সংগীত শ্রোতাকে উন্মুক্ত করে। মনকে নিয়ে যায় প্রশান্তির সপ্তম স্বর্গে। একবার এমনটা বলেছিলেন প্রখ্যাত সুরকার এআর রহমান। এবার গবেষকরাও বলছেন, গান শোনা বা গুনগুন করে গাইলে মন প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। শুধু মানসিক স্বাস্থ্যই নয় উন্নতি হয় জীবনযাপনের। ৭৭৯ জন ব্যক্তিকে নিয়ে ২৬টি গবেষণা বিশ্লেষণে করে দেখা গিয়েছে, মানসিক স্বাস্থ্যের পরিবর্তনে সক্ষম হয়েছে সংগীত। মনের স্বাস্থ্যের উপর গান-বাজনার ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে এখনও বিশ্লেষণ চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সংগীতের সঙ্গে মনের যোগ নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্ক ওপেনে। তাতে গবেষকরা দাবি করেছেন, সংগীত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
প্রাপ্তবয়স্কদের ওজনহ্রাস ও স্থূলতার উপরেও ইতিবাচক ফেলতে পারে সংগীত। জার্মানির হ্যানোভার ইউনিভার্সিটি অফ মিউজিক, ড্রামা এবং মিডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মিউজিক সাইকোলজি অ্যান্ড মিউজিশিয়ানস মেডিসিনের গবেষক ম্যাট ম্যাকক্র্যারি একটি গবেষণা করেছেন। তাতে এই ফল বেরিয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সুষম উন্নয়ন প্রকল্পে মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সংগীত হতে পারে একটি হাতিয়ার।
১. চাপ ও উদ্বেগ কমায়
গবেষণা বলছে কঠিন পরিস্থিতিতে সংগীত মানুষকে শান্ত করে। মনকে প্রশান্তি দেয়।
২. ব্যথা প্রশমন
ব্যথা প্রশমনেও সক্ষম সংগীত। National Center for Biotechnology Information জানাচ্ছে, মেরুদণ্ডের সার্জারির সময় রোগীদের পছন্দমতো গান শুনতে বলা হয়েছিল। সার্জারির পরের দিনও গান শুনছিলেন তাঁরা। দেখা গিয়েছে, যাঁরা গান শোনেনি তাঁদের চেয়ে কম ব্যথা অনুভূত হয়েছে।
৩. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
শরীরে রোগ প্রতিরোধের প্রথম ঢাল Immunoglobulin A। গবেষণা বলছে, গান শুনলে প্রাকৃতিকভাবে IgA-র পরিমাণ বাড়ে।
৪. শরীরচর্চায় সাহায্য
শরীরচর্চার সময় অনেকেই গান শোনেন। এতে শরীরচর্চায় মনোনিবেশ করা যায়। উচ্চকিত গান শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
৫. ঘুমোতে সাহায্য
শরীরের স্নায়ুকে শান্ত করে গান। গান শুনলে হার্টরেট স্থিতিশীল থাকে। কমায় রক্তচাপ। মানুষ সহজে ঘুমিয়ে পড়েন।
নানা ধরনের গান ও ধ্বনি ইউটিউবে রয়েছে। মন দিয়ে শুনুন পাতা পড়ার, ঝর্ণা ও পাখিদের ডাকের শব্দ। তা শরীরকে শান্ত করে তুলবে।
আরও পড়ুন- আরও বাড়ল কেন্দ্রের ফ্রি রেশনের মেয়াদ, বড় ঘোষণা মোদীর
মেটা-গবেষণার লেখকরা অবশ্য মনে করেন মস্তিষ্কে সংগীতের ইতিবাচক প্রভাব ভাল করে বোঝার জন্য আরও অধ্যয়ন দরকার। ভবিষ্যতের গবেষণা হতে পারে ঠিক কতখানি সংগীতের ব্যবহার করে সাধারণের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো যায়। কখন, কোথায়, কীভাবে সংগীত ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, সেটাও দেখা দরকার। জনস্বাস্থ্য বা চিকিৎসায় সংগীতের ব্যবহার নিয়ে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- 'চৈত্র সেলে' রাশিয়া থেকে ফের তেল ক্রয়, সস্তায় পেট্রোল-ডিজেল?