scorecardresearch
 

'খেলা হবে' নয় জমবে! ভবানীপুর ভাবিয়েছে 'দিদি'-কে, শুভেন্দুকে কিন্তু হাসিয়েছে নন্দীগ্রাম

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন। দক্ষিণ কলকাতায় লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হন মালা রায়। ভবানীপুরে কড়া টক্কর দেয় বিজেপি। বাম ও কংগ্রেস জোট ১৩ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিল। একই সঙ্গে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বিজেপির ভোটের ব্যবধান মাত্র ৩ হাজার ১৬৮।

Advertisement
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী
হাইলাইটস
  • নন্দীগ্রামে গতবার বিপুল ভোটে জিতেছিলেন শুভেন্দু
  • নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মুখ কে? 
  • ভবানীপুর কেন্দ্র মাথাব্যথা ছিলই তৃণমূলের

ছিল ভবানীপুর। হয়ে গেল নন্দীগ্রাম! 'খেলা হবে' নয়, খেলা জমবে! 

বিজেপি নেতারা কটাক্ষ করে বলছেন, হারার ভয়েই নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার ভবানীপুরে প্রার্থী হননি। বেছে নিয়েছেন নন্দীগ্রামকে। বিরোধীরা যাই বলুক, একুশের নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের হট সিট নিঃসন্দেহে নন্দীগ্রাম। এখন প্রশ্ন হল, বিজেপি কি নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীকেই দাঁড় করাবে? বিজেপি সূত্রের খবর, শুভেন্দুই নন্দীগ্রামে গেরুয়া প্রার্থী। শুভেন্দু নিজেও দলের নির্বাচন কমিটির বৈঠকে নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়ানোর ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন। 

ভবানীপুর কেন্দ্র মাথাব্যথা ছিলই তৃণমূলের

২০১১ সালে এই ভবানীপুরে ৮৭ হাজার ৯০৩টি ভোট পেয়েছিলেন তৃণমূল নেতা সুব্রত বক্সী। ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতে যান সুব্রত। পরে সুব্রত বিধানসভায় ইস্তফা দিলে ওই আসনে ভোটে জেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫৪ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে মমতাকে কড়া চ্যালেঞ্জ দিতে ভবানীপুরে তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস-বাম জোট প্রার্থী দেয় দীপা দাশমুন্সিকে। কড়া টক্কর দিয়েছিলেন দীপা। প্রথম কয়েকটি রাউন্ডে লিডও ধরে রেখেছিলেন। পরে অবশ্য ২৫ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতে যান মমতা। 

আরও পড়ুন: ভাঁড়ে মা 'ভবানীপুর'! গত দুই লোকসভাতেই ভবানীপুর ভাবিয়েছে মমতাকে, অতএব... 

২০১৬ সালে ভবানীপুরে মমতা পেয়েছিলেন ৬৫ হাজার ৫২০টি ভোট, সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি পেয়েছিলেন ৪০ হাজার ২১৯টি ভোট। সে বার বিজেপি ৩ নম্বরে ছিল। বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বসু ২৬ হাজার ২৯৯টি ভোট পেয়েছিলেন।  দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে যদি বিধানসভাওয়াড়ি চিত্রটি দেখা যায়, তা হলে একটা বিষয় স্পষ্ট, ভবানীপুর কেন্দ্রে লোকসভায় কিন্তু বিধানসভার থেকে চিত্রটায় বেশ বদল ঘটেছে। ২০১৪ সালে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন তৃণমূলের সুব্রত বক্সী। বিধানসভাওয়াড়ি ফলাফলে ভবানীপুরে বিজেপির থেকে ১৭৬ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন সুব্রত। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ভবানীপুর বিধানসভা এলাকায় কংগ্রেস পেয়েছিল ১৫,৪৮৪ ভোট। সিপিএম ২১,৯৫৪ ভোট। তৃণমূল ৪৭,২৮০ ও এবং বিজেপি ৪৭,৪৫৬টি ভোট। ফলে লোকসভা ভোটের ফলাফল বলছে, নিজের কেন্দ্রেই ভোট সংখ্যার বিচারে পিছিয়ে পড়েন তৃণমূল সুপ্রিমো। 

Advertisement

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন। দক্ষিণ কলকাতায় লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হন মালা রায়। ভবানীপুরে কড়া টক্কর দেয় বিজেপি। বাম ও কংগ্রেস জোট ১৩ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিল। একই সঙ্গে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বিজেপির ভোটের ব্যবধান মাত্র ৩ হাজার ১৬৮।

কোথায় কোথায় শুভেন্দু অধিকারী ফ্যাক্টর
কোথায় কোথায় শুভেন্দু অধিকারী ফ্যাক্টর

নন্দীগ্রামে গতবার বিপুল ভোটে জিতেছিলেন শুভেন্দু

২০১৬-র বিধানসভায় নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬২৩টি ভোট পেয়ে জিতেছিলেন শুভেন্দু। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআই-এর আব্দুল কবীর শেখ পেয়েছিলেন ৫৩ হাজার ৩৯৩ ভোট। বাম আমলে নন্দীগ্রাম ছিল সিপিআই-এর শক্ত ঘাঁটি। বিজেপির বিজন কুমার দাস পেয়েছিলেন মাত্র ১০ হাজার ভোট। ২০১১ সালে তৃণমূলের ফিরোজা বিবি নন্দীগ্রামে ১ লক্ষের বেশি ভোট পেয়ে জিতেছিলেন।

নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মুখ কে? 

২০২১-এর রাজনীতির অঙ্কটা নন্দীগ্রামে পুরো বদলে গেল। সেই শুভেন্দু আজ বিজেপি-তে। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে নন্দীগ্রামে টিকিট দিয়েছিলেন, পরে মন্ত্রী করেন, সেই শুভেন্দু আজ মমতার মুখোমুখি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

ফলে অনেকগুলি ফ্যাক্টর তৈরি হয়েছে। প্রথমত, যদি শুভেন্দু নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী হন, তা হলে তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জ হল, নন্দীগ্রামে গতবার নিজের জনপ্রিয়তায় জয়ী হয়েছিলেন, নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তায়? তা প্রমাণ করা। দ্বিতীয়ত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শক্তিশালী প্রার্থীকে হারানোর চ্যালেঞ্জ। তৃতীয়ত, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মুখ কে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না শুভেন্দু? 

পয়লা এপ্রিল ভোট নন্দীগ্রামে। 

Advertisement