Visva-Bharati University: হস্টেল খোলার দাবিতে উত্তাল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়। কেন্দ্রীয় অফিসের ভিতর ঢুকে কর্মসচিবকে ঘেরাও করল ছাত্রছাত্রী। একাধিক ভবনে পঠনপাঠন বন্ধ করে ছিল আন্দোলনকারীরা। শিবভক্ত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসচিব (রেজিস্ট্রার) আশিস আগরওয়াল। আজ, মঙ্গলবার শিব চতুর্দশী। তাই তিনি শিবের পুজো দিতে চান। আর তাঁকে ছাড়তে নারাজ গত ২০ ঘন্টা ধরে তাকে ঘেরাও করে রাখা ছাত্রছাত্রীরা। মঙ্গলবার ভোরে কর্মসচিব শিবের নাম করতে করতে মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি দিতে থাকেন এবং অফিসে থেকে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এদিকে ছাত্ররাও মাটিতে শুয়ে পড়েন। ছুটে আসে নিরাপত্তারক্ষীরা। পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে ওঠে। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়ে দেয় তাদের দাবি না মানলে এই ঘেরাও চলবে।
আরও পড়ুন: মেয়েদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল তিলের চাটনি, চট করে বানান বাড়িতেই
ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে উত্তাল বিশ্বভারতী। ঘেরাও করা হয় কর্মসচিব আশিস আগরওয়ালকে। কেন্দ্রীয় অফিসের ভিতর ঢুকে কর্মসচিবকে তাঁর অফিসের ভিতর ঘেরাও করা হয়। পাল্টা পড়ুয়াদের সঙ্গে অবস্থানে বসলেন কর্মসচিব। তিনি চেয়ার ছেড়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মাটিতে বসে পড়েন।
এদিকে এর মধ্যে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের একাংশ পাঠভবন, শিক্ষাভবন, কলাভবন সহ একাধিক ভবনে পঠনপাঠন বন্ধ করে দেয়। গেট টপকে ঢুকে আম্রকুঞ্জে পাঠভবনে ছোটদের ক্লাস বন্ধ করে দেয় ছাত্রছাত্রীরা। একাধিক জায়গায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের ধস্তাধস্তি হয়।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ঘেরাও চলছে। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়ে দিয়েছে, যতক্ষণ না ছাত্রাবাস খুলবে, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় খুলে গিয়েছে কিন্তু হস্টেল খোলা হচ্ছে না। এর ফলে বাইরে থেকে বিশ্বভারতীতে পড়তে আসা হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর সমস্যায় পড়েছে। তাঁদের অভিযোগ, মোটা টাকা ভাড়া দিয়ে মেসে বা বেসরকারি হস্টেলে থাকতে হচ্ছে। অনেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছে।
এর প্রতিবাদ জানিয়ে গত একমাস ধরে এসএফআই এবং টিএমসিপি সর্মথক ছাত্রছাত্রীরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসছে। কিন্তু গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে ছাত্রাবাসগুলিতে সংস্কার এবং স্যানিটেশন চলছে। কিন্তু কবে খোলা হবে তা জানায়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
একই ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে অফলাইনে এবং নির্দিষ্ট সময়ে। একই ভাবে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষা নেওয়া হবে মার্চ মাস থেকে। এর পরেই ছাত্রছাত্রীরা আবার আন্দোলনে নামার হুমকি দেয়।
অভিযোগ, সোমবার সকালে এসএফআই এবং টিএমসিপি সর্মথক ছাত্রছাত্রীরা গেট টপকে পাঠভবন চত্ত্বরে ঢুকে পড়ে। সেই সময় আম্রকুঞ্জে গাছের তলায় ক্লাস চলছিল। ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বন্ধ করে দেয় এবং ছাত্রছাত্রীদের চলে যেতে বলে। একই ভাবে পরপর বন্ধ করে দেওয়া হয় কলাভবন, সঙ্গীতভবন, শিক্ষাভবন-সহ সমস্ত বিভাগের পঠনপাঠন।
এর মধ্যে কেন্দ্রীয় অফিসের পিছন দিকে ঢুকে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা বিশ্বভারতীর কর্মসচিব আশিস আগরওয়ালকে তাঁর দফতরে ঘেরাও করে। সেই সময় তাঁর দফতরে ছিলেন প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব আশোক মাহাতো।
তাঁদের দু'জনকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। চেয়ার ছেড়ে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে মেঝেতে বসে পড়েন কর্মসচিব। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের ধস্তাধস্তি হয় কর্মসচিবের অফিসে ঢোকার সময়।
টিএমসিপি নেত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, "হস্টেল না খোলায় ছাত্রাছাত্রীদের খুব সমস্যা হচ্ছে। আমরা সব পঠনপাঠন বন্ধ করে দিয়েছি ৷ অবিলম্বে হস্টেল খুলতে হবে। না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।"