ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে একদিনের কর্মবিরতি পালন করল পাহাড়-এর গাড়ি চালকরা। ফলে গাড়ির অভাবে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ও জংশন বাস টার্মিনাসে নেমে পাহাড়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি না পেয়ে চরম সমস্যায় পড়ে পর্যটকরা। অন্যদিকে এদিনের এই বৈঠকে স্থির করা হবে চালকদের আগামীদিনের কর্মসূচি। সব মিলিয়ে ভরা পর্যটন মরশুমে পর্যটকরা যাতে সমস্যায় না পড়ে গাড়ি চালকদের কাছে আবেদন পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠনের।
উত্তরবঙ্গ-এর পাহাড় বলতে বরাবরই পর্যটকদের প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে দার্জিলিং। উত্তরবঙ্গে আসা পর্যটকদের শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমে পাহাড়ে যাওয়ার জন্য ছোটো গাড়ি ধরতে হয়।
জানা গিয়েছে গাড়ি চালকদের সংগঠনের এই সম্মেলন থেকে তাদের আগামীদিনের কর্মসূচি কি হবে তা স্থির করা হবে। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে ২০১২ সালে রাজ্য সরকারের তরফে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার এই যাত্রা পথের ভাড়া বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ১৩০ টাকা।
জানা গিয়েছে সেই সময় ডিজেলের দাম ছিল প্রায় ৫০ এর কাছাকছি। তবে বর্তমানে ডিজেলের দাম প্রায় ১০০ ছুঁই ছুঁই । তবে আজও সেই ২০১২ সালের ভাড়া নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে চালকদের।
তবে বর্তমানে গাড়ি চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া চাইলেও পুলিশ জরিমানা করছে। ফলে রাজ্য সরকার ভাড়া না বাড়ানোয় লোকসানে চালকরা। চালকদের দাবি শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত যাত্রিপিছু ভাড়া করা হোক ২৫০ টাকা করা হোক।
এই নিয়ে সোমবার শিলিগুড়ির দাগাপুরে তরাই চালক সংগঠনের ব্যবস্থাপনায় এক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে গাড়িচালকদের নিয়ে। এই সম্মেলন থেকেই চালকদের আগামীদিনেরকি পদক্ষেপ হবে তা স্থির করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এদিন সংবাদ মাধ্যমের তরাই চালক সংগঠনের সভাপতি দীপেন থাপা বলেন, করোনার কারনে দীর্ঘদিন গাড়ি বন্ধ ছিল তার ওপর রাজ্য সরকার দার্জিলিংয়ের জন্য ২০১২ সালে যে ভাড়া বেঁধে দিয়েছিল তাই নিয়ে আজও চলতে হচ্ছে।
ডিজেলের দাম বাড়লেও ভাড়া বাড়েনি । তার ওপর বেড়েছে গাড়ির সরঞ্জামের দাম। ফলে গাড়ির মালিক ও চাকদের আজ চরম খারাপ অবস্থা। রাজ্য সরকারের বিষয়টি দেখা উচিৎ।
সংগঠনের সম্পাদক মাহবুব খান বলেন, একদিকে ডিজেলের দাম বাড়লেও বাড়েনি ভাড়া। ওপর সরকারি বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ায় কমেছে যাত্রীসংখ্যা যার, ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চালকদের।
চালকদের একদিনের এই সম্মেলনে যোগদানের জেরে রাস্তায় দার্জিলিং এর জন্য গাড়ি না থাকায় শিলিগুড়ি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ও জংশন স্টেশনে ভিন রাজ্য থেকে পর্যটকরা এসে হয়রানির শিকার হয়। তবে অধিকাংশ পর্যটকরা এদিন সরকারি বাস ধরে রওনা দেয় দার্জিলিংয়ে।
এই প্রসঙ্গে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন হিমালায়ান হসপিটালিটি এন্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, চালকদের দাবি দাওয়া কে তারা সমর্থন করেন। কিন্তু এভাবে গাড়ি বন্ধ রাখা উচিত না। তিনি বলেছেন পর্যটকদের যাতে সমস্যা না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। তবে গাড়িচালকদের এই দাবিদাবা আলোচনার টেবিলে বসে সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে।