Zoophile: আলোচনার বিষয় যদি হয়, বিকৃত কাম, তা হলে প্রাচীন ভারতেও তার নিদর্শন মেলে। বস্তুত, মানুষের বিকৃত মানসিকতা কোন পর্যায়ে নামতে পারে, তার তল পাওয়া কঠিন। সমাজ কতটা অধঃপতনে যাচ্ছে, বা গিয়েছে, সে বিষয়টি সমাজতত্ত্ববিদদের তর্কের বিষয়। কিন্তু যখন মানুষের যৌন লালসার শিকার পশুরা হয়, তখন নিশ্চিন্ত থাকার জো কই! ইতিহাস বলছে, ১৬৩৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্রেফ পশুদের ধর্ষণের অপরাধে ৭০০ জনকে প্রাণদণ্ড দিয়েছিল সুইডেন। হপ্তা খানেক আগেই পশ্চিমবঙ্গেও এক প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করা হয়। জানা যায়, ওই ব্যক্তি তার পোষা কুকুরকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে। সেই ভিডিও ভাইরালও হয়েছিল। শুধু কুকুর নয়, মানুষ নামক প্রাণীটি ছাগল, ঘোড়া, গরু, বিড়ালকেও রেহাই দেয়নি। সে খবরও হয়েছে আখছার।
পশুকামিতা বা জুফিলিয়া কী? (What is Zoophilia?)
চিকিত্সা বিজ্ঞানে এই ধরনের কামকে জুফিলিয়া (Zoophilia) বা পশুকামিতা বলা হয়। ২০১৮ সালে হরিয়ানায় ৮ জন একটি ছাগলকে গণধর্ষণ করেছিল। পরে গর্ভবতী হয়ে মৃত্যু হয় ছাগলটির। পথকুকুরদের ধর্ষণের অভিযোগও মেলে। এগুলিকে আইনি ভাষায় Bestiality-ও বলা হয়। এখন প্রশ্ন হল, জুফিলিয়া বা পশুকামিতা কি অস্বাভাবিক নাকি মানসিক রোগ? ভারতে আইন কী বলছে?
আরও পড়ুন, বারবার বিকৃতকামের শিকার পথ কুকুর, অবলাদের রক্ষা করবে কে?
পশুকামিতা মানসিক রোগ? (Is Zoophilia a mental disease?)
কলকাতার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট প্রশান্ত রায় বলছেন, "এটি নির্ভর করছে ব্যক্তির জীবনে ব্যাঘাত ঘটছে কিনা। যে ব্যক্তির কোনও প্রাণীর প্রতি আসক্তি থাকে, তবে তার দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে না, বৈবাহিক জীবনে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে না, আচরণটি সঠিক না হলেও তাকে মানসিক রোগ বলা যাবে না। ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ব্যাঘাত ঘটলে, অন্য সম্পর্কগুলিতে সমস্যা তৈরি হলে, সে ক্ষেত্রে তাকে মানসিক রোগ বলা হবে। যেখানে সম্মতি নেই, তা যৌন হয়রানি। কিন্তু সব যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে তাকে মানসিক রোগ বলা যায় না। যদি ক্রমাগত এটাই হতে থাকে এবং অন্যান্য সম্পর্ক থেকে সে সন্তুষ্ট হচ্ছে না, শুধু পশুকামেই সন্তুষ্ট হচ্ছে, তবে তাকে মানসিক রোগ বলা হয়।"
আরও পড়ুন, BSF-র কুকুর কীভাবে গর্ভবতী হল? তদন্তের নির্দেশ
পশুকামীরা মানুষের প্রতিও আসক্ত হয়?
মনোবিদ প্রশান্ত রায় বলছেন, 'যদি রোগের পর্যায়ে থাকে তাহলে কম। যদি তা না হয়, একবার, দু'বার কিংবা পাঁচবার ঘটে থাকে তবে নয়। পশুকামিতা যদি সমর্থন করা হয় তবে সমাজের ভারসাম্য হারাবে।'
আইন কী বলছে? (Law of Zoophilia)
আলিপুর ফৌজদারি আদালতের আইনজীবী মোহিত মিস্ত্রি বলছেন, 'ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা (Section 377 of Indian Penal Code) অনুযায়ী যে কোনও অসম্মতিজনক যৌন আচরণকে অস্বাভাবিক বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই আইন বলছে, যে কোনও ক্ষেত্রেই বলপূর্বক যৌন আচরণ হলে, তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভারতে এটি নিষিদ্ধ।'