পশ্চিমবাংলার বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন মঙ্গলবার একটি জনসভায় নিজের গোত্রের উল্লেখ করেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি জানান, শান্ডিল্য গোত্র তাঁর, যার অর্থ ব্রাহ্মণ। এরপর থেকেই বিজেপি-র তরফ থেকে আসতে শুরু করে নানা প্রতিক্রিয়া। অনেকেই এটাকে ' ভোট ব্যাঙ্ক পলিটিক্স' বলে আখ্যা দেয়। আসুন জানা যাক বিভিন্ন গোত্রের অর্থ কী এবং ধর্মে এর গুরুত্বই বা কত খানি?
জ্যোতিষ আচার্য অশ্বিনী মঙ্গলের কথা অনুযায়ী, হিন্দু ধর্মে গোত্রের গুরুত্ব অনেক। বিভিন্ন বর্ণের শ্রেণীবিন্যাস থেকে শুরু করে হিন্দুদের বিয়ের জন্যও এটি মেনে চলা হয়। মুনি- ঋষিদের সময়কালের সঙ্গেই গোত্র সম্পর্কিত। মনে করা হয় সমাজে ব্রাহ্মণরা আসলে ঋষিদের সন্তান। প্রত্যেক ব্রাহ্মণ গোত্রের লোকেরাই কোনও ঋষির বংশের।
প্রথমে হিন্দু ধর্মে শুধুমাত্র চারটি গোত্র ছিল - অঙ্গীর, কাশ্যপ, বশিষ্ট ও ভগু। এটাই পরে আটটি গোত্রে পরিণত হয়। আগেরগুলির সঙ্গে জামদাগ্ন্য, অত্রি, বিশ্বামিত্র, অগস্ত্য। এই সমস্ত গোত্রই মুনিদের নামেই হয়েছে। পুজো, বিয়ে সহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও শুভ কাজে গোত্রের প্রয়োজন হয়।
শুরু থেকে হিন্দু ধর্মে গোত্রের ব্যবহার হয়। অনেক ক্ষেত্রে কুলদেবতার নামেও গোত্র হয়। যার অর্থ একটি নির্দিষ্ট নামে বংশের অগ্রগতি।
এরপর বর্ণ প্রথায় যখন জাত-পাত এল, তখন জন্মস্থান ও কর্মফলের উপর নির্ভর করে দেওয়া শুরু হয়। সেজন্যই ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্যান্য বর্ণের মানুষদের গোত্র তাঁদের কর্মের উপর ভিত্তি করেই রাখা হয়েছে।
গোত্রের গুরুত্ব কী?
গোত্র একটি বংশের পরিচয় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে। প্রাচীন যুগে বর্ণভেদকে শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য অনেক সমস্যা ছিল। অতএব গোত্র অস্তিত্বে এসেছিল। আজও যে কোনও শুভ কাজে গোত্রের উপর নির্ভর করে গুরুত্ব বিবেচনা করা হয়।
একই গোত্রে কেন বিয়ে হয় না?
বিশ্বাস করা হয় যে একই গোত্রের মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন হয় না। আসলে আগে মনে করা হত একটি গোত্রের যারা, তাঁরা ভাই-বোন। তাই সেক্ষেত্রে স্বামী- স্ত্রীয়ের ভাই- বোন হওয়ার সম্ভবনা থাকে। সেজন্য আজও একই গোত্রে বিয়ে হয় না।