কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় (Subhash Mukhopadhyay) লিখেছিলেন, "দিনে দূরে ঠেলে, দিনান্তে নিলে কাছে..."। এ রাজ্যের ইলিশ (Hilsa)-র জন্য ঠিক এ কথাই খাটে। গোটা বর্ষা ইলিশ-এর জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছেন মৎস্যজীবীরা। শেষমেষ কিছুই পাননি প্রায়। রাজ্যের মানুষের ইলিশ-এর চাহিদা মিটিয়েছে ভিনদেশি ইলিশ। আচমকা শীতের শুরুতে এ রাজ্যের ঘাটে ইলিশ-এর আনাগোনা। দেদার উঠছে ইলিশ।
বর্ষার অমিলের ভর্তুকি
বর্ষায় এ রাজ্যে ইলিশ মেলেনি। বাংলাদেশের উপর ভরসা করে ইলিশ খেতে হয়েছিল। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে শীতে পশ্চিমবাংলার ঘাটে দেদার জালে উঠছে মাঝারে থেকে বড় ইলিশ। অফ সিজন হওয়ায় দামও কম। এরপরও হাত গুটিয়ে থাকবেন?
প্রকৃতির অপ্রত্যাশিত দান
শীত পড়তেই তাই পশ্চিমবাংলার মৎস্যজীবীদের মুখে চওড়া হাসি। এ যেন একদম মেঘ না চাইতেই জল। মূলত জুনের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইলিশের মরশুম। এ সময়ে বঙ্গোপসাগরে ইলিশের ঝাঁক ঘুরে বেড়ায়। তখনই ইলিশ ধরে কিছু বিক্রি হয়। বাকিটা চলে যায় হিমঘরে। কিন্তু এ বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয় সহ ইলিশের আমদানি তেমন হয়নি। মৎস্যজীবীরা তেমনভাবে ইলিশই ধরতে পারেননি। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে শীতের শুরুতেই ঝাঁকে ঝাঁক ইলিশ ধরা দিচ্ছে মৎস্যজীবীদের জালে।
অফ সিজনে ইলিশ
অফ সিজনে ইলিশ পেয়ে রীতিমতো সারপ্রাইজড (surprised) মৎস্যজীবীরা। কাকদ্বীপ, সাগরদ্বীপ, নামখানা সহ একাধিক বন্দর এলাকা থেকে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে ইলিশ উঠেছে জব্বর। বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানার কাছাকাছি এলাকা থেকেই প্রচুর ইলিশ জালে ধরা পড়েছে। গত বুধবার থেকে অন্তত দেড়শো টন ইলিশ ধরা পড়ে গিয়েছে।
প্রবল স্রোতের টান আনছে ইলিশ
মৎস্যজীবীদের দাবি, এই সপ্তাহ যাবৎ বাংলাদেশ (Bangladesh) এবং মায়ানমার(Myanmar)-এর দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে সমুদ্রস্রোত স্রোত বেশি থাকায় মায়ানমার এবং বাংলাদেশের ভাগের মাছ ঢুকে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ফলে ভরা মরশুমে খরা কাটিয়ে অফ সিজনে যদি কিছুটা ক্ষতিপূরণ হয়, সে আশায় বুক বাঁধছেন জেলেরা।
দামও আয়ত্বের মধ্যে
দামও মোটামুটি অফ সিজন অনুযায়ী সাধ্যের মধ্যে। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের মাছ এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে পাইকারি দরে। খোলাবাজারে ২ হাজারের নীচেই রয়েছে দাম। যা অন্যান্য বছর এ সময় সাড়ে তিন-চার হাজার টাকা থাকে। ইলিশের অসময়ে এমন সমুদ্রের উদারতা হাসি ফুটিয়েছে মাছ ব্য়বসায়ী থেকে শুরু করে ইলিশপ্রেমীদেরও। কারণ ছোট ইলিশও রয়েছে কেজি প্রতি ছশো থেকে আটশো টাকা দরে।