Bollakali Puja Of Balurghat: এবার হিরের অলঙ্কারে সাজলেন বোল্লাকালী, সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্র হয়ে ওঠে বালুরঘাট

Bollakali Puja Of Balurghat: প্রত্যেক বছর রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার বালুরঘাটের বোল্লা এলাকায় বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়। উত্তরবঙ্গের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ এবং প্রাচীন এই বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো। পুজোর পাশাপাশি চারদিন মেলাও বসে। এবারে ১ ডিসেম্বর বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে এদিন বোল্লায় হল মায়ের কাঠামো পুজো। এরপরই শুরু হবে মায়ের প্রতিমা তৈরির কাজ।

Advertisement
এবার হিরের অলঙ্কারে সাজলেন বোল্লাকালী, সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্র হয়ে ওঠে বালুরঘাটএবার হিরের অলঙ্কারে সাজলেন বোল্লাকালী, সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্র হয়ে ওঠে বালুরঘাট

Bollakali Puja Of Balurghat: শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে গেল দক্ষিণ দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী বোল্লাকালীর পুজো। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে মেলাও। মাঝে কয়েক বছর করোনার কারণে মেলায় ভাঁটা পড়েছিল। যা গত বছর থেকে ফের চাঙ্গা হয়েছে। ভক্তরা মনে করেন বোল্লাকালী পুজো দিলে মনস্কামনা পূর্ণ হয়। তাই বোল্লাকালীর পুজো ও মেলায় ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। শুধু দেশ নয় বিদেশ থেকেও ভক্তরা আসেন। এদিন পুজোর প্রথম দিন।

টিকিট কেটে ভিআইপি গেট দিয়ে সরাসরি মন্দিরে ঢুকে পুজো দেওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। আগত দর্শনার্থীদের পুজোর জন্য মোট ৩০ জন পুরোহিত এক নাগাড়ে কাজ করে গিয়েছেন। পুজো দিয়েই দর্শনার্থীরা মেলায় ঢুকেছেন। শুক্রবার বোল্লা মেলার প্রথম দিনে বিকি কিনি হয়েছে মোটামুটি। সোনা-রুপোর পাশাপাশি হীরের অলঙ্কার দিয়ে সাজানো হয়েছে বোল্লাকালীকে। দেবীর শরীরে প্রায় ১০ কেজি সোনার অলংকার রয়েছে। আর রুপোর অলংকার মিলিয়ে মোট রয়েছে প্রায় ২৩ কেজির গয়না।

প্রত্যেক বছর রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার বালুরঘাটের বোল্লা এলাকায় বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়। উত্তরবঙ্গের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ এবং প্রাচীন এই বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো। পুজোর পাশাপাশি চারদিন মেলাও বসে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। জেলার সদর শহর বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে বোল্লা গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্য ও মাহাত্ম্য সমৃদ্ধ রক্ষা কালী মাতা মন্দির। যা উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বোল্লা কালী পুজো ও মন্দির। এই মাতা বোল্লা কালী মাতা বলেই সুপ্রসিদ্ধ। এই মেলা উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ঐতিহ্যপূর্ণ। দুই দিনাজপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা ও রাজ্য, এমনকী বাংলাদেশ থেকেও বহু মানুষ এই মেলা দেখতে আসেন। 

কথিত আছে, জনৈক এক ব্যক্তি মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুকুর থেকে মায়ের শিলাময় রূপটি উদ্ধার করেন ও প্রতিষ্ঠা করে নিত্য পূজা শুরু করেন। এই সময়ে মাকে ‘মরকা কালী’ বলে অভিহিত করা হত। প্রতি জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় হত মায়ের বিশেষ পূজা। এরপর ইংরেজ আমলে স্থানীয় জমিদার মুরারিমোহন চৌধুরী ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ঘটনাক্রমে বহু গ্রামবাসী সহ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তখন তিনি মড়কা কালী মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন। তিনি বেকসুর খালাস পান। জ্যৈষ্ঠ মাস আসতে দেরি থাকায়; সেই সময় তিনি ধার্য করেন যে, রাস পূর্ণিমার পরবর্তী শুক্রবারে মায়ের পুজো করবেন। সেই থেকে দেবীর বাৎসরিক পুজো ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

Advertisement

বর্তমানে সাড়ে সাত হাত মাতৃমূর্তি পূজিত হন। কয়েক হাজার পাঁঠাবলি ও একটি মহিষ বলি হয়। প্রায় ১৪ কেজি সোনার গহনায় মায়ের প্রতিমা সজ্জিত হয়। বহু ভক্ত মানত করা ছোট ছোট কালী মূর্তিতে পূজা দেন ও বাতাসা নৈবেদ্য অর্পণ করেন। স্থানীয় মুসলিমরাও হিন্দুদের সাথে মায়ের উদ্দ্যেশ্যে পুজো দেন। বল্লভ মুখোপাধ্যায় বলে কোনো জমিদারের নাম থেকে অঞ্চলটির নাম হয় বোল্লা।  বোল্লা গ্রামে অবস্থিত রক্ষা কালী মাতা ‘বোল্লা রক্ষা কালী’ বা ‘বোল্লা কালী’ নামে ভক্ত মহলে সুপ্রসিদ্ধ। আর সে থেকেই বোল্লা কালী মাতার পুজো হয়ে আসছে ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহ।

 

POST A COMMENT
Advertisement