মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা (NASA) সম্প্রতি মহাকাশে দৃশ্যমান 'ভগবানের হাত' (Hand of God) এর আকার এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করেছে। এই সময়ে, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সুন্দর ছবি শেয়ার করা হয়েছে। এই ছবিগুলি অনেক ধরনের ক্যামেরা থেকে তোলা হয়েছে, যার মধ্যে কোথাও হাতের রং হলুদ দেখা যাচ্ছে, কারো মধ্যে এটি নীল, কারো মধ্যে এটি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে এবং কিছু ছবিতে এর ভেতর থেকে আলো বের হতে দেখা যাচ্ছে। সর্বোপরি, মহাকাশে 'Hand of God' কী করছে? এটা কিভাবে ঘটলো? (ছবি: NASA)
এই ছবিগুলি নাসার (NASA) চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরির (Chandra X-ray Observatory) ইনস্টাগ্রাম পেজে প্রকাশ করা হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত ২৪ হাজারেরও বেশি লাইক পেয়েছে। এই ইনস্টাগ্রাম পোস্টে দুটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, কিন্তু নাসার চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরির ওয়েবসাইটে আরও ছবি রয়েছে, যা দেখে মনে হচ্ছে মহাকাশে একটি নক্ষত্রের বিস্ফোরণের ফলে এই হাতের আকৃতির সৃষ্টি হয়েছে, এগুলি আসলে এক ধরণের মেঘ। দেখতে হাতের তালুর মতো। (ছবি: NASA)
পোস্টে লেখা আছে যে নীহারিকার (Nebula) শক্তি থেকে হাতের মতো আকৃতি তৈরি করা হয়েছে, যা একটি পালসার (Pulsar) ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে। এই পালসারটি নক্ষত্রের পতনের ফলে গঠিত হয়েছিল। এই পালসারের নাম PSR B1509-58। এই হাতের প্রস্থ প্রায় ১৯ কিলোমিটার। এটি প্রতি সেকেন্ডে সাতবার ঘুরছে। এটি সেই তথ্য হয়ে উঠেছে যা ইনস্টাগ্রাম পোস্টে শেয়ার করা হয়েছে। এখন আমরা আপনাকে চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরির সাইট থেকে এর সম্পূর্ণ বিবরণ বলব। (ছবি: NASA)
নাসার বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে এটি একটি সুপারনোভা (Supernova Explosion) বিস্ফোরণ ছিল, যার আলো পৃথিবীতে পৌঁছেছিল প্রায় ১৭০০ বছর আগে। সেই সময় পৃথিবীতে মায়া সভ্যতা ছিল। অথবা জিন সাম্রাজ্য চিনে শাসন করত। পুলসার কখনও কখনও নক্ষত্রের বিস্ফোরণে গঠিত হয়। এই মেঘের অনেক চুম্বক শক্তি আছে। এরা খুবই ঘন। তাদের শেষ করতে অনেক সময় লাগে। যাইহোক, এটি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। (ছবি: ট্যুইটার/Astroimage)
বিজ্ঞানীরা ২০০৪ সাল থেকে এর গতি, আকার এবং রঙের পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তারপর থেকে, এটির ২০০৪, ২০০৮, ২০১৭ এবং ২০১৮ বছরে ছবি নেওয়া হয়েছিল। এই ছবিতে ক্রমাগত দৃশ্যমান যে এই মেঘের ঘনত্ব ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। সদ্য মুক্তি পাওয়া ছবিগুলিও ২০১৮ সালের কাছাকাছি, কিন্তু এবার তাদের আকারের বিস্তারিত জানা গেছে। এর মেঘ কমে যাওয়ার কারণে, এই Hand of God এখন শেষ হয়ে যাচ্ছে। (ছবি: NASA)
প্রকৃতপক্ষে এই 'Hand of God' আমাদের ছায়াপথের একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণের অবশিষ্টাংশ। মহাকাশে দৃশ্যমান এই হাতটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৭ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই বাহু ৩৩ আলোকবর্ষের বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এটি চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরি থেকে তোলা ছবিতে লাল, হলুদ এবং নীল রং দেখায়। এটি সার্কিনাস নক্ষত্রমণ্ডলে (Circinus Constellation) অবস্থিত। (ছবি: NASA)
প্রকৃতপক্ষে এই 'Hand of God' আমাদের ছায়াপথের একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণের অবশিষ্টাংশ। মহাকাশে দৃশ্যমান এই হাতটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৭ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই বাহু ৩৩ আলোকবর্ষের বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এটি চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরি থেকে তোলা ছবিতে লাল, হলুদ এবং নীল রং দেখায়। এটি সার্কিনাস নক্ষত্রমণ্ডলে (Circinus Constellation) অবস্থিত। (ছবি: NASA)
নাসা বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণা এবং তথ্য অনুযায়ী, এখন এই হাত দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। তার অক্ষের পাশাপাশি বিভিন্ন দিকে। এই হাতের সাথে যে উজ্জ্বল মেঘের সংঘর্ষ হয়েছিল তার নাম RCW 89। এই মেঘের কেন্দ্র তাদের বিস্ফোরণের মূল স্থান থেকে ৩৫ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। (ছবি: গেটি)
'Hand of God' এর চৌম্বক শক্তি অনেক বেশি। এটি পৃথিবীর চৌম্বক শক্তির চেয়ে ১৫ ট্রিলিয়ন গুণ বেশি শক্তিশালী। অর্থাৎ ১৫ লক্ষ কোটি গুণ বেশি শক্তিশালী চৌম্বকীয় শক্তি। এর মানে হল যে এটিতে যা যায়, এটি তার মধ্যেই থাকবে। দ্রুত ঘূর্ণন এবং এত উচ্চ চৌম্বকীয় শক্তির কারণে, এই 'Hand of God' আমাদের ছায়াপথের সবচেয়ে শক্তিশালী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক জেনারেটর। (ছবি: NASA)
গত বছর অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারে এই বিষয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছিল। এই গবেষণায় জড়িত বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন যে শীঘ্রই এর আকার, চেহারা এবং বয়স বের করার চেষ্টা করা হবে। এখন এই হাত ঝাপসা হয়ে আসছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এর বয়স নির্ণয় করতে পারেননি। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এটি আরও কয়েকশ বছর ধরে থাকবে। (ছবি: NASA)