scorecardresearch
 

Kali Puja 2021 : আসছে দীপাবলি, রইলো কলকাতার আদি কালীবাড়িগুলির ইতিকথা

দক্ষিণেশ্বর থেকে কালীঘাট, শহরের উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম, সর্বত্রই রয়ে ঐতিহ্যমণ্ডিত কালীমন্দির। আর সেই সমস্ত কালীমন্দিরের নেপথ্যে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাসও। সামনেই দীপান্বিতা অমাবস্যা। সেই উপলক্ষ্যে মা কালীর আরাধনায় মাতবেন বঙ্গবাসী। তার আগে একবার দেখে নেওয়া যাক শহর কলকাতার প্রধান প্রধান কালীমন্দিরগুলির ইতিহাস। 

Advertisement
কালী প্রতিমা কালী প্রতিমা
হাইলাইটস
  • সামনেই দীপান্বিতা অমাবস্যা
  • শ্যামা মায়ের আরধনায় মাতবেন বঙ্গবাসী
  • কলকাতার কিছু প্রাচীন কালী মন্দিরের ইতিহাস জেনে নিন

কথায় বলে জয় কালী কলকত্তাওয়ালী। অর্থাৎ শহর কলকাতা মানেই মা কালীর শহর, বা বলা ভাল এই তিলোত্তমা মহনগরীর সঙ্গে মা কালীর নাম যেন ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। দক্ষিণেশ্বর থেকে কালীঘাট, শহরের উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম, সর্বত্রই রয়ে ঐতিহ্যমণ্ডিত কালীমন্দির। আর সেই সমস্ত কালীমন্দিরের নেপথ্যে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাসও। সামনেই দীপান্বিতা অমাবস্যা। সেই উপলক্ষ্যে মা কালীর আরাধনায় মাতবেন বঙ্গবাসী। তার আগে একবার দেখে নেওয়া যাক শহর কলকাতার প্রধান প্রধান কালীমন্দিরগুলির ইতিহাস। 

দক্ষিণেশ্বর - গঙ্গার তীরে দক্ষিণেশ্বর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন রানি রাসমণি। শোনা যায় মা কালীর স্বপ্নাদেশে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন মা রানি রাসমণি। ১৮৪৭ কাশীতে তীর্থযাত্রার আয়োজন করেন রানি। কিন্তু তীর্থযাত্রার আগেই দেবী স্বপ্নে দেখা দেন তাঁকে এবং দক্ষিণেশ্বরে মন্দির প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। সেই স্বপ্নাদেশের ভিত্তিতেই মন্দির নির্মাণ শুরু করেন রানি রসমণি। মন্দিরের কাজ শেষ হয় ১৮৫৫ সালে। সেই বছরই ৩১ মে মন্দিরের মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়। এখানে ম ভবতারিণী রূপে পূজিতা। শুধু রানি রাসমণিই নয়, শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব, মা সারদাদেবী ও স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতি বিজরতিও এই মন্দির। 

মা ভবতারিণী
মা ভবতারিণী

কালীঘাট - সতীপীঠের অন্যতম এই কালীঘাট। কথিত আছে আত্মারাম ব্রহ্মচারী নামে এক মাতৃসাধক দেবীর আদেশে নীলগিরি পর্বত এপর এক সাধক ব্রহ্মানন্দ গিরির থেকে একটি কষ্টিপাথরের শিলাস্তম্ভ এনে এখানে স্থাপন করেন। স্বয়ং দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা সেই শিলাকে মাতৃরূপ দেন। তবে মূর্তি তৈরি হলেও নিখোঁজ ছিল দেবীর চরণ। পরে একরাতে সাধনার সময় কলীন্দি হ্রদে একটি জ্যোতি দেখতে আত্মারাম ও ব্রহ্মানন্দ। পরদিন সেখানেই পাওয়া যায় মায়ের চরণ। তবে বর্তমান মন্দিরটি অবশ্য ১৮০৯ সালে বড়িশার সাবর্ণ জমিদার শিবদাস চৌধুরী, তাঁর পুত্র রামলাল ও ভ্রাতুষ্পুত্র লক্ষ্মীকান্তের উদ্যোগে আদিগঙ্গার তীরে নির্মিত হয়। 

Advertisement
কালীঘাটের বিগ্রহ
কালীঘাটের বিগ্রহ

ঠনঠনিয়া - কলকাতার অন্যতম জাগ্রত মন্দির এই ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি। জনশ্রুতি অনুযায়ী ১৭০৩ সালে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে এক তান্ত্রিক মাটি দিয়ে মা সিদ্ধেশ্বরীর মূর্তি গড়েন। তারও ১০৩ বছর পর অর্থাৎ ১৮০৬ সালে শঙ্কর ঘোষ কালীমন্দির ও পুষ্পেশ্বর শিবের মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করে নিত্যপুজোর ব্যয়ভার গ্রহণ করেন। এলাকার পুরনো লোকজনেরা বলেন, সম্ভবত স্বপ্নাদেশেই পুজোর ব্য.ভার গ্রহণ করেছিলেন শঙ্কর ঘোষ। 

ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি - কলকতার এই কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনি রয়েছে। কেউ বলেন কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি হিন্দুধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এই মন্দিরে যাতায়াত শুরু করেন। পরে সেখান থেকেই ধীরে ধীরে মন্দিরের নাম হয় ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি। তবে মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে রয়েছে আরও গল্প। এই ফলক থেকে জানা যায়, মন্দিরটি ৯০৫ বঙ্গাব্দে স্থাপিত। শোনা যায় এটি প্রথমে ছিল শিব মন্দির। ১৮২০-১৮৮০ সাল পর্যন্ত মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ছিলেন শ্রীমন্ত পণ্ডিত। তবে তিনি নিঃসন্তান হওয়ায় ১৮৮০ সালে পোলবার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের শশীভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৬০ টাকায় দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। এখনও সেই পরিবারই মন্দিরের প্রধান সেয়ায়েত। 

ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি
ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি

পুঁটে কালীবাড়ি - শোনা যায় দেববংশীয় ভূস্বামীদের কোনও এক কর্মচারী মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে লুকিয়ে নববৃন্দাবন থেকে কালীমূর্তি এনে গোলপাতার একটি মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম পাকা মন্দির স্থাপিত হয় ১৫৫৮ সালে। কারও কারও মতে আবার, এক ইঁদারা থেকে পাওয়া গিয়েছিল দেবী মূর্তি। পরে হুগলির মানিকরাম বন্দ্যোপাধ্যায় তা মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩০-র দশকে মন্দিরটি সংস্কারের পর বর্তমান রূপটি পায়।

আরও পড়ুনViral : ইডলি নাকি বড়া পাও? খাবার দেখে আবার নেটিজেনরা

 

Advertisement