দণ্ড মহোৎসব বা দই-চিঁড়ে মেলাকে কেন্দ্র করে উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের পানিহাটিতে (Sodepur Panihati) ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ভিড়ের চাপে ও গরমে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল একাধিকের। যার জেরে কার্যত বন্ধ করে দিতে হল পুজো। নতুন করে ভক্তদের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন।
করোনার জেরে গত ২ বছর সেভাবে আয়োজন করা যায়নি এই দই চিঁড়ে মেলা (Dahi Chida Festival 2022)। ফলে এইবছর আবার মহাসমারোহে দণ্ড মহোৎসব আয়োজিত হতেই ঢল নামে ভক্তদের। স্থানীয়দের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমান পানিহাটিতে। আর ভিড় হবে না-ই বা কেন? রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন এই ধর্মীয় মেলা তথা উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু বা শ্রী চৈতন্যদেবের কাহিনি।
পদার্পণ করেন গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু
কথিত আছে মোট দু'বার পানিহাটির এই জায়গায় এসেছিলেন গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু। প্রথমবার ইংরেজির ১৫১৪ খ্রীষ্টাব্দ তথা ৯২১ বঙ্গাব্দে। সেবার জলপথে পুরী থেকে ফেরার সময় এই জায়গায় পদার্পণ করেন তিনি। পরে আরও একবার এসেছিলেন মহাপ্রভু। যে ঘাটে তাঁর নৌকা ভিড়েছিল তার নামও রাখা হয় চৈতন্য ঘাট। সেই সময় রাঘব পণ্ডিতের বাড়িতে থাকতেন চৈতন্যদেব। এমনকি শ্রী শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর শ্রী মন্দিরে আজও তাঁর পদচিহ্ন সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। মন্দিরে কৃষ্ণের সমস্ত রূপের পুজো করা হয়।
দণ্ড মহোৎসবের ইতিহাস
পরবর্তী সময়ে হরিনাম প্রচারের উদ্দেশ্যে নিত্যানন্দ প্রভুকে পানিহাটিতে পাঠান চৈতন্যদেব। ইংরেজির ১৫১৬ সাল তথা ৯২৩ বঙ্গাব্দে সপ্তগ্রামের জমিদার তনয় রঘুনাথ দাসকে দই চিঁড়ে বিতরণের কৃপাদণ্ড দান করেন তিনি। অর্থাৎ দণ্ড হিসেবে খেতে চেয়েছিলেন মালসা ভোগ (চিঁড়েদইকলা একসঙ্গে মিশিয়ে ফলাহার)। সেই থেকেই প্রতিবছর জৈষ্ঠ্য শুক্লা ত্রয়োদশীতে আয়োজিত হয় দণ্ড মহোৎসব (Panihati Danda Mahotsav)।
শুধু শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু বা নিত্যানন্দ প্রভুই নন, শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, রাধারমন চড়কদাসদেব, রামদাস বাবাজি মহারাজ, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বা চিত্তরঞ্জন দাসের মতো মনীষীদের পদধূলিও পড়েছে এই স্থানে। এমনকি দণ্ড মহোৎসেবর সময়ে শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সেখানে রাত্রিবাস করতেন বলেও জানা যায়।
আরও পড়ুন - আধারের সঙ্গে IRCTC Account-এর লিঙ্ক করুন এভাবে, পাবেন বাড়তি সুযোগ