চতুর্থ দফার ভোটে উত্তপ্ত ছিল উত্তরবঙ্গ। শীতলকুচি কেড়ে নিয়েছিল সব নজর। তবে পঞ্চম দফায় শান্তিতেই ভোট হল উত্তরে। বরং বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা এল দক্ষিণবঙ্গ থেকে। বিশেষ করে নদিয়ার কল্যাণী ও উত্তর চব্বিশ পরগনার বিধাননগর কেন্দ্র থেকে এল উত্তেজনার খবর। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকেও উঠেছে অভিযোগের তির। এমনকি মদন মিত্র, সুজিত বসুর মত তণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থীদের বুথে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে বিজেপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থী পার্নো মিত্র ও সব্যসাচী দত্তকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ।
মদন মিত্রকে বাধা
এবার কামারহাটি থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন মদন মিত্র। সকালে দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিণীর পুজো দিয়ে দিন শুরু করেন মদন। অভিযোগে এদিন কামারহাটি কেন্দ্রর আড়িয়াদহতে ১৬৫/১৬৬ বুথে ঢোকার পথে কামারহাটির তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্রকে বুথে ঢুকতে বাধা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। বুথে প্রবেশের মুখে মা কালীর ছবিকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। তল্লাশির পর মদনকে মা কালীর ছবি নিয়ে বুথে ঢোকায় বাধা দেয় বাহিনী। এরপরই প্রতিবাদ জানান মদন মিত্র। চড়া সুরে বলেন, ‘‘আই অ্যাম মদন মিত্র। কেন আমাকে অবৈধভাবে বাধা দেওয়া হবে?’’পরে অবশ্য ছবি নিয়ে বুথে প্রবেশে তাঁকে ছাড় দেওয়া হয়। তিনি বলেন ‘বুথের মধ্যে ঢোকার আমরা পূর্ণ অধিকার আছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী আমরা পকেট দেখে। পকেটে কালী ঠাকুরের ছবি ছিল। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। কেন মা কালীর ছবি নিয়ে ওরা যেতে দেবে না?’ এই ঘটনার কথা কমিশনকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন কামারহাটির তৃণমূল প্রার্থী।
I've full authority to enter a polling booth. They (Central forces) even searched my pocket in which I was carrying pictures of my goddess.This is a democratic country. I'm going to meet Chief Election Commissioner: TMC leader &candidate Madan Mitra,at booth no. 165/166 Kamarhati pic.twitter.com/T1Hqkod96e
— ANI (@ANI) April 17, 2021Advertisement
অতিসক্রিয়তার অভিযোগ সুজিতের
বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলেছেন বিধাননগরের তৃণমূল প্রার্থী সুজিত বসু। কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ তাঁর। ভোট শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধাননগর কেন্দ্রে বুথ পরিদর্শনে বেরোন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুজিত বসু। ঘুরতে ঘুরতে তিনি যান কালিন্দিতে। সেখানে ৬৭২ নম্বর বুথে প্রবেশ করতে গেলে সুজিত বসুকে আটকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। আইন অনুসারে প্রার্থী বুথে ঢুকতে পারবেন না বলে সুজিতবাবুকে বলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তৃণমূল প্রার্থী তার বিরোধিতা করলে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এরপরই বুথের সামনে দাঁড়িয়ে রিটার্নিং অফিসারকে ফোন করেন সুজিত বসু। এতেই সমস্যার সমাধান হয়। রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে ঘটনার মিনিট পাঁচেকের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তৃণমূল প্রার্থীকে বুথের মধ্যে প্রবেশের অনুমতি দেন। সময় কালিন্দির ওই ভোটকেন্দ্রে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন দমদমের তৃণমূল প্রার্থী ব্রাত্য বসু।
পার্নোকেও বুথে ঢুকতে বাধা
বরানগর কেন্দ্রে এবার বিজেপির হয়ে লড়ছেন অভিনেত্রী পার্নো মিত্র। এদিন ভোট শুরু হতেই বিকেসি কলেজে ইভিএম বিভ্রাট হয়। দীর্ঘক্ষণ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ উগরে দেন ভোটাররা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বরানগরের বিজেপি প্রার্থী পার্নো মিত্র। বিকেসি কলেজে অবশ্য ঢোকার মুখে বাধাপ্রাপ্ত হন তিনি। যে প্রসঙ্গে পার্নো মিত্র বলেন, "আমাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। বলছে মেশিন খারাপ। বলছে প্রার্থীদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। এখন অপেক্ষা করছি। যদি সমাধান না হয় নির্বাচন কমিশনকে জানাব।" পরে আলমবাজারে বুথ পরিদর্শনে গেলে তৃণমূলকর্মীরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভের মুখে সব্যসাচী
ভোটের মাঝেই তৃণমূল- বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায় সল্টলেকের শান্তিনগরে। ভোটদানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। জানা যাচ্ছে তৃণমূল বিজেপির উভয়ের সমর্থক আহত হন। অভিযোগ ওঠে বুথের সামনে জমায়েত করে রাখে বিজেপির কর্মী সমর্থকেররা। ঘটনাস্থলে বিজেপি প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত পৌঁছলে তাকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। শক্তিনগরের পরে এবার নয়াপট্টিতে বিক্ষোভের মুখে পড়েন সব্যসাচী।