চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, করোনার নতুন স্ট্রেন আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্রামক! অধিকাংশ আক্রান্তের ক্ষেত্রে কোনও উপসর্গ না থাকায় তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে অনেকের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে জরুরি করোনার টিকাকরণ। করোনার গণটিকাকরণে অগ্রণীর ভূমিকায় রয়েছে বাংলা। রাজ্যের অধিকাংশ মানুষকে করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকাকরণের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এ রাজ্য।
ভোটের ফল প্রকাশের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন বিনামূল্যে রাজ্যের মানুষকে করোনা টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওই প্রতিশ্রুতি মতো গোটা রাজ্যের করোনা টিকাকরণের দায়িত্ব এ বার নিজের কাঁধেই তুলে নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
নবান্ন সূত্রে খবর, বেসরকারি হাসপাতালে যাঁরা করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাঁদেরও এ বার নিখরচায় টিকা দেওয়া হবে সরকারি হাসপাতাল থেকেই। টিকার প্রথম ডোজ যে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয়েছিল তার নিকটবর্তী কোনও সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকার দ্বিতীয় ডোজটি দেওয়া হবে।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, কলকাতা পুরসভা, নিউটাউন কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটি এবং বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের বাসিন্দারা, যাঁরা করোনা টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাঁদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কেভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নিয়েছেন প্রায় ৫৬ দিন হতে চলল, এমন ব্যক্তিদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একই ভাবে, কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর প্রায় ৪২ দিন হতে চলল, এমন ব্যক্তিদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ইতিমধ্যেই বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। কোন কোন সরকারি হাসপাতালে গেলে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে, তারও একটি তালিকা প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার।
বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের বাসিন্দারা সল্টলেক সাব ডিভিশনাল হাসপাতাল, দেশবন্ধুনগর হাসপাতাল, দত্তাবাদ UPHCS, ঝাউতলা UPHCS, কেষ্টপুর UPHCS, অশ্বিনী নগর UPHCS এবং বিদ্যাসাগর মাতৃসদন থেকে কেভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন।
নিউটাউন কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটির অন্তর্গত নিউটাউন Action Area-I-এর বাসিন্দারা কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন মানিকতলার ESI হাসপাতাল থেকে আর কেভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ পাবেন NKDA ভিসি ট্যার্মিনাস বিল্ডিং থেকেই।
কলকাতা পুরসভা এলাকার বাসিন্দারা ডোভার টেরেস, মুকুন্দপুর, নেলি নগর, CIT রোড, নারকেলডাঙা মেইন রোড, বাঙুর পার্ক, নবীন কৃষ্ণ ঘোষাল রোড, গোপাল চ্যাটার্জী রোড, নিমতলা ঘাট স্ট্রিট, রাজা ব্রজরেন্দ্র নারায়ণ স্ট্রিট, জায়গিরঘাট রোড, ঠাকুরপুকুর দাস পাড়া, নিউ আলিপুরের মন্ডল মন্দির লেন, ডেন্টমিশন রোড, এজেসি বোস রোড, সতীন সেন সরণি, নোনাডাঙ্গা, জোকার ডায়মন্ড পার্ক, চেতলা হাট রোড, কার্ল মার্কস সরণি, একবলপুর রোড, মিরজা গালিব স্ট্রিট, পি মজুমদার রোড, বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, ১৭৫/২ রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, যতীন বাগচি রোড, জাননগড় রোড, কলিন স্ট্রিট, শ্রী কলোনি বিবেকানন্দ পার্ক, বাহাদুরমাঠ, দিলখুশা স্ট্রিট, বারানসি ঘোষ লেন, ডায়মন্ড হারবারের ম্যানটন সুপার মার্কেট, রামময় রোডের লেডিজ পার্ক, রাজা রামমোহন রায় রোড, উপেন ব্যানার্জি রোড, কালীঘাট রোড, নকুলেশ্বর ভট্টাচার্য লেন, টালিগঞ্জ রোড, ডিসি দে রোড, এস রায় রোড, কেপি রায় লেন, এমজি রোডের ব্যাঙ্কের মাঠ, ৬ মহেন্দ্র চ্যাটার্জী লেন, গড়িয়ার আতাবাগান, ৫৩ কলেজ স্ট্রিট, বৈঠকখানা রোড, সাউদার্ন এভিনিউ এবং লেক প্লেস ক্রসিংয়ের KMC আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টারগুলি থেকে কেভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন।
এছাড়াও, এমআর বাঙ্গুর, SSKM, কলকাতা মেডিকেল কলেজ, চিত্তরঞ্জন সেবা সদন ও শিশু সদন হাসপাতাল, বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, মানিকতলা ESI হাসপাতাল, জোকা ESI হাসপাতাল, নীল রতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল, সম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল এবং বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে কেভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন কলকাতা পুরসভা এলাকার বাসিন্দারা।