হিন্দু ধর্মে প্রায় সারা বছরই নানা উৎসব চলতে থাকে। যার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল অক্ষয় তৃতীয়া। বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে অক্ষয় তৃতীয়ার উৎসব পালিত হয়। বিশ্বাস অনুযায়ী, যে কোনও কাজ সম্পন্ন করার জন্য এদিন অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। লক্ষ্মী- নারায়ণের আরাধনা এবং নতুন জিনিস কেনার জন্যও এই দিনটিকে সেরা মনে করা হয়।
অক্ষয় তৃতীয়া ২০২৫-র কবে পড়েছে?
আগামী ৩০ এপ্রিল (বাংলায় ১৬ বৈশাখ) অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ তিথি পড়েছে।
তৃতীয়া তিথি কতক্ষণ থাকবে?
২৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৮/২২/৫৪ থেকে ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬/১০/৪৬ পর্যন্ত তৃতীয়া থাকবে।
কথিত আছে, এই অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে কেনা জিনিসের ফল চিরস্থায়ী হয়। বিশেষ করে এদিন সোনা কেনা খুবই শুভ। বিশ্বাস অনুযায়ী, এদিন যারা সোনা ও রূপা কেনেন তারা দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পান। কিন্তু সোনা- রুপোর মতো দামি জিনিস কেনা সবার নাগালের মধ্যে নেই। তাই জানুন আর কোন জিনিস বাড়িতে আনলে দেবী লক্ষ্মী প্রসন্ন হন এবং পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি ঘটে।
মাটির পাত্র - এদিন মাটির পাত্র যেমন জলের জন্য মাটির কলস কেনা এবং দান করা শুভ।
গম- গম হল খাদ্যের দেবী অন্নপূর্ণার প্রতীক। গম কিনে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে বাড়িতে আনা শুভ বলে মনে করা হয় এবং বাড়িতে সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।
ধান (চাল)- এদিন আপনি কিছু চাল কিনে পুজোয় নিবেদন করতে পারেন এবং গরীবদের দান করতে পারেন। ধান হল একটি শুভ শস্য যা ঘরে সুখ ও সমৃদ্ধি আনে।
পুজোর সমগ্রী- অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে ধূপ, প্রদীপ, ধুপকাঠি, চন্দনের মতো পুজো সামগ্রি কেনা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
বই বা তথ্যমূলক জিনিস- জ্ঞানকে চিরন্তন বলে মনে করা হয়। তাই এই দিনে ধর্মীয় বা তথ্যমূলক বই কেনা ও পড়াও শুভ বলে মনে করা হয়।
তুলসী গাছ- হিন্দু ধর্মে তুলসী গাছকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। এই দিনে তুলসী রোপণ ও পরিচর্যা করলে ঘরে ইতিবাচক শক্তি আসে।
বিশ্বাস অনুযায়ী দান- অক্ষয় তৃতীয়া দানের উৎসব। এই দিনে আপনি গরীব ও অভাবীকে খাদ্য, বস্ত্র বা অর্থ দান করতে পারেন।
সংস্কৃত অনুসারে 'অক্ষয়' শব্দের অর্থ হল 'যার কোনও ক্ষয়' নেই অর্থাৎ যা কখনও শেষ হয় না। তাই মনে করা হয় অক্ষয় তৃতীয়ায় করা যে কোনও কাজ অক্ষয় থাকে। সেই সঙ্গে শাস্ত্র মতে, অক্ষয় তৃতীয়া সুখ প্রদানকারী এবং পাপ নাশকারী তিথি। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন ব্যবসায়ী লক্ষ্মী- গণেশ পুজোর আয়োজন করেন। অনেকে দোকানে এদিন হালখাতাও হয়। শুধু দোকান নয়, অনেকে বাড়িতেও পুজো করেন। এছাড়া বিভিন্ন মন্দিরে ভক্তেরা ভিড় জমান।