গত ১৮ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে শ্রাবণ মাস। ১৯ জুলাই ছিল শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার। শ্রাবণ মাসকে (Shravana Month) দেবাদিদেব শিবের (Lord Shiva) মাস বলে মনে করা হয়। হিন্দু ধর্মে (Hinduism) এই মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুণ্যার্থীরা শ্রাবণের প্রতি সোমবার শিবের জন্যে ব্রত পালন করেন। সাধারণত মাসভর চলে নানা ধর্মীয় রীতি পালন। সেই সঙ্গে কিছু বিশেষ কাজ এই মাসে শুভ বলে মনে করা হয়।
ধুতুরা, আকন্দ, অপরাজিতা, কলকে প্রভৃতি ফুল শিবের প্রিয় বলে জানা যায়। তবে মহাদেব বেলপাতাতেই (Bel Pata) সবচেয়ে বেশি তুষ্ট হন। জ্যোতির্বিদ প্রবীণ মিশ্র জানাচ্ছেন, দেবাদিদেব শিবকে কেন বেলপাতা উৎসর্গ করা হয়। জেনে নিন এক্ষেত্রে কোন নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত।
পুরাণ মতে এই শ্রাবণ মাসেই সমুদ্র মন্থন ঘটেছিল। সেই সময় মহাদেব, হলাহল বিষ পান করেছিলেন। সেই সময় বিষের তেজে তাঁর শরীর নীল হয়ে যায় বলেই, শিবের আরেক নাম 'নীলকণ্ঠ'। এই ভাবেই সৃষ্টির রক্ষা করেছিলেন মহাদেব, তাই তাঁকে 'সৃষ্টির রক্ষাকর্তা' বলা হয়।
মহাদেবের শরীরের বিষের তেজে সেই সময় তাঁর সারা শরীরের তাপমাত্রা প্রবল বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফলস্বরূপ, পরিবেশ জ্বলতে শুরু করে। সেই সময় স্বর্গের দেব -দেবীরা বেলপাতা দিয়ে ভোলেনাথকে স্নান করান। ধীরে ধীরে এরপরই তাঁর শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তখন থেকেই শিবকে বেলপাতা দিয়ে পুজো করা হয়।
বেলপাতার অনেক গুণ রয়েছে। তবে বেলপাতা দিয়ে পুজো করার সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখার নিয়ম রয়েছে। শিবলিঙ্গে বেলপাতা দিয়ে, জল ঢালতে হয়। এতে শিবলিঙ্গ ঠাণ্ডা থাকে। তবে বেলপাতাতে যেন তিনটি পাতা থাকে, সেদিকে নজর রাখা জরুরি।
সব সময়ে শিবলিঙ্গে বেলপাতার মসৃণ দিকটা দিতে হয়। তবে মনে রাখবেন বিকৃত বেলপাতা একদমই দেওয়া উচিত না মহাদেবকে। প্রথমে পরিষ্কার জলে এবং এরপর গঙ্গা জল দিয়ে বেলপাতা ধুয়ে শিবলিঙ্গে উৎসর্গ করা ভাল।
শিবলিঙ্গে বেলপাতা দিয়ে জল ঢালার সময় ওম নমঃ (Om Namah Shivay) শিবায় মন্ত্রোচ্চারণ করলে বিপদ থেকে মুক্তি মেলে।
স্কন্দ পুরাণ মতে, এক সময় দেবী পার্বতীর একবিন্দু ঘাম মন্দরাচল পাহাড়ের ওপর পড়ে। সেখান থেকেই বেল গাছের জন্ম হয়।