গ্রীষ্মকালটা বরাবরই বিয়ার প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির কাছে লাভজনক। কারণ ওই সময় বিক্রি বারে বিয়ারের। ভারতেও ফের আসতে চলেছে গরমের মরশুম। কিন্তু, এবার খুব একটা খুশি নয় বিয়ার সংস্থাগুলি। যার প্রধান কারণ হল রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট (Russia Ukraine Conflict)।
বিয়ার তৈরিকে বার্লির ব্যবহার হয়
আসলে গম ও বার্লি উৎপাদনে অন্যতম প্রধান দেশ হল রাশিয়া এবং ইউক্রেন। গমের ক্ষেত্রে রাশিয়া বিশ্বে প্রথম নির্ণায়ক হলে, চার নম্বরে রয়েছে ইউক্রেন। গোটা পৃথিবীতে গম রফতানির ২৫ শতাংশই করে থাকে এই দুই দেশ। পাশাপাশি বার্লির ক্ষেত্রেও এই দুই দেশ বিশ্বের প্রথম ৫ রফতানিকারক দেশের মধ্যে রয়েছে। আর বিয়ার তৈরিতে বার্লি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এছাড়া বিয়ার তৈরিতে গমেরও প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রের রাশিও ও ইউত্রেনের এই সংকটের মাঝে গম ও বার্লির চাহিদা পূরণ নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে বিয়ার সংস্থাগুলি।
কোনও কোনও জায়গায় সরকার দাম নির্ধারণ করে
ইটির একটি রিপোর্টে বিয়ার সংস্থা Bira91-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অঙ্কুর জৈনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেনের এই উত্তেজনা বিয়ার শিল্পের মার্জিন কমাতে পারে। তিনি বলেন, 'বার্লির দাম আগেই বেড়েছে। ইউক্রেন অবশ্যই স্বল্প ও মাঝারি মেয়াদে বিশ্বব্যাপী বার্লির দামের উপর প্রভাব ফেলবে। এখন দেখার এর প্রভাবে বিয়ার সংস্থাগুলি দ্রুত দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় কিনা। কিছু ক্ষেত্রে তো দাম সরকারের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।'
আগের দুটো বছর মন্দা গিয়েছে
বিয়ার ক্যাফের কো-ফাউন্ডার রাহুল সিং কার্যত জানাচ্ছেন, করোনা, লকডাউন ও অন্যান্য বিধিনিষেধের কারণে গত দুটো বছর মন্দাই গিয়েছে। আর এবার রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট নতুন অপ্রত্যাশিতভাবে ধাক্কা দিয়েছে। পাশাপাশি কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান অ্যালকোহলিক বেভারেজ কোম্পানিজের ডিরেক্টর জেনারেল বিনোদ গিরিও এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ক্রমাগত পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বর্তমন সংকট যদি বাড়তে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে তা চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে।
স্থানীয় ক্রেতাদেরও লোকসান
মতিলাল ওসওয়ালের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, যাঁরা স্থানীয়ভাবে কেনেন, তাঁদের ওপরেও এর প্রভাব পড়বে। রিপোর্টে বলা হয়েছে এই সংকটের কারণে বিশ্বব্যাপী বার্লির রফতানি বাধাপ্রাপ্ত হবে। বিশ্ববাজারে এর দামও বাড়বে। আর এমনটা হতে খুব স্বাভাবিকভাবে ভারতেও দাম বাড়বে। যদি বাস্তবেই তেমনটা হয় তাহলে, বিয়ার (Beer) সংস্থাগুলি খরচ বৃদ্ধির কারণে কম মার্জিনের সম্মুখীন হতে পারে।
বিয়ার সংস্থাগুলির জন্য বিশেষ মাস
ভারতে মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত ৪০-৪৫ শতাংশ বিয়ার বিক্রি হয়। বিয়ার সংস্থাগুলির অনুমান ছিন পরপর ২টি বছর মন্দা যাওয়ার পর এবার তাদের বিক্রি ৪০ শতাং বাড়তে পারে। করোনার কারণে গত ২ বছর ক্লাব, বার, পাবগুলিও বন্ধ ছিল। এমনকি ২০২০ সালে সারা দেশে লকডাউনের সময় প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি হাজার হাজার লিটার বিয়ার নর্দমায় ফেলে দিতেও বাধ্য হয়েছিল। সেক্ষেত্রে দেখার এবার পরিস্থিতি কোন দিকে যায়।
আরও পড়ুন - হানিমুনে গিয়ে স্বামীর ফোনটায় চোখ রাখতেই সব ফাঁস! বাকিটা...