বিধানসভা ভোট না মেটা পর্যন্ত তিনি নিয়মিত রাজ্য সফরে আসবেন, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে সেই মত বাংলা সফরও করেছিলেন। জানুয়ারিতেও সেই নিয়মের অন্যথা হচ্ছে না। প্রথম কথা ছিল বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তীতেই বাংলায় শাহী আগমন ঘটবে। তবে পরে সেই সফরসূচি পিছিয়ে যায়। জানা যাচ্ছে চলতি মাসের শেষেই ফের দু'দিনের সফরে বঙ্গে আসছেন অমিত শাহ। আর এবার মতুয়াগড় ঠাকুপনগর ছাড়াও অমিত শাহের গন্তব্যে থাকছে বৈষ্ণব নগীর মায়াপুর।
জানা যাচ্ছে জানুয়ারির ৩০ এবং ৩১ তারিখ বাংলায় কাটাবেন তিনি। গত নভেম্বরে রাজ্যে এসে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে দেখা গিয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। গত ডিসেম্বরর সফরসূচিতে ছিল সিমলা স্ট্রিটে বিবেকানন্দের বাড়ি। জানুয়ারিতে বঙ্গে এসে শাহ মায়াপুর যাবেন বলেই জানা যাচ্ছে। সফরের প্রথম দিন অর্থাৎ ৩০ তারিখ বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া উত্তর চব্বিশ পরগনার ঠাকুনগরেও যাবেন অমিত শাহ। একুশের নির্বাচনে মতুয়া ভোটকে টার্গেট করেছে বিজেপি। কিন্তু সিএএ প্রয়োগের দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরেই বেসুরো বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তাই তাকে বাগে আনতে সব চেষ্টাই চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। শান্তনু ঠাকুরের দাবি মেনেই সফরের প্রথম দিনই ঠাকুরনগরে সভা করবেন শাহ। এই সভায় সিএএ নিয়ে সরকারের অবস্থান জানাতে পারেন তিনি। মতুয়াদের মন জয়ে এই সভা থেকে বড় কোনও ঘোষণাও করতে পারেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি৷
সফরের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি হাওড়ার উলুবেশিয়ায় রোড শো করতে দেখা যাবে অমিত শাহতে। গতবার বঙ্গে এসে বোলপুরের রোড শোতে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলেন শাহ। যা নিয়ে তিনি অভিভূত এমন প্রতিক্রিয়াও দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও সেই রোড শোর কয়েকদিনের মধ্যে একই পথে পদযাত্রা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিড়ে শাহী রোড শোকে টেক্কাও দেন তৃণমূলনেত্রী। অমিত শাহের এবারের সফরে বিজেপির তরফে বড় যোগদান মেলার আয়োজন করা হতে পারে। গত ১৯ ডিসেম্বের মেদিনীপুর কলেজমাঠে অমিত সভাতেই বিধায়ক, নেতা, সাংসদ সহ ৪২ জনকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেটাই এই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত বিজেপির সবচেয়ে বড় যোগদান পর্ব। শোনা যাচ্ছে এবারের শাহী সফরেও তেমনি যোগদান মেলার আয়োজন করতে পারে গেরুয়া শিবির।
হাওড়া জেলায় এমনিতেই তৃণমূলের অন্দরে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। দল ছেড়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। বেসুরো বাজছেন মমতা মন্ত্রিসভার আরও এক পরিচিত মুখ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের প্রবীণ বিধায়ক জটু লাহিড়ী, প্রবীণ নেতা বাণী সিংহ রায়, হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী, বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া সকলেই দলের প্রতি নিয়মিত নিজেদের ক্ষোভ উগরাচ্ছেন। ফলে হাওড়ায় ঘাসফুল শিবিরে অদূর ভবিষ্যতে বড়সড় ভাঙন ধরতে চলেছে বলেই আশঙ্কা করছেন রাজনৈকি বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এই আবহে উলুবেড়িয়ায় শাহী রোড শোতে নতুন কোনও চমক থাকে কিনা তা জানতে জানুয়ারির শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে রাজ্যবাসীকে।