scorecardresearch
 

'বুড়ো নেতা জ্ঞান দিচ্ছেন,' অভিষেকের নেতৃত্বেই আস্থা মদনের

Kalyan on Abhishek: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন কল্যাণ। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পাশে দাঁড়িয়ে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদকে নিশানা মদনের।

Advertisement
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্র। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্র।
হাইলাইটস
  • নাম না করে কল্যাণকে নিশানা মদনের।
  • আস্থা অভিষেকের নেতৃত্বে।
  • কল্যাণকে ঘরশত্রু বিভীষণ খোঁচা অপরূপার।

নাম না করে এবার কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়কে তোপ দাগলেন মদন মিত্র। তাঁর কটাক্ষ, কয়েকজন বুড়ো নেতা রাতারাতি খুব জ্ঞান দিচ্ছেন। এই সমস্ত নেতা মার খাওয়ার সময় ছিলেন না। সেই সঙ্গে পুরভোটের আগে এই ধরনের বিতর্কের সময়জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কামারহাটির বিধায়ক। 

শুক্রবার বনগাঁয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মদন মিত্র বলেন "তৃণমূল আমার আঁতুড়ঘর। দল যদি আমাকে বলে বাথরুমে গিয়ে বসতে বলে, আমি সেখানেও রাজি। তৃণমূল আমাকে যেখানে বলবে সেখানেই বসব। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসে থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিএনএ টেস্ট করবে, আমি মদন মিত্র তা বরদাস্ত করব না।"  

মমতাই তাঁর নেত্রী। অভিষেককে নেতা হিসেবে মানেন না বলে কার্যত জানিয়ে দিয়েছেন কল্যাণ। এ দিন নাম না করে মদন বলেন,''কয়েকজন বুড়ো নেতা রাতারাতি খুব জ্ঞান দিচ্ছেন। এ সমস্ত নেতা মার খাওয়ার সময় ছিলেন না। শুভেন্দুর পর্বে তারা দলকে বিপাকে ফেলে দিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মনে করেন এমন লোকদের তিনি দায়িত্ব দেবেন তিনি দিতেই পারেন। কারণ দলটা তাঁর।''তাঁর সংযোজন,''তৃণমূলকে আমরা অখিলেশ যাদব বা তেজস্বী যাদবের পার্টি হতে দেব না।" 

মদন জানান,''আজ আমি তৃণমূল করি বলে এত লোক আমার সঙ্গে আছে। যেদিন আমার গা থেকে তৃণমূলের ঝান্ডাটা, পোশাকটা সরিয়ে দেয়া হবে, সেদিন রাস্তায় কোনও দোকানে বিড়ি, সিগারেট চাইলেও আমাকে কেউ ধার দেবে না। আমি শুভেন্দু অধিকারী নই। আমার নাম মদন মিত্র। আমি এক আনা নিলে ষোল আনা ফেরত দিই। আমি মমতার সঙ্গে ছিলাম, এখনও আছি। কিন্তু কিছু দালাল, কিছু কালকেউটে তৃণমূলে ঢুকে পড়েছে। এদের বিষ বন্ধ করতে হবে। এর জন্য দল আমাকে সাসপেন্ড করতে পারে। আমি তার জন্য তৈরি আছি।"

Advertisement

অভিষেকের নেতৃত্বও যে তিনি মেনে নিয়েছেন তা-ও স্পষ্ট করে দেন মদন। তিনি বলেন,''আমি মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে আছি। অভিষেককে আরও শক্তি জোগাতে চাই। আজকের লড়াইয়ের অর্জুন অভিষেক। ওঁর রথের সওয়ারি মমতা।'' পুরভোটের আগে কল্যাণের বেফাঁস মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মদন। তাঁর কথায়,''এই এত আলোচনা, এত বিরোধিতা আগে ছিল না। ঠিক যখন পুরভোটে প্রার্থী দিতে পারছে না বিজেপি ও সিপিএম, ২৪-র জন্য তৈরি হচ্ছি আমরা, তখনই এসব হচ্ছে। অভিষেককে চিনি। খুব পরিণত নেতা।''

অপরূপার নিশানায় কল্যাণ

কল্যাণেকে 'ঘর শত্রু বিভীষণ' কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তিনি বলেন,''উনি সাধারণ সম্পাদকের বিষয়ে এমন মন্তব্য করেছেন, যা ঠিক নয়। প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করে ঠিক কী করতে চাইছেন উনি, পুরোটাই মানুষের সামনে। ওঁকে ঘরশত্রু বিভীষণ ছাড়া কী বলব?''

তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব!

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকের পর অভিষেক বলেছিলেন,''এখন মেলা, খেলা, ভোট সব বন্ধ রাখা উচিত। দু'মাস সব বন্ধ রাখা উচিত। মানুষ বাঁচলে আমরা বাঁচব। এটা আমার ব্যক্তিগত মত।''

আরও পড়ুন- অভিষেক ইস্যুতে কল্যাণ VS কুণাল! TMC-র অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

ওই মন্তব্য মমতা সরকারের বিরুদ্ধাচরণ হিসেবে দেখেছেন কল্য়াণ। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেছেন,''দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ সর্বক্ষণের। এই পদে থেকে কারও ব্যক্তিগত কোনও মত থাকতে পারে না। অনেক বিষয়ে আমারও ব্যক্তিগত মত আছে। দলীয় শৃঙ্খলার কারণেই তা প্রকাশ্যে বলা যায় না। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধাচারণ। এভাবে রাজ্য সরকারকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।''

এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষ প্রতিক্রিয়া দেন,''দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই স্থান অভিষেকের। দলের সাধারণ সৈনিক হিসেবে তাঁর কথা আমাদের চুপ করে শোনা উচিত। সাধারণ সম্পাদক একটা কথা বলেছেন। সেটাই দলের মত। কল্যাণ কখন বলেছে, সন্ধের আগে না পরে, সেটা দেখতে হবে।''

আরও পড়ুন-পুরভোট-সিদ্ধান্ত নিতে হবে কমিশনকেই, নির্দেশ হাইকোর্টের 
  
তৃণমূল সূত্রের খবর, কল্যাণ ও কুণালের বিতণ্ডার খবর পৌঁছয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে। বিবাদ মেটানোর দায়িত্ব মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে দেন তৃণমূল নেত্রী। বার্তা দেওয়া হয়, ক্ষোভ-বিক্ষোভ সরাসরি নেত্রীকেই বলতে হবে। তাতে বরফ গলেছে। বিষয়টি যে মিটমিট হয়ে গিয়েছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে কুণালের টুইটে। তিনি লিখেছেন,''অধ্যায়ের সমাপ্তি।''

আরও পড়ুন- রাজ্য়ে পরীক্ষা কমায় কমল Covid সংক্রমণ, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

Advertisement