৩ জুলাই যৌথ বিবৃতি নিজেদের ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করলেন বলিউডের তারকা জুটি আমির খান (Aamir Khan) ও কিরণ রাও (Kiran Rao) । তবে এই বিবাহবিচ্ছেদকে সমাপ্তি হিসাবে না দেখে একটি নতুন যাত্রার সূচনা করতে চান তাঁরা। কিরণের আগে রীনা দত্তের (Reena Dutta) সঙ্গে ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবন ছিল আমিরের। ২০০২ সালে বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। কিন্তু সেই বিচ্ছেদে ছিল না কোনও তিক্ততা। আমির- রীনার দুই ছেলে মেয়ে জুনেইদ খান ও ইরা খান।
আমির খান ও রীনা দত্তের অজানা গল্প
আমির ও তাঁর প্রথম স্ত্রী রীনার গল্পটা শুরু হয়েছিল অনেকটা সিনেমার মতো। তাঁরা প্রতিবেশী ছিলেন এবং একে অপরের দিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টার জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকতেন। শেষ পর্যন্ত সাহস জুগিয়ে রীনাকে প্রস্তাব দেন আমির। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে তাঁর প্রেমে প্রত্যাখান করেন রীনা। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তিও হয় অনেক বার। কিন্তু শেষমেশ আমির যখন আশা ছাড়তে চলেছিলেন, রীনা তাঁকে জানান, তাঁরও একই অনুভূতি রয়েছে।
১৯৯৯ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমির খান বলেছিলেন, "আমি আমার জানালার সামনে অনেকটা সময় কাটিয়েছি। আমি ওঁকে আমার ভালোবাসার কথা জানিয়ে আশা করেছিলাম ইতিবাচক উত্তর পাবো।" অভিনেতা আরও বলেন, "কিন্তু বারবার না করে দেয় ও আমায়। আমি সহজে হার মানি না। কিন্তু সেই সময় আমার মন ভেঙে যায়। আমি তখন আর জানলার পাসে না গিয়ে, ওঁকে ভুলে যাওয়া চেষ্টা করতে শুরু করলাম।"
আরও পড়ুন: ৩ বছর লিভ ইনের পর বিয়ে আমির -কিরণের! ছেলে হয়েছিল সারোগেসির মাধ্যমে
রীনাকে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছিলেন আমির
রীনা দত্তের সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন আমির একবার রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু এটা দেখে খুশী না হয়ে চটে গিয়েছিলেন তিনি। আমিরকে তিনি বলেন, এরকম কাজ আর না করতে। তখন অভিনেতা বুঝতে পারেন, প্রেম প্রকাশের জন্য এটা সঠিক না।
'লগান' প্রযোজনায় আমিরকে সাহায্য করেছিলেন রীনা
সম্প্রতি 'লগান' ছবির ২০ বছর পূর্ণ হল। সেই সময় একটি সাংবাদিক বৈঠকে আমির খান ব্লকবাস্টার এই ছবির স্মৃতিচারণ করেন। তখন তিনি জানান, যে ভাবে তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে রীনা 'লগান'-র সময় তাঁর পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন, তা তিনি কখনও ভুলবেন না। 'ক্যায়ামত সে ক্যায়ামত তক' ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রেখেছিলেন রীনা দত্ত। 'লগান' ছবির মাধ্যমে প্রযোজনায় হাতেখড়ি হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: প্রেমের স্বার্থে ধর্মের প্রাচীর ভেঙেছিলেন এই বলি তারকারা!
ডিভোর্সের পরেও তিক্ততা নেই আমির -রীনার সম্পর্কে
২০০২ সালে বিবাহবিচ্ছেদের পরও আমির -রীনার বন্ধুত্ব ভাঙেনি। তাঁরা পানী ফাউন্ডেশনের কাজ একসঙ্গেই করেন। 'কফি উইথ করণ সিজন ৬'-এ এসে আমির খান বলেছিলেন, "আমার আর রীনার ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবন ছিল। যখন আমাদের বিচ্ছেদ হয়, আমি একেবারে ভেঙে পড়েছিলাম, আমাদের জন্য,আমাদের পরিবারের জন্য। আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের মতো করে পরিস্থিতি সামলাতে। আমাদের দুজনের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান বিচ্ছেদের পরেও কমেনি।"
আরও পড়ুন: "আমি হাল ছাড়িনি!" জীবনে পরপর ঘটেছে দুর্ঘটনা, মনের কথা উজার করলেন মিমি
প্রসঙ্গত, আলাদা থাকলেও বিচ্ছেদের পর, কিরণ রাও ও আমিরও আত্মীয়ের ন্যায় ভাল সম্পর্কে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে তাঁদের ছেলে আজাদের কাস্টডি কার কাছে থাকবে তা জানা যায়নি। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, আজাদের একনিষ্ঠ অভিভাবকের মতো, ওকে একসঙ্গেই যত্নে বড় করবেন তাঁরা।