২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। কিন্তু গত ডিসেম্বরে ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের নয়া স্ট্রেন ধরা পড়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন ভীষণ ব্যস্ত বরিস সরকার, আর তাই ভারত–সফর বাতিল করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী।
বরিস জনসন গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে কথা বলে নিজের সফর রদ করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
বরিসের পরিবর্তে প্রধান অতিথি হিসেবে এ বছর তাই থাকছেন সুরিনাম প্রজাতন্ত্রের ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকাপ্রসাদ সন্তোখি। দিল্লিতে আগামী ২৬ জানুয়ারি কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে চন্দ্রিকাপ্রসাদকে নরেন্দ্র মোদীর পাশে দেখা যাবে বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সুরিনাম দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকাপ্রসাদ আসলে ভারতীয় বংশোদ্ভূত । সুরিনাম এককালে ডাচদের উপনিবেশ ছিল। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৭.৪% ভারতীয়।
গত বছরই চন্দ্রিকাপ্রসাদের দল প্রোগ্রেসিভ রিফর্ম পার্টি সুরিনামে ক্ষমতায় আসে। তারপর জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন চন্দ্রিকাপ্রসাদ। তিনি সুরিনামের নবম প্রেসিডেন্ট।
গত সপ্তাহে বিদেশমন্ত্রক আয়োজিত প্রবাসী ভার্চুয়াল মাধ্যমে ভারতীয় দিবস সম্মেলনেও প্রধান অতিথি হিসেবে দেখা গিয়েছিল চন্দ্রিকাপ্রসাদকে। সেখানে ভিসা ছাড়া দুই দেশের নাগরিকদের অবাধ যাতায়াতের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে একসময়ে ডাচ উপনিবেশ সুরিনামে-র পুলিশ প্রধান ছিলেন চন্দ্রিকাপ্রসাদ সন্তোখি। সেখানকার এক গ্রামাঞ্চলে তিনি বড় হয়েছিলেন। নয়টি সন্তানের পরিবারে তিনিই সবার ছোট। স্কুলের শিক্ষা শেষ করে তিনি নেদারল্যান্ডস পুলিশ একাডেমি-তে চার বছর পড়াশোনা করেন। ১৯৮২ সালে সুরিনামে-তে ফিরে এসে পুলিশবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি সেখানকার পুলিশ কমিশনার নিযুক্ত হয়েছিলেন।
চন্দ্রিকাপ্রসাদের দল প্রগ্রেসিভ রিফর্ম পার্টি (পিআরপি) গতবছর ৫১টির মধ্যে ২০টি আসনে জয়লাভ করে ক্ষমতা দখল করে। তাতে দেজি বাওতার্সের স্বৈরতান্ত্রিক জমানার অবসান ঘটে।
প্রথমবার একজন ভারত বংশোদ্ভূত হিসাবে লাতিন আমেরিকার কোনও দেশের প্রেসি়ডেন্ট নির্বাচিত হয়ে চন্দ্রিকা ইতিহাস রচনা করেছেন। এখানেই শেষ নয়, শপথ অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে ধরা ছিল বেদ। আর তিনি সেই দেশের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছেন বিশুদ্ধ সংস্কৃত ভাষায়।