scorecardresearch
 

West Bengal Election 2021: ৪ দফায় ভোট পড়ল ৮০ শতাংশ, কতজন কোভিড রোগী দাঁড়ালেন লাইনে?

এবার করোনা মহামারির মধ্যে ভোটপর্ব চলায় কোভিড পজিটিভ রোগীদের জন্যও ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে কমিশন। ফলে রাজ্যে ৮০ শতাংশ ভোটদানের মধ্যে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন করোনা আক্রান্তরাও। সেই সংখ্যাই সম্প্রতি সামনে এনেছে নির্বাচন কমিশন। তবে কমিশনের ওয়েব সাইটে দেওয়া সংখ্যা কিন্তু চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মত।

Advertisement
এবারের নির্বাচনে করোনা আক্রান্তদের জন্য রয়েছে ভোটদানের ব্যবস্থা এবারের নির্বাচনে করোনা আক্রান্তদের জন্য রয়েছে ভোটদানের ব্যবস্থা
হাইলাইটস
  • শনিবার রাজ্যের পঞ্চম দফার ভোটপর্ব
  • তার আগে বাংলার করোনা পরিস্থিতি বেলাগাম
  • এদিকে এবারের নির্বাচনে করোনা আক্রান্তদের জন্য রয়েছে ভোটদানের ব্যবস্থা

রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর মাঝেই চলছে নির্বাচন। প্রচারের জন্য জমায়েতে রাশ টানা যাচ্ছে না। পরিসংখ্যান বলছে এরাজ্যে প্রথম দফার ভোট ছিল গত ২৭ মার্চ। সেদিন রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮১২। তারপর মাত্র দু'সপ্তাহ পার হয়েছে। পয়লা বৈশাখের দিন রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে ছয় হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এরজন্য ভোটযজ্ঞকেই দায়ি করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই আবহে শুক্রবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যে করোনা বাড়লেও বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহের কোনও খামতি নেই। পরিসংখ্যান বলছে গত চার দফায় রাজ্যে গড়ে ভোট পড়েছে ৮০ শতাংশ। তবে এবার করোনা মহামারির মধ্যে ভোটপর্ব চলায় কোভিড পজিটিভ রোগীদের জন্যও ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে কমিশন। ফলে রাজ্যে ৮০ শতাংশ ভোটদানের মধ্যে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন করোনা আক্রান্তরাও। সেই সংখ্যাই সম্প্রতি সামনে এনেছে নির্বাচন কমিশন। তবে কমিশনের ওয়েব সাইটে দেওয়া সংখ্যা কিন্তু চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মত।

 

 ভোটকেন্দ্রে থার্মাল গান ব্যবহার বাধ্যতামূলক
ভোটকেন্দ্রে থার্মাল গান ব্যবহার বাধ্যতামূলক

 

এখনও পর্যন্ত সাড় ৩ কোটি মানুষ ভোট দিয়েছেন
রাজ্যে গত চার দফায় হওয়া ভোট পর্বে সাড়ে তিন কোটি মানুষ নিজেদের রায়দান করেছেন। এদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নাকি কেবল ১ !‌ হ্যাঁ, মাত্র একজন করোনা আক্রান্ত বুথে গিয়ে ভোটদান করেছেন। এমনটাই জানা যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন সূত্রে। তৃতীয় দফায় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মাত্র একজন কোভিড আক্রান্ত ভোটার বুথে গিয়ে ভোটদান করেছেন। বাসন্তী বিধানসভায় কালীডাঙা ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে পিপিই কিট পরে ওই আক্রান্ত ভোটার নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন। 

উনিশেও 'দিদি'র পাশে, একুশে কি রং বদলাচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা?

করোনা আক্রান্তদের জন্য বিশেষ ভোটদানের ব্যবস্থা
করোনা আবহে বিধানসভা নির্বাচন চলছে রাজ্যে। তাই ভোটের শেষ ঘণ্টায় কোভিড পজিটিভ রোগীদের ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও কমিশনের নতুন  নিয়ম অনুযায়ী, করোনা আক্রান্তদের জন্য হাসপাতাল থেকে ভোটদানের সুযোগ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনে আইসোলেশনে থাকা রোগীর বাড়িতে এসে ভোট নেবে কমিশন। ফলে  কতজন করোনা পজিটিভ ব্যক্তি ভোটদান করলেন?‌ সেই প্রশ্ন অনেকের মনেই  রয়েছে।  কিন্তু কমিশনের  রেকর্ডে এমন কোনও ভোটারের নাম নাকি নেই।  যার ফলে সন্দেহ আরও জোরালো হতে শুরু করেছে। তাহলে কি কোভিড আক্রান্তরা ভোটই দিচ্ছেন না? রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর ও সিইও অফিস সূত্রে খবর, গত চার দফায় এখনও কোনও করোনা আক্রান্ত হাসপাতাল বা হোম আইসোলেশন থেকে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেননি। কেবল বাসন্তী বিধানসভায় কালীডাঙা ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে পিপিই কিট পরে এক করোনা আক্রান্ত ভোটার ভোট দেন। 

Advertisement

তরজায় শাহ-মমতা, রাজবংশীরা কতটা ফ্যাক্টর উত্তর জয়ে?

কমিশনের তরফে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে
কোভিডে আক্রান্ত ভোটারদের কথা মাথায় রেখেই প্রতিটি জেলায় এবার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে কমিশনের তরফে। কোভিড আক্রান্ত ভোটার স্বাস্থ্যদফতরের মাধ্যমে আবেদন জানালেই হাসপাতাল, সেফ হোম বা বাড়িতে এসে কমিশনের প্রতিনিধিরা তাদের ভোট দিতে নিয়ে যাবেন। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রে থার্মাল গান, গ্লাভস, স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল কমিশনের তরফে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের আলাদা করে সময়ও বেধে দেওয়া হয়েছিল কমিশনের তরফে। কিন্তু পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে চারদিকে রোজ যে হাজার হাজার লোক কোভিডের খপ্পরে পড়ছেন, তাদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র একজন  নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন! 

পঞ্চম দফার আগেই আক্রান্ত একের পর এক প্রার্থী
 করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে রীতিমতো থরহরি কম্প বাংলায়। অভিযোগ উঠছে প্রচারে বেরিয় নিয়ম-বিধি মানছেন না প্রার্থীরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁদের মুখ থেকে উধাও মাস্ক। লোকের সঙ্গে দেদার চলছে হাত মেলানো ও শুভেচ্ছা বিনিময়। প্রার্থীদের অধিকাংশই দাবি করছেন, নিয়ম বিধি মানা উচিত হলেও প্রচারে বেরিয়ে তা সম্ভব হচ্ছে না। এর মাঝেই গত বৃহস্পতিবার  করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সামশেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হক ওরফে মন্টু বিশ্বাসের। একের পর এক প্রার্থীর করোনা সংক্রমণের খবর আসছে।  করোনা আক্রান্ত হয়েছেন গোয়ালপোখরের তৃণমূলপ্রার্থী গোলাম রব্বানিও। শুক্রবার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে চুঁচুড়ার তৃণমূল প্রার্থী অসিত মজুমদারের। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন  জঙ্গিপুরের আরএসপি প্রার্থী প্রদীপ নন্দী। ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপকুমার বর্মাও। শিলিগুড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। গত কয়েকদিন ধরে জ্বর-সহ অন্য একাধিক উপসর্গ থাকায় তিনি করোনা পরীক্ষা করান, তাতেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। অন্যদিকে করিমপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ ঘোষও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর মঞ্চে ওঠার আগে র‍্যাপিড টেস্টে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী আনন্দময় বর্মনেরও করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।  ২৭ মার্চ এগরায় নির্বাচনের আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী অরূপ দাস। কয়েকদিন আগে করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে যোগী আদিত্যনাথেরও। বাংলায় গেরুয়া শিবিরের অন্যতম তারকা প্রচারক ছিলেন তিনি। 

 

Advertisement