লকডাউন ও বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে গত মাসে শুরু হয়েছে বাংলা ধারাবাহিকগুলির শ্যুটিং। সমস্ত চ্যানেলগুলিই চেষ্টা করছে ধারাবাহিকগুলিতে বিশেষ কিছু পর্বের মাধ্যমে দর্শকদের মনোরঞ্জন করার। স্টার জলসায় একই সঙ্গে আসছে তিন ধারাবাহিক - 'ধুলোকণা' (Dhulokona), 'মন ফাগুন' (Mon Phagun) ও 'শ্রীকৃষ্ণ ভক্ত মীরা' (Sree Krishna Bhakto Meera)। গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে 'ধুলোকণা'। আগামী ২৬ জুলাই থেকে রাত ৮.৩০-এ দেখা যাবে 'মন ফাগুন'। প্রথম ঝলক সামনে আসার পর থেকেই দর্শকদের কৌতূহল ও উৎসাহ একেবারে তুঙ্গে। বলা চলে ঋষিরাজ ও পিহুর সঙ্গে প্রেমের জোয়ারে ভাসতে প্রস্তুত আপামর বাঙালি।
'মন ফাগুন'-এ নবাগতা সৃজলা গুহর (Srijla Guha) সঙ্গে জুটি বাঁধছেন টেলি পাড়ার হার্টথ্রব শন ব্যানার্জি (Sean Banerjee)। সকলের মনে এবার লাগবে ভালোবাসার নতুন রং। একেবারে ভিন্ন রূপে দেখা যাবে শনকে। পারিবারিক ড্রামার পাশাপাশি পুরনো হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলার প্রেমকে কীভাবে খুঁজে পাবে ঋষিরাজ ও পিহু- তা নিয়ে ধারাবাহিকের গল্প এগোবে। অ্যাক্রোপলিস এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায় লক্ষণ ঘোষের পরিচালনায় আসছে এই মেগা সিরিয়াল। শন - সৃজলা ছাড়াও রয়েছে আরও একগুচ্ছ পরিচিত মুখ। অভিনয় করছেন শাশ্বতী গুহঠাকুরতা, বিশ্বনাথ বসু, মল্লিকা মজুমদার, গীতশ্রী রায়, নীল মুখোপাধ্যায়, প্রান্তিক ব্যানার্জি, রব দে সহ আরও অনেকে। অল্প কয়েকদিনের শ্যুটিংয়ের মধ্যেই অভিনেতারা সকলে একটা পরিবারের মতো হয়ে উঠেছেন।
ধারাবাহিকের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। সেই টাইটেল ট্যাকের মাধ্যমেও দর্শকেরা পেতে চলেছেন এক চমক। ইনডোর শ্যুটিং ছাড়াও আন্দুল রাজবাড়ি, ফেয়ারলন, কালিম্পং, কার্শিয়াং সহ উত্তরবঙ্গের আরও বেশ কিছু স্থানকে আউটডোর লোকেশন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে, যেখানে আগে খুব একটা শ্যুটিং হয়নি। এই মুহূর্তে কালিম্পংয়ে চলছে শ্যুটিং।
আরও পড়ুন: নকল বিয়ে, ফুলশয্যা! একই গল্পে টেক্কা 'মিঠাই' ও 'খড়কুটো'-র?
শন ব্যানার্জি জানালেন, "আমি এভাবে ছোট পর্দায় ফিরে আসবো ভাবিনি। সানি দা ও স্নিদ্ধা দি (প্রযোজক) খুব সুন্দর ভাবে গাইড করছেন। আশা করি দর্শকদের খুব ভাল লাগবে এবং 'ঋষিরাজ' চরিত্রটিকে আমি সঠিক মর্যাদা দিতে পারবো। সকলেই খুব পরিশ্রম করছেন। আশা রাখছি ঋষিরাজ- পিহু ছোট পর্দায় আশ্চর্য কিছু করবে।"
সৃজলা গুহর কথায়, "এটা আমার প্রথম কাজ। এর আগে অভিনয় সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। সানি দা ও স্নিদ্ধা দি বুঝিয়ে এই জায়গায় এনেছে। ইউনিটের সকলে খুব সহযোগিতা করছে। একেবারে নতুন একটা কাজ, তাই একই সঙ্গে ভয় লাগছে এবং এক্সাইটেড।" এর আগে উজান- হিয়ার (শন ও অনামিকা) জুটি দর্শকদের মনে এখনও এক অন্য আসনে রয়েছে। সেজন্যে কি কিছুটা ভয় লাগছে? এই প্রশ্নের উত্তরে সৃজলা জানালেন, "সেটা তো অন্য কোনও কো-স্টারের ক্ষেত্রেই হতে পারতো। আমি সব সময় অতীত ভুলে ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ায় বিশ্বাসী। তাই আশা রাখছি দর্শকরা এই জুটিকে ভালোবাসবেন।"
আরও পড়ুন: একই সময় দুই চ্যানেলে মেগা রোহন- সৃজলার! TRP বিবাদ কি সম্পর্কেও আসবে?
এর আগে আজতক বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে শন ব্যানার্জি জানিয়েছিলেন, "এটা একটা লাভ স্টোরি। এই ধারাবাহিকে একটি পারিবারিক ড্রামাও থাকবে। তবে আমার আর সৃজলার নতুন জুটিকে হাইলাইট করা হবে বেশি। কারণ ঋষিরাজ ও পিহুকে কেন্দ্র করেই এই সিরিয়ালের গল্প। এখানে আমার চরিত্রের নাম ঋষিরাজ, যেটা আমার খুব ভাল লেগেছে। এর আগে আমি যতগুলো কাজ করেছি, আমার মনে হয় এটা সবচেয়ে কুল একটা নাম।"
আরও পড়ুন: 'মিঠাই', 'অপরাজিতা অপু'-র জনপ্রিয়তা ছুঁয়ে TRP বদলাতে পারবে 'ধুলোকণা', 'মন ফাগুন'?
সিরাজ ও ডাঃ উজান চ্যাটার্জীর পরে দর্শকেরা ঋষিরাজকেও ভালবাসা দেবেন বলেই বিশ্বাসী শন। তাঁর কথায়, "এটা উজানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটা চরিত্র। নতুন একটা কাজ করছি বলে আমার এখন সেই টেনশনটা এখন নেই। আশা করি দর্শকেরা এই চরিত্রটিকে কাছের করে নেবেন। আমি শুধু আমার কাজ করে যেতে চাই আর এই চরিত্রটিকেও আইকনিক বানাতে চাই। কারণ টেলি পর্দা আমায় অনেক কিছু দিয়েছে। তাই আমিও চাই আমার ফ্যান ও দর্শকদের রিটার্ন গিফট দিতে এভাবেই। আশা করি এটা সকলের জন্য খুব স্পেশাল হবে।"
আরও পড়ুন: 'অপরাজিত'-র 'পথের পদাবলী'! অনীক দত্তের পরিচালনায় এবার মুখ্য চরিত্রে আবির
'মন ফাগুন'-র সঙ্গে একই সময় জি-বাংলায় চলে 'অপরাজিতা অপু'। যেখানে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন রোহন ভট্টাচার্য (Rohaan Bhattacharya) ও সুস্মিতা দে (Susmita Dey)। এদিকে অনেকেরই অজানা দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্কে রয়েছেন সৃজলা ও রোহন (Srijla - Rohaan Relationship)। একদিকে 'অপরাজিতা অপু' যেমন রেটিং চার্টে যথেষ্ট ভাল পারফরম্যান্স করছে। অন্যদিকে প্রথম ঝলক সামনে আসার পর থেকেই উৎসাহ বাড়িয়েছে 'মন ফাগুন'। উপরি পাওনা হিসাবে এই ধারাবাহিকে রয়েছেন সকলের প্রিয় ডাঃ উজান চ্যাটার্জী। তাহলে কি এবার টিআরপি-র লড়াইয়ে কিছুটা বিরোধ হবে জুটির? অভিনেত্রীর কথায়, "ব্যাক্তিগত জীবন আমি কাজের থেকে একেবারেই আলাদা রাখি। যেখানে সকলে এত পরিশ্রম করছে এখানে, সেখানে টিআরপি, প্রাইম টাইম এই সবকিছু একদমই ভাবনা চিন্তা করার মতো একটা বিষয় না।"