আফগানিস্তানে তালিবানি উত্থান, কতটা চ্যালেঞ্জ দুই বাংলার সামনে?

আশি-নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তান ফেরত জঙ্গিরাই হুজি, জেএমবি, আনসার-আল-ইসলাম-এর মতো জঙ্গি জেহাদি সংগঠন গড়ে তোলে বাংলাদেশে। বিএনপি-জামাতে ইসলামি সরকারের আমলে আরও বড় হয় জঙ্গি সংগঠনগুলি। কিন্তু পরে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করে অভিযান চালায়।

Advertisement
আফগানিস্তানে  তালিবানি উত্থান, কতটা চ্যালেঞ্জ দুই বাংলার সামনে?আশির দশকে আফগানিস্তান থেকেই আমদানি হয়েছিল জঙ্গি সক্রিয়তার
হাইলাইটস
  • আশির দশকে আফগানিস্তান থেকেই বাংলাদেশে আমদানি হয়েছিল জঙ্গি সক্রিয়তার
  • আফগানিস্তানে তালিবান রাজের পর তাই নতুন করে আশঙ্কার মেঘ
  • বাংলাদেশে জঙ্গি উত্থানের আশঙ্কা করছেন অনেকেই

বেশিদিন না, চলতি বছর মার্চ মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আর সেই সময়ই রাজধানী ঢাকাকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল হেফাজতে ইসলাম সংগঠনের সদস্যরা। তাদের মুখে ছিল ভারত বিরোধী স্লোগান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও চলে স্লোগানবাজি। কট্টরপন্থী ইসলামিক সংগঠন এবং বাংলাদেশের বাম ছাত্র সংগঠনরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করেছিল। যদিও বাংলাদেশ সরকার বিক্ষুব্ধদের কড়া হাতে দমন করার পদক্ষেপ করেছিল। সেই সময়ে অভিযোগ উঠেছিল হেফাজতের বাড়বাড়ন্তের পিছে রয়েছে পাকিস্তানের মদত। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে খান সেনাদের বিরুদ্ধে রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল বাংলাদেশ। আর এই হেফাজতে সেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়ে না। সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতের মত এই সংগঠনহগুলি হাসিনা প্রশাসনের কাছে আরও চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। পাকিস্তানের প্রতিবেশী আফগানিস্তানে এখন তালিবানরাজ চলছে। পাক প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা গিয়েছে প্রশংসা। আমেরিকার একাধিক সূত্র দাবি করছে তালিবানদের এই উত্থানের পেছেন রয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থার মদত। তাই বদলে যাওয়া আর্ন্তজার্তিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ আসছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। আর সীমান্তের এপারে পশ্চিমবঙ্গেও তার প্রভাব এড়ানো সম্ভব নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল ২০১৬ সালে খাগড়াগড় বিস্ফোরমকাণ্ডে জেএমবি যোগ। 

 

 

বাংলাদেশ ও জঙ্গিবাদের ইতিহাস
বাংলাদেশে অতীতে একাধিক জঙ্গি হামলার উদাহরণ রয়েছে। ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট  জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন (জেএমবি)   পরিকল্পিতভাবে বাংলা দেশের ৬৩ জেলায় একই সময়ে বোমা হামলা চালিয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে  এটি সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা। তবে ২০০৫ সালের আগে থেকেই সেদেশে সন্ত্রাসবাদের জাল বোনা চলছিল। প্রসঙ্গত, আশির দশকের শেষ ভাগে বাংলাদেশে তৎপরতা শুরু করেছিল হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ। এর পরপরই এখানে জঙ্গি  সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে  জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)। বাংলাদেশ সরকার এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও  আন্তর্জাতিকভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে চলেছে জেএমবি। তার অংশ হিসেবে ভারতেও গোপন ও সংঘবদ্ধ তৎপরতা চালাচ্ছে সংগঠনটির একাংশ। ভারতে জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া বা জেএমআই নামে গোপনে তৎপর রয়েছে। গত জুলাই মাসেই হরিদেবপুর থেকে তিন জেএমবি জঙ্গিকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। এই অবস্থায় বাংলাদেশের পুলিশ মনে করছে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জঙ্গি জিহাদি গোষ্ঠীর মনোবল বেড়ে গেছে। সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মহম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, তালিবানে যোগ দিতে বাংলাদেশের  কিছু যুবক  আফগানিস্তানে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে, কিছু ভারতে গ্রেফতার হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিন্তার কারণ এই নব্য জঙ্গিরা। একটানা ২০ বছর যুদ্ধের পর প্রতাপশালী আমেরিকান সেনা বাহিনীকে তাড়িয়েছে তালিবান। এই সব প্রচারই বাংলাদেশের জঙ্গি মনোভাবাপন্ন তরুণদের উচ্ছ্বসিত করে তুলেছে। এমনটাই মনে করছে বাংলাদেশ পুলিশ। কমিশনারের আশঙ্কা, শুধু বাংলাদেশ নয়, এই ঢেউ উপমহাদেশের দেশগুলি-সহ অনেক দেশেই লাগবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ইলিশের পচা-নরম ডিম নাকি বেশি সুস্বাদু? প্রায় দেড় হাজার টাকা কিলো

আশির দশকে আফগানিস্তান থেকেই আমদানি জঙ্গি সক্রিয়তার
আশি-নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তান ফেরত জঙ্গিরাই হুজি, জেএমবি, আনসার-আল-ইসলাম-এর মতো জঙ্গি জেহাদি সংগঠন গড়ে তোলে বাংলাদেশে। বিএনপি-জামাতে ইসলামি সরকারের আমলে আরও বড় হয় জঙ্গি সংগঠনগুলি। কিন্তু পরে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করে অভিযান চালায়। এমনিতে বাংলাদেশের জনগণ মধ্যপন্থা পছন্দ করেন। তবুও বাংলাদেশে গোপনে জঙ্গিরা সক্রিয় থাকে। হলি আর্টিজানসহ অতীতের বেশ কিছু বড় বিস্ফোরণের ঘটনাই তার প্রমাণ। এই অবস্থায় তালিবান উত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ঠেকানো হাসিনা সরকারের কাছে নতুন এক চ্যালেঞ্জ। পুলিশ বলেছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জেহাদসহ উগ্রবাদী একাধিক সংগঠন তালিবানদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে, যাদের প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর আছে।

 

 

তালিবানদের বিজয়ে বাংলাদেশের নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া
সব ক্রিয়ারই প্রতিক্রিয়া থাকে। তালিবানদের সাম্প্রতিক উত্থানে বাংলাদেশের নেটিজেনদের একাংশকে উচ্ছ্বসিত হতে দেখা গেছে৷ মুদ্রার উল্টোপিঠও দৃশ্যমান, অনেকেই আবার তালেবানদের বিজয়ে শঙ্কিত৷ সেই শঙ্কা যতোটা না আফগানিস্তানের নাগরিকদের, বিশেষ করে নারীদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে তা নিয়ে, তারচেয়েও বেশি এই বিজয়ের পথ ধরে বাংলাদেশে নতুন করে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে কি না সেটা ভেবে৷ তিলেবানদের বিজয়ে বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে থাকা উগ্রপন্থী অনেকেই এই সুযোগে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকেই। যার প্রতিফলন ঘটেছে আফগানিস্তান তালিবানদের দখলে যাওয়ার পরপরই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তালিবানদের মুক্তি যোদ্ধার স্বীকৃতি দিতে চাইছেন বাংলাদেশের নেটিজেনদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, তালিবানরা বিদেশি শক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। এই প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকেও টেনে আনা হচ্ছে। তালিবানদের সমর্থনকারী নেটিজেনদের দাবি  বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে যেকোনো মুক্তির আন্দোলনকে সমর্থন দিতেন। ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর তরফে এমন স্লোগানও শোনা গিয়েছে,  'আমরা সবাই তালেবান/বাংলা হবে আফগান'। 

আরও পড়ুন: প্রসেনজিৎ-জিতের সহঅভিনেত্রী, বাংলাদেশ কাবু এই হিন্দু কন্যার 'হটনেসে'

বিদ্বজনেদের প্রতিক্রিয়া
 বাংলাদেশ 'বাংলাভাই' নামক জঙ্গিদের উত্থান দেখেছে, হিযবুত তাহ্‌রীর, হরকাতুল জিহাদ, আনসার-আল-ইসলামসহ নানা ধরনের জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতা দেখেছে এবং প্রতিদিন মানুষের মননে-মগজে সাম্প্রদায়িকতার চাষ দেখেছে।  তালিবানের চেয়েও শক্তিশালী হলো তালিবানি মানসিকতা, যা একটি রাষ্ট্রকে দুমড়েমুচড়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের একাধিক হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। শিক্ষাবিদ সঙ্গীতা ইমাম তাই মনে করেন, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য সতর্কবার্তা। লেখক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী   মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বাংলাদেশেরও সময় থাকতে সতর্ক হওয়া উচিত। লেখকের আশঙ্কা, আফগানিস্তানে তালিবান রাজত্ব বিশ্ববাসীকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য প্রথম দিকে উদারতার ভাব দেখালেও বেশিদিন বিড়ালের নখ  লুকিয়ে রাখতে পারবে না। পাকিস্তানে প্রভাব বিস্তারের পর তারা বাংলাদেশের দিকে এগোবে। বাংলাদেশে তাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য ঘাপটি মেরে আছে জামায়াতি ও হেফাজতিরা।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ  আবার তালিবান প্রসঙ্গে অপেক্ষা করার পক্ষপাতী। তাঁর বক্তব্য, "আমরা ওয়েট করতে পারি। যত ধীরগতি হয়। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে দেখে বোঝা যাবে। আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কোন ধরণের সম্পর্ক নেই। নেই কোন ব্যবসায়ী সম্পর্কও। তাহলে আমরা কেনো এসব বিষয়ে নিয়ে হৈচৈ করবো। অনেকে দেশের বাইরে কিংবা দেশে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক কিছু লেখালেখি করছেন। পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। আমি বলবো আমাদের যেহেতু এদেশটির সঙ্গে কোন স্বার্থ জড়িত নয় সুতরাং এ বিষয়ে চুপ থাকাটাই উত্তম।" প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলছেন, "তালিবান যেহেতু এখনও সরকার গঠন করেনি, তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যাওয়ার সময় এখনও আসেনি। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক দুই জায়গায় আলাপ-আলোচনা চলছে। আমি মনে করি, এই আলাপ-আলোচনাটা চালু থাকা উচিৎ। এই আলাপ-আলোচনার পর, আমাদের অন্যান্য বন্ধু দেশ আছে, তারা কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, আমরাও সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহযোগী হতে পারি। তালিবানদের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে, আফগানিস্তান কোন দিকে যাবে, তাদের সাথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পর্ক কেমন হবে। তাদের ইতিবাচকতার উপর বাইরের ইতিবাচকতা তৈরি হবে। তারা যদি একলা চলো নীতিতে চলে, তার পরিণতি তাদের ভোগ করতে হবে। তারা প্রাথমিকভাবে বলেছে ইসলামিক এমিরাত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ইসলামিক এমিরাত তো ইরানে আছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশে আছে, তাতে তো অসুবিধা নাই। কিন্তু তারা যদি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যে সরকার চালিয়েছিল, কঠোর শরিয়ত আইন করে, যেটা মধ্যযুগীয়, আধুনিক ব্যবস্থার সাথে যায় না, এই রকম যদি করে, তাহলে গ্রহণযোগ্যতাটা তারা পাবে না। তাহলে তারা স্বীকৃতিও পাবে না। দুর্বল অর্থনীতির দেশ আফগানিস্তান এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তায় চলছিল। এখন অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়বে।"

Advertisement

 

 

বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান
আফগানিস্তান বাংলাদেশের নিকটবর্তী না হলেও সার্কের সদস্য। মুক্তিযুদ্ধকালে দেশটি বাংলাভাষীদের নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীকালে আফগান পরিস্থিতি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তাকে নানাভাবে চাপে ফেলে। গৃহযুদ্ধের কারণে আফগানদের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকর কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলছেন, “এখন তালিবান প্রতিশ্রুতিগুলো দিচ্ছে, তা যদি রক্ষা করতে পারে, নিজেদের জনগণ ও বিদেশিদের যদি সুরক্ষা দিতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের সেখানে কাজ করার সুযোগ থাকবে। বাংলাদেশ উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে এগিয়ে যাবে। কবে এ মুহূর্তে সেখানে দূতাবাস খোলার পরিকল্পনা নেই। এত দিন নিরাপত্তার কারণে বন্ধ ছিল। সেখানে নিরাপত্তা বাড়লে বিবেচনা করবে বাংলাদেশ।"  দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম স্পষ্ট করেছেন, দেশটির সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি শপথ না নেওয়া পর্যন্ত স্বাগত জানাতে পারে না ঢাকা।

বাংলাদেশ এখন কী করবে?
আফগানিস্তান অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধে বাংলাদেশ বহু বছর যাবৎ দূরবর্তী দর্শকের ভূমিকায় আছে। কিন্তু এই যুদ্ধের আঁচ থেকে রেহাই ছিল না তার। দেশটিতে ন্যাটোর সামরিক হস্তক্ষেপ বাংলাদেশকে কিছুটা নিরাপত্তা-স্বস্তি দিয়েছিল বটে। অতীতে তালিবানবিরোধী উত্তরের জোটকে কৌশলগত মিত্র মনে করেছে ভারত। যে জোটের নেতৃত্বে ছিল তাজিক ও উজবেকরা। ন্যাটোর মদদপুষ্ট আফগান সরকারের সঙ্গেও উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে ভারত কাজ করেছে  পুরোদমে। কিন্তু এখন পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানদের ঘনিষ্ঠতা এবং ন্যাটো-পরবর্তী আফগানিস্তানে নিজস্ব ভূকৌশলগত অবস্থান ধরে রাখতে নয়াদিল্লির আফগান নীতিতে পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছে। আফগানিস্তান ইস্যুতে 'ধীরে চলো' নিয়েছে ভারত। সেই একই পছে হাঁটতে চাইছে বাংলাদেশও। তবে দুটি দেশের কাছেই আশঙ্কার কারণ হচ্ছে সেই সন্ত্রাসবাদ। যদিও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের তালিবান হামলা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন নয়, ঐ হামলার জেরে বাংলাদেশে জঙ্গি উত্থানের কোনো আশঙ্কাও নেই। বাংলাদেশের গোয়েন্দা বাহিনী কঠোর নজরদারি করছে বলেই জানাচ্ছেন  তিনি।


 

POST A COMMENT
Advertisement