২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে সবথেকে উল্লেখযোগ্য় নন্দীগ্রাম আসনটি। এখানে প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। অপরদিকে বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ফলে বর্তমানে এই আসনের কোনও বিধায়ক নেই। তৃণমূল -বিজেপির সঙ্গে লড়াইয়ে রয়েছেন সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও। ২০১১ সালে আদমসুমারি অনুযায়ী নন্দীগ্রামে ৬৫.৮২ শতাংশ হিন্দু। প্রায় ৩৪ শতাংশ মুসলিম। এছাড়া অন্যান্য গোষ্ঠী সংখ্যা ০.১৪ শতাংশ । ১ এপ্রিল এই আসনে ভোটগ্রহণ। এক নজরে দেখুন পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলির ফলাফল।
২০১৬ বিধানসভা নির্বাচন
তৎকালীন তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী পান ১,৩৪,৬২৩টি ভোট। শতাংশের হিসাবে ৬৭.২০। সিপিআইয়ের আব্দুল কবির শেখ পান ৫৩,৩৯৩ ভোট। শতাংশের হিসাবে ২৬.৭০। বিজেপি প্রার্থী বিজন কুমার দাস পান ১০,৭১৩ ভোট। শতাংশের হিসাবে ৫.৪০। এসইউসিআই পায় ৮২৮টি ভোট।
২০১১ বিধানসভা নির্বাচন
তৃণমূল প্রার্থী ফিরোজা বিবি পান ১,০৩,৩০০ ভোট। শতাংশের হিসাবে ৬১.২১। সিপিআইয়ের পরমানন্দ ভারতী পান ৫৯,৬৬০টি ভোট। শতাংশের হিসাবে ৩৫.৩৫। বিজেপি প্রার্থী বিজন কুমার দাস পান ৫,৮১৩। ভোট ১ শতাংশ ভোট পায় বিজেপি।
আরও পড়ুন, 'চায়ে বিষ মিশিয়ে দেবে, বিজেপির খাবার খাবেন না', বার্তা মমতার
২০০৯ সালের বিধানসভা উপ নির্বাচন
তৃণমূলের ফিরোজা বিবি পান ৯৩,০২২টি ভোট। সিপিআইয়ের পরমানন্দ ভারতী পান ৫৩,৪৭৩টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী বিজন কুমার দাস পান ৯,৮১৩ ভোট। বামেদের হারিয়ে নন্দীগ্রামে ফোটে ঘাসফুল।
২০০৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন
সিপিআইয়ের ইলিয়াস মহম্মদ শেখ পান ৬৯,৩৭৬টি ভোট। তৃণমূলের শেখ সুফিয়ান পান ৬৪,৫৫৩টি ভোট। কংগ্রেসের আনোয়ার আলি পান ৪,৯৪৩টি ভোট।
কড়া টক্কর
বিগত বিধানসভা নির্বাচনগুলির ফলাফল যদি বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে দেখা যাচ্ছে বিজেপির সর্বোচ্চ ভোট এই আসনে ৫ শতাংশ। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলে নন্দীগ্রামে বিরাট ভোট পায় গেরুয়া বাহিনী। প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট আসে পদ্ম শিবিরের ঝুলিতে। সেই সময়ে তৃণমূলের হয়ে জিতেছিলেন শুভেন্দুর অধিকারীর দাদা দিব্যেন্দু অধিকারী। বর্তমানে নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী বর্তমানে বিজেপিতে। দিন কয়েক আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শিশির অধিকারীও। জল্পনা চলছে, দিব্যেন্দুও কয়েকদিনের মধ্যে দলবদল করতে পারেন। ফলে মমতা বনাম অধিকারী পরিবারের লড়াইয়ের ক্রমশ পরিণত হচ্ছে এই আসনটি।