ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের (Omicron Variant) কারণে ভারতে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। COVID থার্ড ওয়েভের ধাক্কায় এখন দেশের করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৯৮৬ জন। গতদিনের তুলনায় যা ২১.৩ শতাংশ বেশি।
একের পর এক চিকিৎসক আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। ফলে জেলা ও গ্রামীন হাসপাতালগুলির স্বাস্থ্যপরিষেবা বিপর্যস্ত। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্টের তুলনায় প্রায় ৫০০ গুন বেশি সংক্রামক। তাই হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
১৩৬ কোটি জনসংখ্যার দেশে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ১.০৪ কোটি। অর্থাৎ, প্রতি ৮৪৫ জনের চিকিৎসায় মাত্র ১ জন ডাক্তার! এই পরিস্থিতিতে থার্ড ওয়েভের ধাক্কা কীভাবে সামলাবে ভারত?
আইআইটি কানপুরের (IIT Kanpur) অধ্যাপক মণীন্দ্র আগরওয়ালের দাবি, করোনার থার্ড ওয়েভে দ্রুত প্রতির মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন ঠিকই, তবে অধিকাংশ করোনা রোগীকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না।
দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের হার ক্রমাগত বাড়ছে। ওমিক্রন সম্পর্কে সবচেয়ে ভীতিকর বিষয়টি হল, ভ্যাকসিনেও এর উপর কোনও প্রভাব ফেলছে না। যাঁরা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজই নিয়েছেন, তাঁরাও ফের করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, দেশে মোটামুটি ১২ লাখ ৮৯ হাজার অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক রয়েছেন। এ ছাড়াও ৫.৬৫ লক্ষ আয়ুষ চিকিৎসক রয়েছেন। সেই হিসাবে প্রতি ৮৪৫ জনের জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক রয়েছেন।
আধার প্রদানকারী সংস্থা UIDAI-এর অনুমান অনুসারে, দেশের জনসংখ্যা ১৩৬.০৯ কোটি। একই সময়ে, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত, CoWin পোর্টালে ১.০৪ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীর নাম নথিভুক্ত হয়েছিল। এই স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন ডাক্তার, নার্সিং স্টাফ, প্যারামেডিক্যাল স্টাফ।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (IIS) এবং ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (ISI) যৌথ উদ্যোগে করা একটি সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, জানুয়ারি মাসের তৃতীয় থেকে চতুর্থ সপ্তাহে COVID থার্ড ওয়েভ তার শীর্ষস্তরে পৌঁছাবে। ওই সময় দেশে রোজ প্রায় ১০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। এই বিপুল চাপ সামাল দেওয়ার মতো স্থাস্থ্য পরিকাঠামো কি ভারতের সর্বোত্র রয়েছে?
২০২০-২০২১ বাজেট নথিতে, কেন্দ্র সরকার স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ১.৮% ব্যয় করেছে। এর আগে ২০১৯-২০২০ সালে, একই খাতে কেন্দ্রের বরাদ্দ ছিল জিডিপির ১.৫%। ২০১৯ সালের জুন মাসে NITI আয়োগের একজন সদস্য ডাঃ ভি কে পাল বলেন, কেন্দ্রের উচিত জিডিপির ২.৫% স্বাস্থ্যের জন্য ব্যয় করা। কারণ, ইউরোপের দেশগুলিতে জিডিপির ৭-৮% ব্যয় করা হয়।