দলবদলের পরেও নিজের খাসতালুকে তিনি যে এখনও সমান ভাবে জনপ্রিয় তা প্রমাণ করে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কাঁথির সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠে তিনি যখন জনসভা শুরু করেন তখন ভিড় থিকথিক করছে। সেই সঙ্গে কার্যত প্রেস্টিজ ফাইটে তিনি যে হারেননি তা বুঝিয়ে দিলেন নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র। বুধবার তৃণমূলের জনসভাতেও ভাল জনসমাগম হয়েছিল। একেবারে অধিকারী বাড়ির ঢিলছোড়া দূরত্ব থেকেই শুরু হয়েছিল সেদিন তৃণমূলের রোড শো। তার পাল্টা হিসাবেই বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল গেরুয়া শিবির। আর দলবদলের পর এটাই ছিল শুভেন্দুর নিজের গড়ে ময়দানে নামা। তবে প্রথম দিনেই তাঁর রোড শোতে বিপুল সাড়া আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। তাই কাঁথির সভা থেকেই নন্দীগ্রামে পাল্টা সভা করবেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চ্যালেঞ্জ জানালেন শুভেন্দু অধিকারী।
প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এই রোড শো-র শেষে সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। গোট রোড শোয়ে তাকে নিয়ে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। আর মানুষের এই সমর্থনই বলে দিচ্ছেন তিনি ভুল সিদ্ধান্ত নেননি। বৃহস্পতিবার মুখে জয় শ্রী রাম ধ্বনির সঙ্গে এমন কথাই বলতে শোনা গেল শুভেন্দুকে। তিনি দল ছাড়ার পর থেকেই তৃণমূল শিবিরের-ছোট বড় নেতৃত্ব আক্রমণ করে চলেছেন শুভেন্দুকে। এমনকি শোনা যাচ্ছে তাঁর প্রাক্তন বিধানসভা কেন্দ্রে স্বয়ং জনসভা করতে আসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নিয়ে এদিন কটাক্ষও করেছেন শুভেন্দু। দাবি করেছেন তিনি এমন কেউকেটা না হলেও 'শুভেন্দু-কাঁটা' নিরসনে স্বয়ং নন্দীগ্রামে ছুটে আসতে হচ্ছে তৃণমূলনেত্রীকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ৭ তারিখ নন্দীগ্রামে সভা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভায় নেত্রী কী বলবেন তা তিনি জানেন, এমন দাবিই করেন শুভেন্দু, তাই তার জবাব দিতে পাল্টা ৮ তারিখ বিজেপির সভা করার ঘোষণাও করেন। শুভেন্দু চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ' আপনি সরকারি ক্ষমতা দিয়ে লোক আনবেন, আমার সঙ্গে ভালোবেসে থাকবে মানুষ।’
কাঁথিতে নিজের শক্তি প্রদর্শন করলেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামেও দিয়ে রাখলেন শক্তি প্রদর্শনের চ্যালেঞ্জ। আপাতত নিজের প্রাক্তন দলের সঙ্গে চাপের খেলায় সফল নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র। বুধবারের তৃণমূলের সভাকেও কটাক্ষ করেই শুভেন্দু বলেন, 'গতকাল তৃণমূলের সভায় দুই মেদিনীপুর মিলিয়ে মাত্র ৫০০০ লোক এসেছিল। আর আজকের সংখ্যাটা দেখে নিন। এটা শুধু ট্রেলার মাত্র। আরও অনেক বাকি আছে।' বিজেপিতে যোগ দিয়েই পুরোদমে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। দুই মেদিনীপুরের বিজেপি সংগঠনের সঙ্গে ইতিমধ্যে মানিয়ে নিয়েছেন শুভেন্দু। এদিন কাঁথিক জনসভায় বেশ কয়েকজন শুভেন্দু অনুগামী বিজেপিতে যোগদানও করেন। আরেক বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষকে সঙ্গে নিয়েই যে তিনি এবার গোটা মেদিনীপুরে পদ্ম ফোঁটাবেন সেই চ্যালেঞ্জও এদিন দিয়ে রাখলেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের বেতাজ বাদশা হুঁশিয়ারি, পদ্ম ফুটিয়ে তিনি ঘুমোতে যাবেন।