আষাঢ় মাসের রথযাত্রা থেকে উল্টোরথের মধ্যে যে শনিবার ও মঙ্গলবার পড়ে, সেই দিনগুলিতেই বিপত্তারিণীর ব্রত (Bipadtarini Vrat) করা হয়। হিন্দু ধর্মে বিপত্তারিণী ব্রতের গুরুত্ব অনেক। দেবী দুর্গার (Devi Durga) ১০৮ অবতারের অন্যতম এবং দেবী সঙ্কটনাশিনীর একটি রূপ মা বিপত্তারিণী। ভক্তি মনে এই পুজো করলে, যে কোনও বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
হিন্দুধর্মাবলম্বী মূলত মহিলারা সব বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পুজো করেন। শুধু তাই নয়, অর্থ সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে, ঘরে সুখ ও সমৃদ্ধি লাভ করতে বিপত্তারিণীর ব্রত পালন করা হয়। এই পুজোর একটা বিশেষ নিয়ম হল সবকিছু ১৩টা করে উৎসর্গ করতে হয় দেবীকে। তবে এই পুজোর দিন না জেনে কিছু কাজ করলে হতে পারে ঘোর বিপদ। জেনে নিন শাস্ত্র মতে, বিপত্তারিণী পুজোয় (Bipadtarini Pujo) কোন জিনিসগুলো করবেন না।
বিপত্তারিণী পুজোর বিধি নিষেধ
* বিপত্তারিণী পুজোর আগের ও পুজোর দিন কখনই আমিষ খাবেন না। আগের দিন নিরামিষ এবং পুজো শেষে ১৩ টা লুচি ও ১৩ রকমের ফল প্রসাদ হিসাবে গ্রহণ করুণ। তবে চালের জিনিস খাওয়া একেবারেই নিষেধ।
* এই পুজোর দিন পরিবারের কোনও সদস্যের মদ্যপান করা এড়ানো উচিত।
* পুজোর চলাকালীন কারও সঙ্গে কথা বলবেন না। এর ফলে দেবী রাগান্বিত হতে পারেন এবং অর্থ সম্পর্কিত সমস্যা শুরু হয়। সেই সঙ্গে ব্যবসায় ক্ষতি, বাড়িতে অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।
* বিপত্তারিণী পুজোর সময় কখনই কাউকে অপমান করবেন না। এমনকি এদিন কোনও মহিলার সম্পর্কে কুরুচিকর কথাও বলবেন না। এতে মা লক্ষ্মী ক্রুদ্ধ হন।
আরও পড়ুন: দেবীর আগমন-গমনে কী বার্তা দিচ্ছে এবার! ধরায় ফিরবে সুদিন?
* এদিন পরিবারের নিকট সদস্য ছাড়া কোনও ব্যক্তিকে টাকা দেবেন না ও নিজেও ধার করবেন না। মনে করা হয় এই সময় প্রদত্ত অর্থ ফেরত আসে না। সেই সঙ্গে, দেবী রুষ্ট হন এবং সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যায়।
* কোনও অপরিচ্ছন্ন স্থানে বিপত্তারিণী পুজো করবেন না। নয়তো ঘরের সুখ ও শান্তি নষ্ট হয়।
* বিপত্তারিণী পুজোর দিন কাউকে চিনি দেবেন না। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, চিনির শুক্র এবং চন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে শুক্র বস্তুগত সুখের কর্তা। তাই এদিন চিনি দিলে শুক্র দুর্বল হয় এবং সংসারে অশান্তির পাশাপাশি আর্থিক সংকট দেখা দেয়।
বিপত্তারিণী পুজো ২০২১
আগামী ১৩ জুলাই (২৩ আষাঢ়), মঙ্গলবার এবং ১৭ জুলাই (৩২ আষাঢ়) শনিবার পালন করা হবে বিপত্তারিণীর ব্রত।
আরও পড়ুন: পুজোয় ফুল আবশ্যক! জানুন এর আসল মাহাত্ম্য
বিপত্তারিণীর মন্ত্র:
মাসি পূণ্যতমেবিপ্রমাধবে মাধবপ্রিয়ে। ন বম্যাং শুক্লপক্ষে চবাসরে মঙ্গল শুভে। সর্পঋক্ষে চ মধ্যাহ্নেজানকী জনকালয়ে। আবির্ভূতা স্বয়ং দেবীযোগেষু শোভনেষুচ। নমঃ সর্ব মঙ্গল্যেশিবে সর্বার্থসাধিকে শরণ্যে ত্রম্বক্যে গৌরী নারায়ণী নমস্তুতে।।