ই কমার্স সংস্থা অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস আবার খবরের শিরোনামে। ৫৭ বছরের জেফ বেজোস এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তি। তবে বেজোস এবার খবরের শিরোণামে এসেছেন অন্য কারণে।
ই কমার্স সংস্থা অ্যামাজনের সিইও পদ থেকে এবার সরে দাঁড়ালেন বেজোস। তবে সিইও পদ থেকে সরলেও এটিকে রিটায়ারমেন্ট বলতে নারাজ বেজোস। এর বদলে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেবেন তিনি।
সমীক্ষা বলছে বিগত পাঁচ বছরে বেজোসের সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। ২০২৬ এর মধ্যে, যখন জেফের বয়স হবে ৬২ বছর, তিনিই হবে দুনিয়ার প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার। তার আগেই অ্যামাজনের সিইও পদ থেকে ইস্তাফা দিলেন মার্কিন ধনকুবের।
বেজোসের উত্তরসূরী হবেন অ্যান্ডি জেসি, বর্তমানে তিনি অ্যামাজনের ক্লাউড ব্যবসার প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এই পরিবর্তন সম্পন্ন হবে।
অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান প্রধান নির্বাহী বেজোস জানিয়েছেন, এর ফলে নিজের অন্যান্য কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দেওয়ার “সময় ও শক্তি” পাবেন তিনি। বেজোস লিখেছেন “নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে আমি অ্যামাজনের গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকবো, এবং ডে ১ ফান্ড, বেজোস আর্থ ফান্ড, ব্লু অরিজিন, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এবং আমার অন্যান্য আগ্রহের বিষয়গুলির জন্য সময় পাবো।” – মঙ্গলবার অ্যামাজন কর্মীদের উদ্দেশ্যে এক চিঠিটি লেখেন তিনি। এর সঙ্গেই লিখেছেন, “আমি এতোটা কর্মচাঞ্চল্য এর আগে অনুভব করিনি, এবং এটি অবসর গ্রহণ করা নয়। এই সংস্থাগুলোর পক্ষে যে প্রভাব রাখা সম্ভব, সে ব্যাপারে আমি অসম্ভব আগ্রহী।” – যোগ করেছেন ৫৭ বছর বয়সী বেজোস।
১৯৯৪ সালে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময়ে সাধারণ অনলাইন বই বিক্রেতা হিসেবে গ্যারেজে যাত্রা শুরু করা অ্যামাজন এখন অনলাইন রিটেইল জায়ান্ট। গোটা বিশ্বে অ্যামাজনের কর্মী সংখ্যা ১৩ লাখ।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময়টিতে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে অ্যামাজনের ব্যবসাও। গত বছর ৩৮ হাজার ছয়শ’ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বিক্রির খবর জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। হিসেবে ২০১৯ সালের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। গত বছর অ্যামাজনের মুনাফাও প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দুই হাজার একশ’ ৩০ কোটি ডলারের ঘরে দাঁড়িয়েছে।
অ্যামাজন হল একটি মার্কিন ইলেকট্রনিক বানিজ্য কোম্পানি। এর সদর দফতর রয়েছে ওয়াশিংটন রাজ্যের সিয়াটলে। বর্তমানে এই শপিং সাইটে জামাকাপড়, যাবতীয় পোশাক, আসবাবপএ, ইলেকট্রনিকস গ্যাজেট সহ নিত্যনতুন প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায়। তবে আজ এই অনলাইন সংস্থা যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিগত ২৬ বছর আগে তা ছিলো না। অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়েই এই জায়গা,সুনাম এবং কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেছে অ্যামাজন।
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস একবার জানিয়েছিলেন , ১৯৯৪ সালে এই ব্যবসা বা অনলাইন বইয়ের দোকান খোলার জন্য তিনি তার বাবা-মায়ের থেকে মাএ ২৭৫,৫৭৩ ডলার অর্থ সাহায্য পেয়েছিলেন৷ আর যা দিয়ে শুরু করেছিলেন তাঁর এই ব্যবসা। যদিও এই ব্যবসায় কতটা সফলতা আসবে তা প্রথম দিকে তিনি কিছুই আন্দাজ করতে পারেননি।এমনকি তাঁর মনে হয়েছিল একশো শতাংশের মধ্যে ত্রিশ শতাংশ সফলতা আসতে পারে।