বিধানসভা ভোটের দিন যত এগোচ্ছে রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদও ততই যেন বাড়ছে। একদিকে উন্নয়নকে হাতিয়ার করে তৃতীয় বার বাংলার মসনদে টিকে থাকতে চাইছে তৃণমূল। অন্যদিকে, শাসকদলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে বাংলায় ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিজেপি। এই আবহেই বঙ্গ রাজনীতি এখন উত্তপ্ত বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলাকে কেন্দ্র করে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমেই সুর চড়াচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারও জবাব তলব করেছে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে। আর এর মধ্যে শনিবার বারাকপুর কমিশনারেটের বিশাল পুলিশবাহিনী হানা দিল বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-এর বাড়িতে।
ভাটপাড়া বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-এর বাড়ি 'মজদুর ভবন' তল্লাশি করতে এদিন হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। ভাঙচুর ও সংঘর্ষের একটি পুরনো মামলায় আদালত থেকে সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে এসেছিল পুলিশ। তবে সেই সময় বারাকপুরের সাংসদ বাড়িতে ছিলেন না বলেই জানা যাচ্ছে। অর্জুনের বাড়ির বাইরে পাহাড়ায় থাকা সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রি সিকিউরিটি ফোর্স করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদের বাড়ির অন্দরে ঢুকতে বাধা দেয়। অর্জুনের বাড়ির সামনে বিশাল পুলিশ বাহিনী দেখে দলীয় কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। পরে রাত ১০টা নাগাদ পুলিশ তল্লাশি করে করে সাংসদের বাড়িতে। এদিকে এদিনই বারাকপুরে লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হালিশহরে খুন হন এক বিজেপি কর্মী। গেরুয়া শিবিরের দলের যুব নেতাকে। এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তুলছে বিজেপি। সরব হয়েছেন এলাকার সাংসদ অর্জুন সিংও। তাই এদিন রাতে তাঁর বাড়ি পুলিশ পাঠান হয়েছে বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ।
কয়েকদিন আগেই অর্জুন মন্তব্য করেছিলেন ভোটের আগেই রাজ্যের সরকার পড়ে যাবে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুরে দাঁড়ালে হারবেন। তবে ভোটের উত্তাপ যতই বাড়ছে এই রাজ্যে রাজনৈতিক নেতাদের বুলিও তত বিতর্কতি হচ্ছে। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার আগেই অর্জুন দাবি করেছিলেন বিজেপিতেই আসছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও আরও পাঁচ তৃণমূল সাংসদও দল ছাড়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন বলেও বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর ইঙ্গিত ছিল তৃণমূল ছাড়তে ইচ্ছুক সাংসদের তালিকায় নাম রয়েছে সৌগত রায়ের। এরপরেই বারাকপুরের বিজেপি সাংসদকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সৌগত রায় বলেন, ‘‘ওর ভাটপাড়া আমরা কেড়ে নেব। ২০২৪ সালে লোকসভা কেন্দ্রটিও ওর থেকে কেড়ে নেব।’’ এবার পুরনো মামলায় বারাকপুরের জাদরেল বিজেপি সাংসদের বাড়িতে পুলিশের আগমনে তাই রাজনৈতিক গন্ধ পাচ্ছেন ওয়াকিবহাল মহল।