দু'জনেই ছিলেন সরকারি কর্মচারী। অবসরের পর নিশ্চিন্তে জীবন কাটাবেন এমন পরিকল্পনাই ছিল। আর্থিক অসাচ্ছন্দ্যও সেই অর্থে ছিল না। তারপরও সত্তোরর্ধ্ব বৃদ্ধ দম্পতির আত্মহত্যা! এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হুগলির কোন্নগরে। এখানকার এস সি চ্যাটার্জি স্ট্রিটের দোতলা বাড়িতে রবিববার সকালে বৃদ্ধ দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। কী কারণে ৭২ বছরের দীপক সরকার ও তাঁর স্ত্রী ৭০ বছরের ভবানী সরকার এমন চরম পথ বেছে নিলেন তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না প্রতিবেশীরা।
জানা যাচ্ছে দীপক সরকার ও ভাবনী দেবীর এক ছেলে রয়েছেন, যাঁর নাম দিব্যেন্দু সরকার। পড়াশোনায় ভাল দিব্যেন্দু উচ্চশিক্ষিত হলেও মনমত চাকরি পাননি। তাই ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলের ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু লকডাউনে সেই ব্যবসা লাটে ওঠে। এরপরেই হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু করেন দিব্যেন্দু। কিন্তু প্রাক্তন সরকারি কর্মচারী দম্পতির ছেলের এই ব্যবসা পছন্দ ছিল না। তাই থেকেই দু'জনে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন বলে মনে করছে পুলিশ। সেই কারণেই বৃদ্ধ দম্পতি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন এমন ধারণাই করা হচ্ছে।
দোতলার বারান্দায় মেলে ভবানীদেবীর দেহ। দীপকবাবুর দেহ ছিল ঘরে। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সকালে ওই দম্পতির ছেলে দিব্যেন্দু সরকার তাঁদের খবর দেন। দেহ দুটি ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। বৃদ্ধ দম্পতির ছেলে দিব্যেন্দু জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে তিনি বিয়ে করেন। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি লেগেই থাকত। শেষপর্যন্ত স্ত্রী ছেড়ে চলে যান। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। পারিবারিক সঙ্কটের কারণেই বৃদ্ধ দম্পতি শেষপর্যন্ত আত্মহত্যার মত চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশের। তবে এর পেছনে অন্য সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না উত্তরপাড়া থানা। সেই কারণে ছেলে দিব্যেন্দুর সঙ্গে সরকার পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।