আধুনিক যুগের ঝাঁসির রানি! দেশ বাঁচাতে অস্ত্র ধরলেন এই ফার্স্ট লেডি

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যেকার উত্তেজিত পরিস্থিতির মধ্যে নাগরগো এবং কারাবাগকে বাঁচানোর জন্য যুদ্ধের ময়দানে নেমে পড়লেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ার স্ত্রী আন্না হাকোবায়ান। 

গত ২৭ শে অক্টোবর থেকে সেনা প্রশিক্ষণে যোগ দিয়েছেন আন্না হাকোবায়ান। কারাবাগ রক্ষায় যে মহিলা দল নিয়োজিত রয়েছে, তাদের সঙ্গেই যোগ দেওয়ার কথা আন্নার।

 সম্প্রতি স্যোশাল মিডিয়ায় আন্না হাকোবায়ান রাইফেল প্রশিক্ষণের ছবি ভাইরাল হয়েছে। অ্যানা নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, আপাতত একটি সেনা ঘাঁটিতে ১২ জন মহিলা সৈনিকের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তিনি। দিনকয়েকের মধ্যেই সীমান্তে সম্মুখ সমরে হাজির হবেন আন্না। 
 

পেশায় সংবাদপত্রের সম্পাদক ৪২ বছরের আন্না প্রমাণ করে দিয়েছেন দেশপ্রেম কাকে বলে। কলম ছেড়ে আন্না লিখেছেন,  আমাকে নিয়ে ১৩ জন মহিলার একটি দল সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করছি। কয়েকদিনের মধ্যেই সুরক্ষায় সেনাকে সহায়তা করতে আমরা সীমান্তে পাড়ি দেব। 
 

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীয়ের এই কর্মকান্ড সর্বজন প্রশংসিত হয়েছে। দেশের সুরক্ষায় আন্নার এই ভূমিকা বিশ্বের দরবারে নজির গড়েছে।

তবে এই প্রথম নয়। এর আগে গত অগাস্ট মাসেও একবার অন্য মহিলাদের সঙ্গে কমব্যাট প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন আন্না। সাতদিনের ওই প্রশিক্ষণে শারীরিক ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ হয়েছিল। ফলে, এটা হচ্ছে তাঁর দ্বিতীয় সামরিক প্রশিক্ষণ।

ইতিমধ্যেই যুদ্ধে সামিল হয়েছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ছেলে অ্যাশট পাশিনিয়ানও। বর্তমানে তিনি সীমান্তে যুদ্ধরত। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে বিতর্কিত নাগারনো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে তুমুল লড়াই চলছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে। ইতিমধ্যে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে।
 

১৯৯০ সালে বাকু থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আর্মেনীয় অধ্যুষিত আজারবাইজানের পার্বত্য কারাবাখ প্রদেশের দখল নিয়ে দু'দেশের মধ্যে তীব্র দীর্ঘমেয়াদী সংঘর্ষ চলছে। এই লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
 

১৯৯৪ সাল থেকে কারাবাখ ছিল আর্মেনিয়ার দখলে। কিন্তু, সাম্প্রতিক লড়াইয়ে বিপুল ক্ষতি হয়েছে তাদের। আজারবাইজানের কিছু এলাকা থেকে পিছু হঠতে বাধ্য হয় আর্মেনিয়া।

এই পরিস্থিতিতে আজারবাইজানের পক্ষে রয়েছে তুরস্ক, পাকিস্তানসহ একাধিক মুসলিম-অধ্যুষিত দেশ। আবার আর্মেনিয়ার পক্ষে রয়েছে ফ্রান্সসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার মত অবস্থা দেখা দিয়েছে।

 বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল ঘিরে সংঘাতের কুটনৈতিক নিস্পত্তি করতে ইতিমধ্যে  আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন ‌মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ মন্ত্রী মাইক পম্পেও । কয়েকদিন আগেই ওয়াশিংটনে দুই দেশের অস্ত্র বিরতির মধ্যস্থতা সত্বেও সেখানে হিংসা অব্যাহত রয়েছে।