করোনা মহামারীর জেরে বন্ধ স্কুলে ডেরা বেঁধেছে ময়ুরের ঝাঁক। আর তাই দীর্ঘ প্রায় দুই বছর বাদে স্কুল খুলতেই ছাত্র-ছাত্রীদের সাথেই স্কুলে, ক্লাস রুমে ঘুরে বেড়াচ্ছে ময়ুরের দলটি।
আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন শালকুমারহাট হাইস্কুলে গেলেই ময়ূর ও ছাত্র-ছাত্রীদের সহাবস্থানের এই দৃশ্য চোখে পড়ছে আম জনতার।
গত দুদিন ধরেই ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে একই সাথে ক্লাস রুমে শিক্ষকের থেকে শিক্ষা গ্রহন করছে দেশের জাতীয় পাখিদের ঝাঁক।
মানুষের উপস্থিতিতেও কোন ভয়ডর নেই তাঁদের।
ময়ূরের ঝাঁক দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে স্কুলের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে। পরিবেশপ্রেমীরাও চমৎকৃত ময়ুরের এহেন আচরণে। সাধারণত মানুষের সংস্পর্শে তারা দূরে সরে যায়।
হিমালয়ান নেচার এন্ড এ্যডভেঞ্চারে ফাউন্ডেশনের কো-অর্ডিনেটর পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসু বলেন ওই স্কুলটি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সামনে থাকায় ওই স্কুলের শান্ত ও নীরব পরিবেশে ময়ূরের ঝাঁক তাদের নিশ্চিন্ত ডেরা বানিয়েছে।
কারণ করোনা মহামারীতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ওই স্কুলটি প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিলো।আর সে কারণেই বন্ধ ওই স্কুলের পরিবেশ ময়ূরের ঝাঁকের পছন্দ হয়েছে।
এদিকে স্কুলে এসে ময়ূরের দেখা মেলায় উৎফুল্ল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকা সকলেই। এই স্কুলের উত্তরদিকে সাত কিলোমিটার এবং পশ্চিম দিকে চার কিলোমিটার দূরেই রয়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান।
বনদপ্তরের বক্তব্য জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান থেকে ময়ূরের এই দলটি এই স্কুলে এসে ডেরা বেঁধেছে। তবে স্কুল থেকে জঙ্গল দূরে হলেও শালকুমারহাট এলাকাটি ঘন জনবসতিপূর্ণ।
তাই অনেকের প্রশ্ন স্কুল বন্ধ থাকলেও জনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় ময়ূরের ঝাঁক কী ভাবে ডেরা বাঁধলো। স্কুলে ময়ূরের ঝাঁকের সাথে ক্লাস করে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত স্কুলের ছাত্রী রেশমা,কোয়েল, সোমা, মৌসুমিরা।
নবম শ্রেণির ছাত্রী মৌসুমি কিংবা এগারো ক্লাসের রেশমা বলে আমাদের জীবনে এই ঘটনা স্মৃতি হয়ে থাকবে।আমাদের সাথে জাতীয় এই পাখির বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।আমাদের স্কুল থেকে ওরা চলে গেলে খুব খারাপ লাগবে। আমরা চাই ওরা আমাদের স্কুলেই থাকুক।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জন রায় বলেন স্কুলে দুদিন ধরেই ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে ময়ূরের এই দলটি রয়েছে।ওদের কেউ ক্ষতি করছে না স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাই ওদের নজরে রেখেছে।