'জনগণমন' (Jana Gana Mana), ভারতের জাতীয় সঙ্গীত, যা প্রত্যেকটি ভারতবাসীর কাছে গর্বের, অহঙ্কারের ও সম্মানের। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই সৃষ্টি গাওয়ার সময় প্রতিটি ভারতবাসী মনেই জেগে ওঠে দেশমাতৃকার প্রতি অসীম শ্রদ্ধা ও ভালবাস। কিন্তু এতকিছুর পরেও অনেকেই হয়ত জানেন না ঠিক কবে এবং কীভাবে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল জনগণমন।
কবিগুরু (Rabindranath Tagore) রচিত এই গানটি প্রথম গাওয়া হয়েছিল ১৯১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর কলকাতায় আয়োজিত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ২৬তম বার্ষিক অধিবেশনে। ঠিক তার পরের দিন দ্য বেঙ্গলি পত্রিকায় গানটির ইংরেজি অনুবাদসহ সেই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯১২ সালের জানুয়ারিতে ভারত-বিধাতা নামে গানটি প্রকাশিত হয় তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায়। পরবর্তী সময় গানটির ইংরেজি অনুবাদ করেন রবীন্দ্রনাথ।
প্রথম প্রস্তাব দেন সুভাষচন্দ্র বসু
এরপর ১৯৩৭ সালে সর্বপ্রথম সুভাষচন্দ্র বসু (Subhas Chandra Bose) জনগণমন গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত করার প্রস্তাব করেন। এমনকী ১৯৪৩ সালের ৫ জুলাই আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনের কথা ঘোষণার দিনই প্রথমবার জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয় জন-গণ-মন। এরপর ১৯৪৪ সালের মার্চ মাসে মৌডক যুদ্ধে জয়ী হয়ে ভারতে প্রবেশ করে আজাদ হিন্দ ফৌজ। সেইদিন প্রথমবার জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে দেশের মাটিতে বেজে ওঠে জনগণমন।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
দেখতে দেখতে আসে ১৯৪৭, স্বাধীন হয় ভারত। সেইসময় কোনও একটি অনুষ্ঠানে বাজানোর জন্য জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় প্রতিনিধিদের থেকে জাতীয় সংগীতের একটি রেকর্ড চাওয়া হয়। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ভারত সরকারকে জানান এবং জনগণমন বাজানোর পক্ষে মত দেন। এরপর সরকারের অনুমতি অনুসারে জাতিসংঘের অর্কেস্ট্রাবাদনের একটি রেকর্ড সেই অনুষ্ঠানে সাফল্যের সঙ্গে বাজানো হয়। আরও পরে বিশেষজ্ঞরাও এই গানটিকেই দেশের জাতীয় সঙ্গীত করার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। অবশেষে ১৯৫০ সালে আজকের দিনে অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি জনগণমনকেই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বা ন্যাশনাল অ্যানথেম (National Anthem) হিসেবে গ্রহণ করে ভারতের সংবিধান সভা। তবে এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য, গানটির ৫টি স্তবকের মধ্যে শুধুমাত্র প্রথম স্তবকটিকেই নেওয়া হয়েছে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে, যা গাইতে সময় লাগে ৫২ সেকেন্ড।
আরও পড়ুন - অন্যের কথায় Cryptocurrency-তে বিনিয়োগ করে পস্তাচ্ছেন? এখন উপায়...