কাতার বিশ্বকাপ (FIFA World Cup Qatar) নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। বহুবছর ধরেই ফুটবল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি চলছিল দেশটিতে। ২০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি টাকা ব্যয়ে টুর্নামেন্টের জন্য স্টেডিয়াম, মেট্রো লাইন-সহ একাধিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছিল। যেকারণে নিয়োগ করা হয়েছিল হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক (migrant worker)।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, নির্মাণকাজ চলাকালীন শয়ে শয়ে শ্রমিকের (migrant worker) মৃত্যু হয়েছে। একাধিক পরিসংখ্যানে দাবি করা হয়েছে মৃত্যুর সংখ্যা হাজারেরও বেশি। কিন্তু ওই দাবি জোরালো হয়েছে ফিফা বিশ্বকাপের (world cup football) সঙ্গে যুক্ত সে দেশের এক শীর্ষ কর্তা হাসান আল থাওয়াদির একটি ভিডিও প্রকাশের পর।
হাসান 'ডেলিভারি অ্যান্ড লিগ্যাসি' বিষয়ক কাতারের অ্যাপেক্স কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন যে, বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সময় ৪০০ থেকে ৫০০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। পিয়ার্স ওই সাক্ষাৎকারের একটি ক্লিপও শেয়ার করেছেন। যদিও বিষয়টিতে নিরব রয়েছে বিশ্বকাপের শীর্ষ আয়োজক ও কাতার (qatar) সরকার।
পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু মিছিল নিয়ে কথা কিন্তু শুরু হয়েছে বহু আগে। সাতটি স্টেডিয়াম-সহ নানা নির্মাণ কাজে ২০১০-২০ সময়কালে নাকি অন্তত সাড়ে ছ’হাজার অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে কাতারে। এর মধ্যে রয়েছেন ভারতের ২৭১১ জন, নেপালের ১৬৪১ জন, বাংলাদেশের ১০১৮ জন, শ্রীলঙ্কার ৫৫৭ জন। পাকিস্তান দূতাবাস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তানি শ্রমিক মারা গিয়েছেন অন্তত ৮২৪ জন। ফিলিপিন্স বা কেনিয়ার মতো দেশ থেকে আসা শ্রমিকের তথ্য মেলেনি, অতএব মোট মৃতের সংখ্যা আরও বেশি, দাবি উঠেছে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ১৫,০২১।
কাতারে পরিযায়ী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে বহু দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। জানা যাচ্ছে মৃত শ্রমিকদের মধ্যএ বেশিরভাগই দক্ষিণ এশিয়ার। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার বাসিন্দা।
গত ১০ বছরে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য অভাবনীয় সব প্রকল্প হাতে নিয়েছে কাতার। ৭টি নতুন স্টেডিয়াম বানানো হয়েছে। তৈরি কর হয়েছে নতুন বিমানবন্দর, নতুন রাস্তাঘাট ও আধুনিক গণপরিবহনব্যবস্থা। যেকারণে প্রচুর শ্রমিকের প্রযোজন হয়েছে। অভিযোগ, অসংখ্য শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায় বা দুর্ঘটনায়। বহু শ্রমিক আত্মহত্যাও করেছেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: হঠাত্ আকাশ লাল, জেগে উঠল বিশ্বের বৃহত্তম আগ্নেয়গিরি