পুজোতে এবার লম্বা ছুটি সরকারি চাকুরেদের জন্য। আর সময়ও বেশি নেই। মাঝে মাত্র একটি মাস। পাহাড়ে ভিড় উপচে পড়ার আশা। ইতিমধ্য়েই কালীপুজো পর্যন্ত বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ ডুয়ার্সে বুকিং তেমন নেই।
প্রতিবার এই সময়ে ডুয়ার্সে বুকিংয়ে চাহিদা অনেক বেশি থাকে। কিন্তু এবার পর্যটকরা খানিকটা বিমুখ। ডুয়ার্স হোটেল-রিসর্ট সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৩৫ শতাংশ রিসর্ট এখনও ফাঁকা।
কিন্তু এবার কেন এমন পরিস্থিতি? আসলে ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলি সব তিন মাস পর্যন্ত বুক। কালীপুজোর পরও টিকিট নেই। ফলে নতুন করে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।
ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশের মতে, পুজোর আগে বাড়তি ট্রেন ঘোষণা না করায় পর্যটকরা ডুয়ার্সে রিসর্ট বুক করার ঝুঁকি নিচ্ছেন না। ফলে লাটাগুড়ি, ধূপঝোরা, মূর্তি, পানঝোরা, থেকে শুরু করে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা, মাদারিহাট, বীরপাড়া, কালচিনি- সব জায়গাতেই পুজোর সময়ে রিসর্টের ঘর খালি রয়েছে।
আসলে পাহাড়ের টান বেশি। বরাবরই দার্জিলিং পর্যটকদের পয়লা নম্বর পছন্দ। আরামদায়ক আবহাওয়া তো রয়েইছে, সঙ্গে টয়ট্রেনের আকর্ষণ বাড়তি অনুঘটকের কাজ করে। তাই প্রথমে পাহাড়ে ঘোরা কনফার্ম করেন পর্যটকরা।
ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড টুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের (EHTTOA) সম্পাদক দেবাশিস মৈত্র বলেন, পাহাড়ে টয়ট্রেন, রোপওয়ে, প্যারা-গ্লাইডারের মতো অ্যামিউজমেন্টের সুযোগ রয়েছে, পাশাপাশি উষ্ণ এলাকা থেকে আসলে সবাই মনোরম আবহাওয়া চান। তাই পাহাড় আগেই বুকিং হয়ে যায়। পরে মানুষ ডুয়ার্সে আসার সুযোগ খোঁজে। ট্রেনে টিকিট মিললে আরও বুকিং হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (HHTDN) এর অ্যাডভাইজার তাপসসাধন রায় জানান, পাহাড়ে অনেক আগে থেকেই বুকিং হয়। বিদেশি পর্যটকদের পয়লা পছন্দের ডেস্টিনেশন দার্জিলিং-গ্যাংটক-কালিম্পং-মিরিক-কার্শিয়াং। সেখানে জায়গা না পেলে তারপর ডুয়ার্স-তরাইয়ের দিকে ঝোঁকেন পর্যটকরা।
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু কলকাতা বা হাওড়া থেকে ট্রেনের টিকিট পাচ্ছেন না বলে জানাচ্ছেন পর্যটকদের অনেকেই। ফলে আসতে চাইলেও উপায় নেই। এখন প্রশ্ন বাড়তি ট্রেন মিলবে কি না।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে অবশ্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, পুজোর সময় রেলের তরফে স্পেশাল ট্রেন দেওয়া হবে। ২ জোড়া ট্রেন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাড়তি ট্রেন দিলে কিছু বুকিং বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। সেই আশাতেই রয়েছেন পর্যটক ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে কবে থেকে ট্রেন চালু হবে তা এখনও জানা যায়নি। ফলে বুকিংও হচ্ছে না।
পর্যটন সার্কিটের কারও কারও আশা, সেপ্টেম্বেরের ১৫ তারিখ থেকে মান্ডেটরি ক্লোজডাউন কাটিয়ে রাজ্যের সমস্ত জঙ্গল খুলে যাবে। তারপর কিছুটা বুকিং চালু হতে পারে। মহালয়া থেকে ডুয়ার্সের বুকিং শুরু হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।