বাংলাদেশের নাট্যজগতে নক্ষত্র পতন। চলে গেলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রবীণ অভিনেতা আলি যাকের। শুক্রবার সকালে ঢাকার স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। গত চার বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন এই গুণী শিল্পী। সম্প্রতি তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। গত গত ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আলি যাকেরকে। সেখানকার সিসিইউতে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর করোনা রিপোর্টও পজিটিভ এসেছিল বলে জানা যায়।
মুক্তিযুদ্ধের হাফসেঞ্চুরি, মোদীকে আমন্ত্রণ হাসিনার
একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সদস্য আলি যাকের ১৯৪৪ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে প্রথম অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে তাঁর কেরিয়ার শুরু হয়। ওই বছরেরই জুন মাসে তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন। তখন থেকে নাগরিকই তাঁর ঠিকানা। ‘বাকি ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘দেওয়ান গাজীর কিস্সা’, ‘কোপেনিকের ক্যাপটেন’, ‘গ্যালিলিও’, ‘ম্যাকবেথ’সহ অনেক আলোচিত মঞ্চনাটকের অভিনেতা ও নির্দেশক ছিলেন তিনি। পাশাপাশি টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রেও চুটিয়ে অভিনয় করেছেন।
আলি যাকের নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টিও। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির পূর্ণ সদস্য করা হয়েছিল তাঁকে। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। এদিন শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর রদেহ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রাখা হবে। এরপর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
বিশিষ্ট এই নাট্য ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ, দেশের শিল্পকলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আলী যাকেরের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’