Bhoot Chaturdashi & Halloween 2021: প্রায় বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় হ্যালোইন (Halloween)। গত কয়েক বছর ধরে শহুরে ভারতে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এমনকী তারকারও বর্তমানে মেতে ওঠেন হ্যালোইন উদযাপনে। বলা চলে হাল আমলের এটি একটি ট্রেন্ড। পশ্চিমের এই ‘হ্যালোইন’ বা 'হ্যালোউইন' প্রথার সঙ্গে বাঙালির 'ভূত চতুর্দশী' (Bhoot Chaturdashi) অনেকাংশে মিললেও দুটি কিন্তু আলাদা। অনেকেই না জেনে, দুটি একই ভাবেন। আসুন বিস্তারিত জানা যাক...
হ্যালোইন কী? (Halloween's Significance)
হ্যালোইন হল একটি প্রাচীন আর্যদের উৎসব যা ইউরোপীয় দেশ এবং আমেরিকায় ফসল কাটার শেষদিনে উদযাপিত হয়। মূলত ইউরোপ ও আমেরিকাতে উদযাপিত হলেও এখন এশিয়াতেও এটি জাঁকজমক ভাবে উদযাপন করা হয়। বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতেও এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মূলত ৩১ শে অক্টোবর রাত ও ১ নভেম্বর ভোরের মাঝের সময়টাই হ্যালোইন। তাই প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় এই বিশেষ দিন।
এই ভূতুরে উৎসবের ইতিহাস দুই হাজার বছরেরও বেশি প্রাচীন। এই বিশেষ দিনটি কয়েকটি দেশে 'অল সেইন্টস ইভ' নামেও পরিচিত। বেশিরভাগ পশ্চিমী খ্রিস্টান এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা হ্যালোইন উদযাপন করেন। ‘হ্যালোইন’ শব্দের অর্থ 'পবিত্র সন্ধ্যা' এবং এটিকে ‘সমস্ত সাধুদের দিন’ হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়। এদিন সাধু,মহাপুরুষ ও শহীদদের স্মরণ করা হয়। সাধুদের সম্মান জানিয়ে, সেই আত্মার জন্যে প্রার্থনা করা হয় যারা এখনও স্বর্গে পৌঁছাননি।
আরও পড়ুন: দীপাবলিতে কেন পূজিতা হল দেবী লক্ষ্মী? জানুন পৌরাণিক ব্যাখ্যা
হ্যালোইনের ইতিহাস (History of Halloween)
বলা চলে, প্রায় দু’হাজার বছর আগে আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও উত্তর ফ্রান্সের কেল্টিক জাতিরা নভেম্বরের প্রথম দিনটি তাঁদের নববর্ষ হিসাবে পালন করতেন। এই দিনটিকে তাঁরা মনে করতেন, গ্রীষ্মের শেষ ও অন্ধকার বা শীতের শুরু। তাই অক্টোবরের শেষ দিনটিকে সবচেয়ে খারাপ রাত বলতেন এই সমস্ত জায়গায় বসবাসকারীরা। তাঁরা আবার বিশ্বাস করতেন অক্টোবরের শেষ রাতে সমস্ত অতৃপ্ত আত্মারা মর্তে ফিরে আসে এবং ওই দিন উড়ন্ত ঝাড়ুতে করে হ্যালোইন ডাইনি সারা আকাশ জুড়ে উড়ে বেড়ায়। এই ডাইনির সঙ্গে মানুষের দেখা হলে ক্ষতি হতে পারে বলে, এই রাতে তাঁরা বিভিন্ন রকম ভূতের মুখোশ ও কাপড় পরে কাটাতেন।
আরও পড়ুন: কালীপুজো কবে? জানুন দিনক্ষণ, অমাবস্যা তিথি ও শুভ সময়
হ্যালোইন উদযাপন (Halloween Celebrations)
এই একটি রাতের উদযাপনের জন্য প্রস্তুতি চলে বহুদিন আগে থেকে। এই বিশেষ দিনে সকলে বিভিন্ন রকমের ভুতুড়ে পোশাকে সাজেন। তাঁর সঙ্গে চলে বিভিন্ন রকমের নৈশ ভোজ, পার্টি, কুমড়ো খোদাই করে তার মধ্যে প্রদীপ জ্বালানো, বিভিন্ন ধরনের মজার খেলা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ।
আরও পড়ুন: দীপাবলিতে শুভ যোগ! লক্ষ্মীর আরাধনায় বিপুল অর্থ প্রাপ্তি এই রাশির জাতকদের
ভূত চতুর্দশী কী? (What is Bhoot Chaturdashi)
অন্যদিকে কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে হয় শ্যামা পুজো বা কালী পুজো (Kali Puja)। এর ঠিক আগের রাতে অনেক বাঙালিরা পালন করেন ভূত চতুর্দশী। পূরাণ মতে ভূত চতুর্দশীর রাতে শিবভক্ত বলি, মর্ত্যে আসেন পুজো নিতে। সঙ্গে আসেন তাঁর অনুচর ভূতেরা। চতুর্দশী তিথির ভরা অমাবস্যায় চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকে। সেই ঘন অন্ধকারে যাতে বলি রাজার অনুচরেরা বাড়িতে ঢুকে না পড়েন, তার ব্যবস্থাই করা হত প্রাচীন কালে।
আরও পড়ুন: এই রাশির জাতকরা সবচেয় বেশি আধ্যাত্মিক!
ভূত চতুর্দশীর নিয়মকানুন (Bhoot Chaturdashi Rituals)
অন্যদিকে লোকাচার মতে, কালীপুজোর আগের দিন চোদ্দ শাক খেতে হয়। সন্ধ্যাবেলা অনেকের বাড়িতে জ্বালানো হয় চোদ্দটি প্রদীপ। ঘোর অমাবস্যার রাতে বিদেহী আত্মারা নেমে আসেন মর্ত্যলোকে। এর ঠিক পরের দিনই, চন্দ্রের তিথি নিয়ম মেনে, হয় কালীপুজো।
আরও পড়ুন: দীপাবলির পরেই বছরের শেষ চন্দ্রগ্রহণ! বিপুল প্রভাব পড়বে এই রাশির জাতকদের উপর
ভূত চতুর্দশীতে বাড়িতে জ্বালানো প্রদীপ বা মোমবাতির মতো হ্যালোইনেও বাড়ির চারপাশে টাঙানো হয় বিচিত্র লন্ঠন, যার অধিকাংশই কুমড়ো কেটে তৈরি। চলতি বছরে ৪ নভেম্বর কালীপুজো। তাই এবছর ৩ নভেম্বর পালিত হবে ভূত চতুর্দশী। অন্যদিকে যথারীতি হ্যালোইন উদযাপন হবে ৩১ অক্টোবর।