ঠিক কতটা তাপমাত্রা মানুষ সহ্য করতে পারে? বিজ্ঞান যা বলছে...

সাধারণত মানব শরীর ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। এর বেশি তাপমাত্রা হয়ে গেলে শরীরে প্রোটিনের ভারসাম্যতা নষ্ট হতে পারে, মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। মোদ্দা বিষয় মানব শরীর ডিম ভাজার মতো অবস্থা হবে।

Advertisement
ঠিক কতটা তাপমাত্রা মানুষ সহ্য করতে পারে? বিজ্ঞান যা বলছে...ছবি সৌজন্য: PTI
হাইলাইটস
  • গ্রীষ্মকালে তো এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা হয়ে যায়?
  • শরীর যখন নিজেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে
  • সর্বোচ্চ কত তাপমাত্রায় মানুষের বেঁচে থাকার রেকর্ড রয়েছে

মানুষের দেহের সাধারণত তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট, অর্থাত্‍ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেই জ্বর বলা হয়। সাধারণত মানব শরীর ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। এর বেশি তাপমাত্রা হয়ে গেলে শরীরে প্রোটিনের ভারসাম্যতা নষ্ট হতে পারে, মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। মোদ্দা বিষয় মানব শরীর ডিম ভাজার মতো অবস্থা হবে।

আরও পড়ুন: Covid Vaccine: পিরিয়ডসের উপর প্রভাব ফেলেছে টিকা! যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা 

কিন্তু গ্রীষ্মকালে তো এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা হয়ে যায়?

উত্তর ভারতে একাধিক রাজ্যে বর্ষা দেরিতে ঢুকছে, যার ফলে তাপপ্রবাহ বাড়ছে। আগামী কয়েক দিনে অনেকটাই বাড়বে। পশ্চিমবঙ্গে একাধিক জেলায় গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে চলে যায়। তা হলে তো মানুষ বাঁচতই না! ভাল বিষয়টি হল, মানুষ ঊষ্ণ-রক্তের প্রাণী। বেশি ঠান্ডা বা গরমে মানব শরীর নিজস্ব মেকানিজমে লড়াই করে, একে বলে হোমিওস্ট্যাসিস। এই প্রক্রিয়া মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস নামে একটি অংশ দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ঘাম, মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া বা বাইরের হাওয়ায় কাটানো, এই সবের মধ্যে দিয়েই হাইপোথ্যালামাস তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। 

ছবি সৌজন্য: PTI

শরীর যখন নিজেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তা হলে চিন্তার কী আছে?

এতটা সহজ নয়। কোনও রকম অসুস্থতা বা সংক্রমণ ব্যাধি ছাড়া, মানব শরীরের তাপমাত্রা নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের উপরে। যেমন, বাইরের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, অক্সিজেনের পরিমাণ ইত্যাদি।

১৯৮৫ সালের একটি রিপোর্টে Nasa জানায়, ৪ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত মানব শরীর মোটামুটি সহ্য করে নেয়। কিন্তু আর্দ্রতা যদি ৫০ শতাংশের নীচে হয়, তা হলে এর চেয়েও বেশি তাপমাত্রাতেও মানবশরীর সহ্য করে নেয়। বেশি আর্দ্রতায় বেশি ঘাম হয়, তার মাধ্যমেও তাপমাত্রা শরীরে নিয়ন্ত্রিত হয়।

বস্তুত, হাইপোথ্যালামাসের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেরও একটা সীমা আছে। বেশি তাপমাত্রা, অস্বাভাবিক আর্দ্রতায় শরীরে হাইপারথার্মিয়া দেখা দেয়। তখন দুর্বল, বমি ভাব, তেষ্টায় গলা শুকনোর মতো সমস্যা তৈরি হয় শরীরে। সোডিয়াম, পটাশিয়াম ফল করতে পারে। যার জেরে শরীর কোলাপ্সড করে যেতে পারে। 

Advertisement

সর্বোচ্চ কত তাপমাত্রায় মানুষের বেঁচে থাকার রেকর্ড রয়েছে?

মার্কি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি জায়গা রয়েছে, যার নাম Furnace Creek Ranch। পৃথিবীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে Furnace Creek Ranch-এর। এটি ছিল ৫৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯১৩ সালের ১০ জুলাই। যদিও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা পরবর্তিকালে সেই দাবি খারিজ করে জানায়, ১৯২২ সালে লিবিয়াতে আল আজিজিয়া নামে একটি জায়গায় তাপমাত্রা ওঠে ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। 

ভারতে রাজস্থানের ফালোদিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। পোখরানের কাছে এই ফালোদিতে ২০১৭ সালের অগাস্টে ৫০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলে। ২০১৯ সালে দিল্লিতে রেকর্ড তাপমাত্রা পৌঁছয় ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। 

POST A COMMENT
Advertisement