Raj Bhavan History: সে আমলে লাট সাহেবের ১৩ লাখ টাকার প্রাসাদ, ওটাই তো রাজভবন

Kolkata Raj Bhavan: বাঙালিদের জন্মলগ্ন থেকেই উপমার প্রতি বিশেষ টান রয়েছে। রসে বশে টইটম্বুর বাঙালিরা দিনভর রসিকতা ছাড়া কথা বলতে বা শুনতে বিশেষ পছন্দ করে না। আর এটাই বাঙালিকে অনন্য করে তোলে। উপমার কথা বলতে গেলে একটু ঠাট বাট দেখানো ব্যক্তিদের প্রায়শই একটি শব্দে ব্যাখ্যা কিংবা বলা যায় ব্যঙ্গ করা হয়, তা হল 'লাট-সাহেব'। তা অতীতেও হত, আজও হয়।

Advertisement
সে আমলে লাট সাহেবের ১৩ লাখ টাকার প্রাসাদ, ওটাই তো রাজভবনকলকাতার রাজভবন (Credits: রাজভবন, কলকাতা)
হাইলাইটস
  • সেকালের কলকাতায় সাহেব সুবো গভর্নরদের লাট সাহেব বলা হত
  • ১৭৯৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বর্তমান রাজভবনের প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর মহাসমারোহে প্রোথিত হয়
  • তৎকালীন তেরো লক্ষ টাকা ব্যয় করে তৈরি হয় এই 'লাট প্রাসাদ'

Kolkata Raj Bhavan: বাঙালিদের জন্মলগ্ন থেকেই উপমার প্রতি বিশেষ টান রয়েছে। রসে বশে টইটম্বুর বাঙালিরা দিনভর রসিকতা ছাড়া কথা বলতে বা শুনতে বিশেষ পছন্দ করে না। আর এটাই বাঙালিকে অনন্য করে তোলে। উপমার কথা বলতে গেলে একটু ঠাট বাট দেখানো ব্যক্তিদের প্রায়শই একটি শব্দে ব্যাখ্যা কিংবা বলা যায় ব্যঙ্গ করা হয়, তা হল 'লাট-সাহেব'। তা অতীতেও হত, আজও হয়। পুরনো কলকাতায় বড়লাট, ছোটলাট শব্দগুলি নিয়ে নাড়াঘাটা ছিল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেসব চুকে গেলেও লাট সাহেব উপমাটি রয়ে গেছে।

লাট শব্দের অর্থ হল গভর্নর বা রাজ্যপাল (Governor)। আর সেকালের কলকাতায় সাহেব সুবো গভর্নরদের লাট সাহেব বলা হত। সেই সাহেব সুবো, লাট সাহেবরা দেশ ছেড়ে সাত সমুদ্র পার করলেও তাদের রেখে যাওয়া স্থপতি কলকাতাকে দিয়ে গেছে ঐতিহ্য। এরই মধ্যে একটি হল 'লাট প্রাসাদ', যা রাজভবন (Raj Bhavan) নাম পরিচিত। যা বর্তমানের কলকাতার (Kolkata) অন্যতম আইকনিক স্থান।

তেরো লক্ষ টাকা ব্যয় করে তৈরি হয় এই 'লাট প্রাসাদ'

১৭৯৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বর্তমান রাজভবনের প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর মহাসমারোহে প্রোথিত হয়। তৎকালীন তেরো লক্ষ টাকা ব্যয় করে তৈরি হয় এই 'লাট প্রাসাদ'। হরিসাধন মুখোপাধ্যায়ের লেখা কলকাতার সেকালের ও একালের বই থেকে জানা যায়, এই লাট প্রাসাদটি তৈরির জন্য ৮০ হাজার টাকা শুধু জমি কিনতেই ব্যয় হয়েছিল। এছাড়াও, প্রাসাদ সাজানোর জন্য সোফা, চেয়ার, টেবিল, আলমারি, ঝাড়লণ্ঠন এগুলি কিনতে আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা। এটির বহির্দৃশ্য ও নির্মাণ-প্রণালী বিলেতের ডার্বিশায়ারের 'কেডেলস্টন হল'-র মত তৈরি করা হয়। 

রাজভবনের পুরনো চিত্র (ছবি: গেটি)

এর মত সুদীর্ঘ সিঁড়ি নাকি কলকাতার আর কোনও প্রাসাদতুল্য বাড়িতে নেই

এর উত্তরদিকে 'গ্রান্ড স্টেয়ার কেস' বা সুদীর্ঘ একটি সিঁড়ি আছে, জানা যায়, এমন সুদীর্ঘ সিঁড়ি নাকি কলকাতার আর কোনও প্রাসাদতুল্য বাড়িতে নেই। সিঁড়ির ওপর রয়েছে লম্বা থামওয়ালা বারান্দা, যাকে বলে 'পোর্টিকো'। রাজভবনটি এমনভাবেই তৈরি করা হয় যাতে সমস্ত ঋতুতেই উপরের ঘরগুলিতে সর্বদা হাওয়া বাতাস খেলে। এই পোর্টিকোর ওপর ভারত-সম্রাটের যে রাজচিহ্ন খোদাই করা আছে, তা লর্ড কার্জনই নির্মাণ করে যান। তার ওপর শ্বেত শুভ্র লাট প্রাসাদ কলকাতার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

Advertisement

দো'তলায় নির্মিত হয় বলরুম

এর প্রথম তলায় নির্মাণ করা হয় ব্রেক-ফাস্ট রুম। বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে এই ঘরগুলি ব্যবহার করা হত। দো'তলায় নির্মিত হয় বলরুম। বর্ণনায় পাওয়া যায়, বড়লাটদের এই বলরুমের সৌন্দর্য নাকি অনন্য। রাজভবনের সামনে রাখা রয়েছে কামান। ওয়াই চ্যানেলের সম্মুখে কলকাতার গরিমা এই রাজভবন। রাজভবন দেখতে আজও ভিড় জমান দেশ বিদেশের পর্যটকেরা। 

এসেছেন চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী, পদ্মজা নাইডুরা

ব্রিটিশ মুক্ত ভারতের শাসনকালে এই রাজভবনে গভর্নর জেনারেল হিসেবে এসেছেন চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী, পদ্মজা নাইডু, গোপালকৃষ্ণ গান্ধী প্রমুখরা। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ঠিকানা এই রাজভবন।

POST A COMMENT
Advertisement