একদিকে ইয়াস আর অন্য়দিকে ভরা কোটাল। জোড়া ফলার সাইড এফেক্টে জেরবার সুন্দরবন। নদীর জল বাড়ছে হুহু করে।
একের পর এক গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কোথাও হাঁটু জল, আবার কোথাও কোমর জল। বাড়ি ঘর সব জলের নিচে।
গ্রামের পর গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আশ্রয়ের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন দুর্গতরা। আশ্রয়হীন হয়ে ভেসে যাচ্ছে হরিণও। কোথাও বাঘ ভেসে আসার খবরও মিলেছে।
সোনাগাঁ, দয়াপুর, দুলকি, ঝিঙাখালি এলাকায় থেকে মোট চারটি হরিণ গ্রামবাসীরা উদ্ধার করেন। তারাই হরিণগুলোর পরিচর্যায় এগিয়ে আসেন।
বৃহস্পতিবারও জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে উপকূলবর্তী বহু গ্রামের গবাদি পশু। মানুষ কোনও মতে খাট-চৌকির উপর বাড়ির জিনিসপত্র উঠিয়ে রক্ষা করছে।
সব এলাকাতেই জল ঢুকলেও গোসাবা ব্লকে সবচেয়ে বেশি দুর্গতির শিকার হতে হয়েছে। মাতলা, বিদ্যাধরী, গোসাবা সহ একাধিক নদীর জল উপচে পড়ে জীবন দূর্বিষহ করে তুলেছে মানুষের।
অন্যদিকে মোট ২৬ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙেছে এলাকায়। যার মধ্যে ১০ কিলোমিটার বাঁধ একেবারে মুছে গিয়েছে। ফলে আপাতত জল বের হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
পুকুরের মাছ, খেতের ফসল সমস্তই জলের তলায়। ফলে এগুলি পুনরুদ্ধার করার কোনও উপায় নেই। প্রশাসনিক তৎপরতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও এই প্রবল জলে কোনও রকম সাহায্য করার উপায় নেই বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
এদিনও বেশ কিছু বন্যপ্রাণ ভেসে যাওয়ার খবর রয়েছে। যদিও বন দফতর তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, জঙ্গলের ফেন্সিং দেওয়া রয়েছে। তা টপকে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যদিও গ্রামীণ বিভিন্ন এলাকা থেকে একাধিক হরিণ উদ্ধার করে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
গোসাবা ছাড়াও সাগর, ডায়মন্ডহারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা, সুন্দরবন এলাকাতেও জল ঢুকেছে। বিভিন্ন নীচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। তবে গোসাবার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ।
তার উপর বুধবার থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে একাধিক এলাকা। ফলে যন্ত্রণা আরও বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
বুধবার ঝড়ের পর জল ঢুকেছিল। এদিন ভরা কোটালেও ফের নতুন করে জল ঢুকেছে। ফলে জল বের হওয়ার বদলে নতুন করে জলমগ্ন হয়ে রয়েছে।
এলাকায় ত্রাণ পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। তবে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফেও ত্রাণ পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে।