একেই করোনা ভাইরাসের (Corona Virus) জেরে নাজেহাল সকলে, তার মধ্যে যোগ হয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus) ও হোয়াইট ফাঙ্গাস (White Fungus)। ইতিমধ্যে নতুন এই দুই ফাঙ্গাস করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের (Corona Second Wave) মধ্যেই মানুষের আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, এই দুই মারণ রোগকে করোনার থেকেও ভয়াবহ বলে মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী (Epidemic) বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু হোয়াইট ফাঙ্গাসও মহামারীর চেয়ে কম কিছু না। তবে অনেকের মনেই একটা প্রশ্ন ঘুরছে, সাদা ও কালো এই দুই নতুন ফাঙ্গাসের পার্থক্য কী? সেই সঙ্গে জানা জরুরী কোনটি বেশি ভয়াবহ! আসুন জানা যাক...
ইতিমধ্যে হোয়াইট ফাঙ্গাস আক্রান্ত হওয়ার অনেকগুলি খবর মিলেছে। যদিও এই সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। ঠিক কিসের জন্য এটি আরও বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে, তাও এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
পাটনার পরামর্শক অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট ডাঃ শরদ জানান, "বিভিন্ন স্থানে হোয়াইট ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যেটি মনে করা হচ্ছে ক্যানডিডা। আগে ক্যানডিডা হত বিশেষত ক্যান্সার ও ডায়বেটিসের ওষুধ বা স্টেরয়েড থেকে। যাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের এই ধরণের ফাঙ্গাল সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। হোয়াইট ফাঙ্গাসের চিকিৎসা সম্ভব সহজে। কিন্তু মানুষের সাবধান হওয়া উচিত।"
আরও পড়ুন: ডায়বেটিস রোগীরা এই ৫ উপসর্গ অবহেলা করলেই ঝুঁকি বাড়বে!
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ও হোয়াইট ফাঙ্গাসের পার্থক্য
* এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্লায়ক ফাঙ্গাস সেই সমস্ত করোনা রোগীদের শরীরে পাওয়া গেছে, যারা অনেক স্টেরয়েড খাচ্ছেন। কিন্তু হোয়াইট ফাঙ্গাসে করোনা আক্রান্তরা ছাড়াও অন্য কোনও ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারেন।
* ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের জন্য মূলত চোখ ও মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অন্যদিকে হোয়াইট ফাঙ্গাসের জন্য ফুসফুস, কিডনি, যকৃৎ,অন্ত্র, নখের ক্ষতি হচ্ছে।
* এগুলি ছাড়াও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশ। যার মানে, প্রতি দু'জনের একজন ব্যক্তি এই ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন। উল্টো দিকে এখনও অবধি হোয়াইট ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: মুখ থেকেও ছড়াতে পারে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, সাবধান!
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন হোয়াইট ফাঙ্গাস এর আগেও দেখা দিয়েছিল। বারাণসীর ভিট্রিও রেটিনা সার্জন ডাঃ ক্রিস্টিজ আদিত্য জানাচ্ছেন, "এটি কোনও নতুন রোগ নয়। যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যদিও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ভিন্ন ধরণের। তবে এটিও যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদেরই বেশি হচ্ছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নাক দিয়েই শরীরে প্রবেশ করছে এবং সেখান থেকে চোখ ও মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে আরও অন্যান্য অঙ্গে যেমন হৃদপিণ্ড, কিডনি, হাড়ে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সেই জন্যেই এটিকে ভয়াবহ ফাঙ্গাস হিসেবে মনে করা হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই ভেষজ চা খেলে সুস্থ থাকা নিশ্চিত
সেই সঙ্গে ডাঃ হানি সালভা জানান, "হোয়াইট ফাঙ্গাসও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে যদি এটা রক্ত বা ফুসফুসে আক্রান্ত হয়। এই রোগের চিকিৎসাও আলাদা। এই ফাঙ্গাসের নাম 'হোয়াইট ফাঙ্গাস' কারণ পরীক্ষা করার সময়ে এর মধ্যে সাদা রং দেখা গেছে।" চিকিৎসক আরও জানান, " ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মতো হোয়াইট ফাঙ্গাসও যে কোনও কোথাও হতে পারে। তবে এর চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন।"
আরও পড়ুন: সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই হয়ে যাবে ভয়ঙ্কর করোনা! কী বলছে গবেষণা?
চিকিৎসকদের মতে, কোনও ভাল চর্ম বিশেষজ্ঞই হোয়াইট ফাঙ্গাস সারিয়ে তুলতে পারেন। কিন্তু ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মতোই এটিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।