Nancy Pelosi Taiwan Visit: মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে পৌঁছতেই বিশ্বে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। মনে হচ্ছে আরও একটি যুদ্ধের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। ন্যান্সি পেলোসির এই সফরে হতবাক চীন।
তারা হুমকি দিচ্ছে যে এখন আমেরিকা ও তাইওয়ানের স্বাধীনতার দাবিদার ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলোকে’ মূল্য দিতে হবে। এই অবস্থায় বিশ্বের সামনে আরেকটি যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
চিনের হুমকির মধ্যে তাইওয়ানে পৌঁছেছেন মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তাঁর বিমান তাইপেই বিমানবন্দরে অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে চিন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। চিনের বিদেশ মন্ত্রক তার বিবৃতিতে বলেছে যে আমেরিকা একটি বিপজ্জনক জুয়া খেলছে এবং এখন এর ভয়াবহ পরিণতির দায়ভার আমেরিকাকেই নিতে হবে।
চিনের লগাতার বিরোধিতা
চিন ক্রমাগত ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের বিরোধিতা করে আসছিল। চিন বলেছে যে আমেরিকা এখন পর্যন্ত 'ওয়ান চায়না (এক চিন)' নীতি অনুসরণ করে আসছে। তাই এখন তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদকে সমর্থন করা আমেরিকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার শামিল।
বিবৃতি দিল
তাইওয়ানে পৌঁছে ন্যান্সি পেলোসি এবং কংগ্রেস প্রতিনিধিদলের একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে লেখা রয়েছে যে ২৫ বছরের মধ্যে এটিই প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের সফর।
বিবৃতিতে লেখা আছে যে তিনি তাইওয়ানের প্রাণবন্ত গণতন্ত্রকে সমর্থন করেন। বিবৃতিতে আরও লেখা হয়েছে যে এই সফরটি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সীমান্ত সফরের অংশ মাত্র। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানও এর অংশ।
ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই সতর্ক হয়ে গেছে চিন। সেখানে সিভিল ডিফেন্সের শঙ্কা বাজছে। চিন বলেছে যে তাদের এবং আমেরিকার মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি হল এক চিন নীতি।
এমন পরিস্থিতিতে চিন 'তাইওয়ানের স্বাধীনতা'র দিকে নেওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী পদক্ষেপের বিরোধিতা করে। চিন বিশ্বাস করে যে আমেরিকা বা বাইরের কোনও ব্যক্তির এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
আরও পড়ুন: দেদার AC, ফ্রিজ, কুলার চালানোর পরও আসবে কম বিল, দেখে নিন উপায়
আরও পড়ুন: ইনভেস্টরদের এক বছরে ডবলেরও বেশি টাকা রিটার্ন করেছে এই স্টক
আরও পড়ুন: ভাড়া দেখাবে, আয় বাড়াবে মেট্রোর ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড
চিন ও তাইওয়ানের মধ্যে যুদ্ধ কি নিয়ে?
তাইওয়ান ও চিনের মধ্যে যুদ্ধ অনেক পুরনো। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট পার্টি গৃহযুদ্ধে জয়লাভ করে। এরপর থেকে দুই অংশ নিজেদেরকে এক দেশ মনে করলেও কোন সরকার জাতীয় নেতৃত্ব দেবে, তা নিয়ে বিরোধ রয়েছে।
চিন তাইওয়ানকে তার প্রদেশ মনে করে। আর তাইওয়ান নিজেকে একটি স্বাধীন দেশ বলে মনে করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই দু'জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই সময় চিনের মূল ভূখণ্ডে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি এবং কুওমিনতাঙের মধ্যে যুদ্ধ চলছিল।
১৯৪০ সালে মাও সেতুং এর নেতৃত্বে কমিউনিস্টরা কুওমিনতাং পার্টিকে পরাজিত করে। পরাজয়ের পর কুওমিনতাঙের লোকেরা তাইওয়ানে আসে। একই বছর চিনের নামকরণ করা হয় 'পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না' এবং তাইওয়ানের 'রিপাবলিক অফ চায়না'।
চিন তাইওয়ানকে তার প্রদেশ মনে করে। এবং বিশ্বাস করে যে একদিন তাইওয়ান এর অংশ হবে। একই সময়ে তাইওয়ান নিজেকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব সংবিধান রয়েছে এবং একটি নির্বাচিত সরকার রয়েছে।
তাইওয়ান চিনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরে একটি দ্বীপ। চিন ও তাইওয়ান দুটোই একে অপরকে মান্যতা দেয় না। বর্তমানে, বিশ্বের মাত্র ১৩টি দেশ তাইওয়ানকে একটি পৃথক সার্বভৌম এবং স্বাধীন দেশ বলে মনে করে।