Dhakis of Bengal: গত দু’বছরে করোনা পরিস্থিতির জেরে রুজি-রুটি নিয়ে বেজায় সমস্যায় পড়েছিলেন বাংলার ঢাকিরা। তবে এবার পুরনো চেনা ছন্দে ফিরেছে বাঙালির দুর্গাপুজো। সেই চেনা ভিড়, অলি-গলিতে, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ফের স্বমহিমায় ফিরেছেন ঢাকিরা।
সারা বছর ধরে নানা পুজোর সময় বায়না পান ঠিকই। কিন্তু দুর্গাপুজোর সময়টাতে অল্প ক’দিনে মোটা রোজগারের সুযোগ থাকে অনেকের কাছেই। কারণ, এই সময়টায় ঢাকের বায়না আসে অন্তত দিন চারেকের জন্য। কিন্তু সারা বছর কী ভাবে চলে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের?
আরও পড়ুন: স্মার্টফোন-অকাল বৃষ্টিতে বিপন্ন দিঘার সাগর পাড়ের ছবিওয়ালারা
পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা বিমল মণ্ডল জানান, সারা বছর মূলত চাষাবাদ আর জোগাড়ের কাজ থেকেই দু’পয়সা আয় হয়। তাছাড়া, অনেকে জমির সবজি হাটে বেচে টুকটাক আয় করেন। কারও আবার চা-তেলে ভাজার দোকান। তবে পুজোর বায়না পেলে তবেই ঘরের ছেলে-পুলেদের জন্য নতুন জামা-কাপড় কেনার সুযোগ হয়। শুধু তাই নয়, পুজো শেষ হওয়ার পরেই একটু ভাল-মন্দ খাবার, নতুন জামা-শাড়ি কেনার সুযোগ হয়। দুর্গাপুজো, কালীপুজোর বায়না পেরিয়ে যখন একটু একটু করে ঠাণ্ডা পড়তে শুরু করে, তখন ঢাকিদের ঘরে ফেরার পালা।
পূর্ব মেদিনীপুরের অরবিন্দ দাস সারা বছর, বাঁশের কাজ থেকেই টুকটাক আয় করেন। বেতের ঝুড়ি, ধামা, বেরা বানানোর কাজেই অনেকটা সময় চলে যায়। তবে পুজো ছাড়াও বিয়ে, অন্নপ্রাশন, অনুষ্ঠানে তাশা (যেটাকে আমরা সাধারণত কুড়কুড়ি বলেই বেশি চিনি) বাজিয়ে মোটামুটি উপার্জন হয়। তাছাড়া, ঘুড়ি বানিয়েও দু’পয়সা আয় হয়। তাছাড়া, অনেকেই সামান্য হলেও সরকারি সাহায্য পেয়ে থাকেন।
কীভাবে দুর্গাপুজোর বায়না পান ঢাকিরা?
অরবিন্দ জানান, মহালয়ার পরেই কলকাতার জন্য রওনা দেন ঢাকিরা। একে একে জড়ো হন হাওড়া-শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে। সেখানেই দর কষাকষি সেরে যে যার মতো ছড়িয়ে পড়েন শহরের আনাচে কানাচে। এখান থেকে অনেকেই তাঁদের গত কয়েক বছরের ঠিকানায় বায়না পেয়ে পৌঁছে যান ঢাক সাজিয়ে। ওঁরাই যেন উৎসব কাঁধে করে বয়ে নিয়ে ঢোকেন পাড়ায় পাড়ায়। ঢাকে কাঠি পড়লেই শুরু হয় খুসির উৎসব। পুজোর ক’টা দিন ঢাকের তালে মনও যেন নেচে নেচে বেড়ায়।