এবার ট্রেনের করে ডুয়ার্স সফর এবার হতে চলছে আরও বেশি রোমাঞ্চকর। কারণ ট্রেনের জানালা দিয়ে চাক্ষুষ করা যাবে ডুয়ার্সের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
তবে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, ঘন অভয়ারণ্যে নজর করলে হঠাৎ দেখা মিলতে পারে বন্যদেরও। শনিবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ভিস্তা ডোম কোচ নিয়ে পথ চলা শুরু করবে টুরিস্ট স্পেশাল।
পুজোর আগে এই পরিষেবা পর্যটকদের বিশেষ উপহার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের। যদিও পরিষেবা শুরু হবার আগেই টিকিট সম্পূর্ণ শেষ। এখন শুধু ট্রেনের জানালা দিয়ে ডুয়ার্সের প্রকৃতির ও ঘন অভয়ারণ্য নজরবন্দি করা সময়ের অপেক্ষায় পর্যটকরা।
উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স কিংবা পাহাড় বরাবরই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। এতদিন পর্যন্ত ডুয়ার্সে যেতে হলে ট্রেন কিংবা বাসে করে ডুয়ার্সে পৌঁছে গাড়ি করে সাইট সিন করতে হতো।
তবে শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্স যাওয়ার পথে ডুয়ার্সের যে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং অভয়ারণ্যের মধ্যে দিয়ে ট্রেন সাফারির যে আনন্দ তা থেকে ব্রাত্য ছিল পর্যটকরা।
আর তাই ট্রেনে করে ডুয়ার্স সফরকে এবার আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে চলছে ভারতীয় রেল। মুম্বই থেকে পুনে রুটের মতন এবার শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্স যাওয়ার রুটেও শুরু হতে চলেছে এই ভিস্তাডোম কোচ।
শনিবার থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেসের দুটি বাতানুকুলিত কোচ, ২ টি চেয়ারকার ও ১ টি ভিস্তাডোম কোচ নিয়ে যাত্রা শুরু করবে ভিস্তাডোম টুরিস্ট স্পেশাল ট্রেন। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত যাত্রা শুরু করবে এই ট্রেন ।
জানা গেছে এই ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল ৭:২০ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স পার্বত্য ও ঘন অভয়ারণ্যের মধ্যে দিয়ে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত 168 কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করবে। ইতিমধ্যেই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছে গিয়েছে এই কোচ।
শিলিগুড়ি থেকে সেভক, চালসা, মাদারিহাট, রাজা ভাত খাওয়া স্টেশন হয়ে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত যাবে ট্রেন। এই কোচে থাকা বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে ডুয়ার্সের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারবে যাত্রীরা।
এই কোচে রয়েছে বড়ো জানালা এবং ছাদও রয়েছে কাঁচের। 44 টি করে উন্নতমানের বসার সিট রয়েছে এবং 360 ডিগ্রি ঘুরতে পারবে সিটগুলি। যাতে সেখানে থাকা যাত্রীরা পরিবেশের সৌন্দর্য স্বাচ্ছন্দে উপভোগ করতে পারে।
মাথা পিছু ভাড়া ঠিক করা হয়েছে 770 টাকা করে। 30 কিলোমিটার গতিতে চলবে এই ট্রেন পাশাপাশি পর্যটকদের মনরঞ্জনেরও ব্যবস্থা থাকবে এই যাত্রায়। এই কোচের ভেতরে রয়েছে আধুনিক ওয়াই ফাই পরিষেবা, ডিজিটাল ডিসপ্লে স্ক্রিন, মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট সহ বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যেক সপ্তাহে শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার, এই তিন দিন ছুটবে ট্রেন।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের DRM দিলীপ কুমার জানান, পর্যটকদের মনরঞ্জনের জন্য হাসিমারা ও চালসা দুটো স্টেশনে লোকনৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই প্রথম যাত্রার জন্য সম্পুর্ন সিট বুকিং হয়ে গিয়েছে, এবং পরের সপ্তাহের জন্য প্রায় 50 শতাংশ বুকিং হয়ে গিয়েছে। এই কোচ পর্যটকদের উত্তরপূর্বের পর্যটনকেন্দ্র গুলির দিকে আরো আকর্ষণ বাড়াবে বলে আশাবাদী রেল দপ্তর।
ছবি- জয়দীপ বাগ ও অসীম দত্ত