হাতে মাত্র একটা দিন। ময়দানের দুই ক্লাবেই রুদ্ধদ্বার প্রস্তুতি। কোভিড কাটিয়ে ছন্দে ফেরার ডার্বি (Kolkata Derby) নিয়ে উত্তাপ সমর্থকদের মধ্যে। তবুও সেই উত্তাপে রয়েছে আশঙ্কাও। ডুরান্ড কাপের (Durand Cup) ডার্বির আগে দল হিসেবে খাতায় কলমে এগিয়ে থাকা এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) সমর্থকরাও আশঙ্কিত। মরশুম শুরু হওয়ার পর দুটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে তারা। একটিতে হেরেছে আর একটিতে ড্র। অন্যদিকে গোল না খেয়ে দুটি ম্যাচই ড্র করেছে ইমামি ইস্টবেঙ্গল (Emami East Bengal)। ডার্বি (ATK Mohun Bagan vs Emami East Bengal) খেলতে নামার আগে তাই এই অঙ্কও ভাবাচ্ছে স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন (Stephen Constantine) ও জুয়ান ফেরান্দোকে (Juan Ferrando)।
কোথায় সমস্যা হচ্ছে এটিকে মোহনবাগানের
মাঝমাঠ দারুণ খেলছে এটিকে মোহনবাগানের। হুগো বুমোস, জনি কাউকোরা খুব পরিশ্রম করছেন। মাঝেমধ্যে কার্ল ম্যাকহিউও দারুণ কিছু বল বাড়াচ্ছেন। দুই উইং বিশেষত ডানদিক থেকে আশিস রাইকে আরও সক্রিয় হতে হবে। অপরদিক থেকে আশিক ক্রুনিয়ান কিন্তু ধীরে ধীরে নিজেকে মেলে ধরছেন। সমস্যা রয়েছে স্ট্রাইকারদের ক্ষেত্রে। মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসোরা বল গোলে রাখতে পারছেন না। গত মরশুমে ডার্বিতে হ্যাটট্রিক করা কিয়ান নাসিরিও মিস করছেন অনেক সুযোগ। তবে লাল-হলুদ জার্সি দেখলেই তিনি ফের জ্বলে উঠবেন কি না তা সময় বলবে। ডিফেন্স নিয়েও যথেষ্ট চিন্তা থাকছে এটিকে মোহনবাগানের। কারণ, প্রথম ম্যাচে রাজস্থান ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ৩ গোল খাওয়ার পরে, ১ গোলে এগিয়ে থেকেও ড্র করতে হয়েছে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে। দুই ম্যাচ চার গোল খেয়েছে তারা। এখনও ফ্লোরেন্টিন পোগবা, প্রীতম কোটাল জুটির বোঝাপড়া সেভাবে তৈরি হয়নি। এটাই চিন্তায় রাখছে এটিকে মোহনবাগান সমর্থকদের।
আরও পড়ুন: এক মরশুমে ৪৪ গোল! UEFA-র বর্ষসেরা ফুটবলার বেনজিমা
রণকৌশল কী হতে পারে?
ডার্বিতে প্রীতমের সঙ্গে কার্ল ম্যাকহিউকে স্টপার হিসেবে ব্যবহার করতেই পারেন জুয়ান। সে ক্ষেত্রে স্ট্রাইকার করে দেওয়া যেতে পারে হুগোকে। দীপক টাংরিকে ব্লকার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। মাঝমাঠে প্রচুর পাস খেলছে ইমামি ইস্টবেঙ্গল। সেটাকে যদি আটকাতে পারেন দীপক, তবে ডিফেন্সের উপর চাপটা অনেকটা কমে যাবে। আবার দীপকে জায়গায় প্রণয়কেও খেলাতে পারেন জুয়ান। তাতে মিদফিল্ডে ফুটবলার যেমন বাড়ান যাবে তেমনি সুমিত পাসি, অ্যালেক্স লিমাদের আটকান কিছুটা সহজ হবে।
আরও পড়ুন: ধোনি নিয়ে হঠাত্ আবেগঘন পোস্ট বিরাটের, 'অবসর নিচ্ছেন?' প্রশ্ন ভক্তদের
স্ট্রাইকার সমস্যা ইমামি ইস্টবেঙ্গলেও
গোলের সুযোগ তৈরি হচ্ছে কিন্তু গোল হচ্ছে না। ভিপি সুহের, সুমিত পাসি, তুহিন দাসরা চেষ্টা করছেন। দুই ম্যাচে তবুও একটাও গোল করতে পারেনি ইমামি ইস্টবেঙ্গল। অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়েও একগাদা সুযোগ নষ্ট করেছেন ফুটবলাররা। মাঝমাঠেও কিছু সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাড়াহুড়ো করে পাস করতে গিয়ে ভুল পাস করে ফেলছেন ফুটবলাররা। তবে ভাল খেলছেন রাইট উইঙ্গার অনুকেত যাদব ও অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়।
কি হতে পারে ইমামি ইস্টবেঙ্গলের স্ট্র্যাটেজি
ডার্বিতে কিছুটা হলেও পিছিয়ে থেকে শুরু করছে স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের দল। তাই গোল না খাওয়াই হবে প্রথমিক লক্ষ্য। এমনিতে, নিজের ডিফেন্স শক্ত করেই আক্রমণে যাওয়া পছন্দ করেন স্টিফেন। সেটাই চেষ্টা থাকবে। পাশাপাশি যদি দুই জনের মধ্যে কোনও বিদেশি স্ট্রাইকারকে ডার্বিতে নামিয়ে দেওয়া যায় তবে এটিকে মোহনবাগানের ডিফেন্সে চাপ বাড়বে। দ্রুত কাউন্টার অ্যাটাক হলেই কেঁপে যাচ্ছে সবুজ-মেরুন ডিফেন্স। আর সেটা স্টিফেনের নজর এড়ায়নি। সৌভিক চক্রবর্তীর মত অভিজ্ঞ ফুটবলার স্টিফেনের তুরুপের তাস হতে পারেন। পরিশ্রম করে খেলছেন লিমাও। তবে বাঁ দিকের উইংকে আরও সচল করতে হবে। ডানদিক থেকে আক্রমণ হলেও বাঁ দিক থেকে সেভাবে সুযোগ তৈরি হচ্ছে না। এটিকে মোহনবাগান ডিফেন্স ভাঙতে দুই উইং দিয়ে ক্রমাগত আক্রমনে আসতে হবে ইমামি ইস্টবেঙ্গলকে।