এবার একজোট হচ্ছে কলকাতা। বাংলার সংস্কৃতি, সম্মান ও বাংলাকে বাঁচাতে একত্রিত হবে টলি পাড়া। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার প্রতিবাদেই জড়ো হবেন সকলে। 'গণধর্ষণ', 'খুন'-র মতো শব্দগুলি যেন অহরহ শোনা যাচ্ছে। ক্রমাগত হুমকি পেয়ে রীতিমতো বিধ্বস্ত শিল্পীদের একাংশ। সেই প্রতিবাদেই তাঁরা আজ সোচ্চার হবেন। 'রাতের চেয়ে অন্ধকার' এই পরিস্থিতি কাটিয়ে সুদিনের আশায়, সোমবার সকলে জড়ো হবেন মেট্রো চ্যানেলে, দুপুর ৩ টের সময়ে।
প্রতিবাদী এই সমাবেশের নাম দেওয়া হয়েছে 'এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার!' ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবেন একত্রিত শিল্পী ও কলকাতাবাসীরা। এদিনের পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, এক নারীর চোখ থেকে জল পড়ছে। এছাড়াও এই সভার মূল উদ্দশ্যে ব্যক্ত করা হয়েছে এখানে। উঠে এসেছে বাংলা গর্ব, রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর, মাতঙ্গিনী হাজরা, অমর্ত্য নাম। এখানে বলা হয়েছে, " এই মাটি নারীর সম্মান রক্ষার জন্যে সবার আগে সমস্ত মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, আজও তার অন্যথা হবে না। কোন নারীকে অপমান করা, তাকে ট্রোল করা, তার সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করা বাংলার সংস্কৃতি নয়। আসুন, সবাই বাংলাকে বাঁচাতে, বাংলার সংস্কৃতি বাঁচাতে, বাংলার সম্মান বাঁচাতে সামনে আসি।"
বাংলার শিল্পী জগৎ বিশেষত নারীরা কতটা সুরক্ষিত, তা সম্প্রতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে সকলের। অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ (Sayani Ghosh), দেবলীনা দত্ত (Debleena Dutt) এবং সঙ্গীতশিল্পী পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের (Anindya Chattopadhyay) ঘটনা থেকে। একের পর এক খুন ও গণধর্ষণের মতো হুমকিও পেয়েছেন তাঁরা। ঘটনার সূত্রপাত হয়, সম্প্রতি এক সংবাদ মাধ্যমের টক শোতে মুখ খোলার পরে, তাঁদের ক্রমাগত আসতে থাকে এই ধরনের হুমকি।
মেট্রো চ্যানেলের সামনে প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত থাকবেন মহিলা কমিশনের অধ্যক্ষা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, রাজ চক্রবর্তী, ঋদ্ধি সেনের মত ব্যক্তিত্বরা।
আরও পড়ুন: 'অশালীন' সৌরভ? ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বিতর্ক বাড়ল টলিউডে
মহিলা কমিশনের অধ্যক্ষ ও লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় আজতক বাংলাকে জানালেন, " পরিস্থিতি একদমই ভালো নেই। যে কারণে এতদিন কোনও মিটিং, মিছিল করতে হয়নি। এখন সমাবেশ করতে হচ্ছে। যে ঘটনাটি ঘটেছে, যেভাবে হুমকি দেওয়া বা অশ্রদ্ধা করা হচ্ছে এটাতো বাংলার ঐতিহ্য নয়। এই বাংলায় আমরা বড় হইনি। আর এই বাংলাকে আমরা চিনতেও পারি না। যে বাকস্বাধীনতা রয়েছে সেটা যদি এভাবে নষ্ট হয় এবং তার জন্যে আক্রমণের সম্ভাবনা তৈরি হয় তাহলে তো সেই সময় হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায় না! সেই কারণেই সমাবেশে যাবো। আমরা সকলে একই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছি। আজকে ওঁর হয়েছে, কালকে আমার হতে পারে, পরশু অন্য কারো হতে পারে।"
আরও পড়ুন: 'দাদা আমি সাতে পাঁচে থাকি না'! এবার বেসুরো রুদ্রনীলকে সুবিধাবাদী বলে সরাসরি কটাক্ষ অনিকেতের
প্রতিবাদী সমাবেশের উদ্যোক্তারা মনে করেন, "আজ সময় এসেছে এক নতুন সকালকে আহ্বান করার। যা কিছু অশুভ, অসুন্দর তা প্রত্যাখ্যান করে সত্য সুন্দরকে বরণ করার। আজ সময় এসেছে, ফ্যাসিবাদকে বলার, না বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি, এখানে তোমার কোনও জায়গা নেই।"