার্যত আদিবাসী বিদ্রোহীদের ওপর গণহত্যা চালায়। শোনা যায়, আদিবাসীদের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল রাজনগরের কুশকর্ণিকা নদীর জল।
রাজনগরের সমাজকর্মী সন্তোষ কর্মকার বলেন, বাম আমলে গাব গাছটাকে বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারপর আর কিছু হয়নি। রাজনগরে যে পরিমান ঐতিহাসিক স্মারক স্মৃতি আছে তা সংরক্ষিত রেখে মানুষের কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন। এখনও কুশকর্ণিকা নদীর পাড় বা গাব গাছের নীচ দিয়ে যেতে গা ছমছম করে এলাকাবাসীদের। সেই ঘটনাকে মনে রেখেই হুল দিবসের দিনে গাব গাছের নিচে শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হন এলাকার মানুষজন।
হুগলিতেও উদযাপন
অন্যদিকে হুল দিবস উপলক্ষে হুগলির হরিপাল ব্লকের বাসুদেবপুরে করোনা বিধি মেনে উদযাপিত হল অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না, বিধায়ক করবী মান্না, পরিবহণ দফতরের আধিকারিক মঙ্গল সরেন, দেবাশিষ পাঠক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।