
আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে বামেদের হাত মেলানো নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, বামেরাও তা হলে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গেই হাত মেলাল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় হচ্ছে বাম-কংগ্রেসের ব্রিগেড নিয়ে। এখন বিষয় হল, নিজেদের সেক্যুলার দাবি করা বামেরা এই প্রথম এহেন সিদ্ধান্ত নিল? কমিউনিস্ট জ্যোতি বসুও 'হিন্দুত্ববাদী' অটলবিহারী বাজপেয়ীর হাত ধরেছিলেন এক সময়। বোফর্স কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে কলকাতায় এক মঞ্চে জ্যোতি বসু ও বাজপেয়ীর হাত ধরাধরি। বামপন্থী এবং হিন্দুত্ববাদীদের বোঝাপড়ার নজির হিসেবে সে বার ওই ছবি ছড়িয়ে দিয়েছিল কংগ্রেস।
জরুরি অবস্থা থেকে বোফর্স কেলেঙ্কারি
১৯৭৭ সালেও ইন্দিরা গান্ধীর ঘোষিত জরুরি অবস্থার সময়ে কংগ্রেস বিরোধী আন্দোলনেও বাজপেয়ী, আডবাণীদের সঙ্গে একযোগে লড়াইয়ে নামে বামেরা। ১৯৮৭ সাল। বোফর্স কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে রাজীব গান্ধীর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং। এলাহাবাদে তখন কংগ্রেস সাংসদ বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন। বোফর্সে তাঁর ভাই অজিতাভ বচ্চনের নাম জড়ায়। মাঝ পথে সাংসদ পদ ত্যাগ করতে হয় অমিতাভকে।
বিশ্বনাথপ্রতাপ সিং উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী সুনীল শাস্ত্রীকে হারিয়ে সাংসদ হন। জনমোর্চার বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংকেই ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সামনে রেখে হাতে হাত মিলিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন জ্যোতি বসু ও অটলবিহারী বাজপেয়ী।
বাজপেয়ী-বসু একমঞ্চে
১৯৮৮ সালেও ধর্মতলায় বিশ্বনাথ প্রতাপের সংবর্ধনায় বাজপেয়ী ও জ্যোতি বসু হাত ধরে একসঙ্গে চলার বার্তা দেন। বিশ্বনাথপ্রতাপের সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন জানিয়েছিল বাম ও বিজেপি। লালকৃষ্ণ আডবাণী তাঁর জীবনী 'মাই কান্ট্রি, মাই লাইফ'-এ লিখেছেন, জ্যোতি বসু, সিপিএমের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হরকিষেণ সিং সুরজিৎ এবং বিজেপির বাজপেয়ী ও আডবাণী দিল্লিতে প্রায়ই নৈশভোজে মিলিত হতেন। সে বৈঠক গোপনে হত। শিল্পপতি বীরেন জে শাহর বাংলোয়। শাহ তখন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। বাজপেয়ীর সঙ্গে জ্যোতি বসুর ব্যক্তিগত সম্পর্ক আরও ভাল হয়ে ওঠে সেই সময়টায়। যার নির্যাস, পরবর্তী কালে প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী শাহকে বাংলার রাজ্যপাল করতে চাইলে, জ্যোতিবাবু এক কথায় রাজি হয়ে যান।