দল বিরোধী কাজ ও দীর্ঘদিন দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত না থাকার অভিযোগে মুর্শিদাবাদের জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেন (Mosaraf Hossain) দল থেকে বহিষ্কার করল তৃণমূল (TMC)। বুধবার বহরমপুরে এমনটাই জানালেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) তৃণমূল জেলা সভাপতি আবু তাহের খান (Abu taher khan)। তৃণমূলের জেলা সভাপতি আরও জানান, 'রাজ্যের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদ থেকে মোসারফ হোসেনকে বহিষ্কার করা হবে কি না সেই নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।' পালটা মোশারফ হোসেন (Mosaraf Hossain) জানালেন আগামিদিনে কংগ্রেসেই যোগ দেবেন তিনি।
বুধবার বহরমপুরের একটি বেসরকারি অনুষ্ঠান বাড়িতে বৈঠকে বসে তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। বৈঠকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান (Abu taher khan) ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের ৬৯ জনের মধ্যে ৬০ জন সদস্য। সেই বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন মোসারফ হোসেন (Mosaraf Hossain)। সেই সময় নওদার একটি রাস্তা উদ্বোধনের কর্মসূচিতে ছিলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে আবু তাহের খান জানান, 'এদিন জেলা পরিষদের সদস্যদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল। সেখানেও গরহাজির মোসারফ হোসেন। এরপরেই বাকি সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন। আমরাও দল বিরেধী কাজের জন্য তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
এদিকে মোসারফ হোসেনকে বহিষ্কারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলার রাজনীতিতে। মূলত শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মোসারফের সঙ্গে বিগত কয়েক মাস ধরেই তৃণমূলের মত পার্থক্যের কথা শোনা যাচ্ছিল। এমনকি দলের নির্দেশ অমান্য করেই খড়গ্রামের প্রয়াত জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হোসেনের স্মরণ সবার আয়োজন করেন তিনি। অরাজনৈতিক সেই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর থেকেই আর তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাঁকে। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাতেও ছিলেন না তিনি। এদিকে ইতিমধ্যেই তাঁর নিরাপত্তাও প্রত্যাহার করে নেয় প্রশাসন। এদিন এই বহিস্কারের প্রসঙ্গে মোসারফ হোসেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, 'কোনও সাম্প্রদায়িক দলে তিনি যাবেন না, তিনি কংগ্রেসে যোগ দেবেন।' তিনি আরও বলেন, 'এতে শাপে বর হয়েছে।' তাঁর চ্যালেঞ্জ, 'মুর্শিদাবাদের মানুষ জানেন তৃণমূলের উত্থানের নায়ক কে, আর আগামিদিনে মানুষ জানবেন তৃণমূলের পতনের নায়ক কে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।'