ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি (Tollywood Industry)। পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক না হলেও, হলমুখী হচ্ছেন দর্শকরা। বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে থেকে আরামের ওটিটি স্ট্রিমিং ছাড়াও, টিকিট কেটে বড় পর্দায় মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলির স্বাদ চেটেপুটে নিচ্ছেন বহু সিনেমাপ্রেমীরা। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে অন্য জায়গায়। যদিও এ সমস্যার আশঙ্কা একেবারেই কেউ করেননি, তা বললে ভুল হবে। এতে কতটা ক্ষতি হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির?
এবার আসা যাক মূল কথায়। করোনা অতিমারীর জেরে বিনোদন জগতে কতটা খারাপ প্রভাব পড়েছে, তা প্রায় সকলের জানা। একদিকে একের পর এক ঘোষণা হচ্ছে, নতুন ছবির নাম। অন্যদিকে পাইপলাইনে থাকা ছবিগুলি ধীরে ধীরে মুক্তি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ, একই সঙ্গে একই সময় মুক্তি পাচ্ছে একাধিক ছবি। ছবির প্রিমিয়ার তো বটেই, এমনকী মুক্তির পরেই দর্শক সংখ্যা ভাগ হচ্ছে। তবে কি কোনও উপায় আছে?
আরও পড়ুন: ফ্রেমবন্দি রাজা -মাম্পি! জুটিকে ফের একসঙ্গে পর্দায় দেখার আবদার 'রাম্পি' ফ্যানদের
উপায় একেবারে নেই বললে ভুল হবে। তবে এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে টলিপাড়ায় চলে আসার কারণ কিছুটা হয়তো ইন্ডাস্ট্রির একজোট হওয়ার অভাব, না সোজা কথায় অন্তর্দ্বন্দ্ব। 'সবাই সবার আপন' সুলভ আচরণ ওপর ওপর থাকলেও, আসলে ভিতরের এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এই সংক্রান্ত বিষয়, টলিপাড়ার শিল্পীদের জিজ্ঞেস করলে, খুব বাস্তববাদী, সাহসী বা ঠোঁটকাঁটারা ছাড়া সাধারণত ডিপ্লোম্যাটিক উত্তর দিয়ে থাকেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: ভিকি- ক্যাটরিনার বিয়ের মেনুতে কী কী থাকছে?
* ৩ ডিসেম্বর একই সঙ্গে মুক্তি পেয়েছে শুভ্রজিৎ মিত্রর 'অভিযাত্রিক' এবং কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের 'অনুসন্ধান'। প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানও হয়েছিল একই দিনে। বলাই বাহুল্য দর্শক সংখ্যা কিছুটা ভাগ হয়েছে। এই পরিস্থিতি কিছুটা এড়ানো যেত, চলতি সপ্তাহে যে কোনও একটা ছবি মুক্তি পেলে। কারণ আগামী ১০ ডিসেম্বর, শুক্রবার সে রকম কোনও বড় বাংলা ছবির মুক্তি নেই। ২৪ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে অভিজিৎ সেনের 'টনিক'। একই ঘটনা ঘটতে চলেছে আগামী বছরেও। একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত কিংবা বড় বাজেটের ছবিগুলি।
* ২১ জানুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে সায়ন্তন ঘোষালের 'সস্তিক সংকেত'। একই দিনে মুক্তির তারিখ ঘোষণা হয়েছে রাজ চক্রবর্তীর 'ধর্মযুদ্ধ'-র। ২৩ থেকে ২৬ জানুয়ারি একটা ছুটির মেজাজে থাকেন সকলে। আর দুটি ছবির ক্ষেত্রেই সেটাকেই কাজে লাগাতে চেয়েছেন নির্মাতারা।
আরও পড়ুন: সৃজিত ভার্সেস সৃজিত ও অরিত্র! ফেব্রুয়ারিতে একই দিনে ৩ বড় ছবির মুক্তি
* ৪ ফেব্রুয়ারি আসছে অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের 'বাবা বেবি ও'। একই দিনে মুক্তি পাবে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন'। এমনকী আগে কথা ছিল সৃজিতের আরও এক ছবি 'এক্স=প্রেম' মুক্তি পাবে একই দিনে। ১৪ জানুয়ারি আসছে শ্রীমন্ত সেনগুপ্তের 'আবার বছর কুড়ি পরে'। ১১ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে রাজর্ষি দে -র ছবি 'আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা'। তারিখ এখনও ঘোষণা না হলেও আগামী বছরের শুরুর দিকেই মুক্তি পাওয়ার কথা অরিন্দম শীলের 'মহানন্দা', রাহুল মুখোপাধ্যায়ের 'কিশমিশ' এবং অর্জুন দত্তের 'শ্রীমতি'-র।
* আগামী ২০ মে আসছে বহু প্রতীক্ষিত ছবি 'বেলা শুরু'। কৌশিক গানগুলির ছবি 'লক্ষ্মী ছেলে' মুক্তি পাওয়ার কথা ১৭ জুন। আগামী বছরের বড়দিনের আগে ২৩ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের 'হামি ২'। এছাড়াও বাক্সবন্দি হয়ে পরে আছে আরও একগাদা ছবি। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে নতুন ছবির কাজও।
আরও পড়ুন: ঘরোয়া পার্টিতে জমাট গানে - আড্ডায় 'উল্লাস' টলি তারকাদের! দেখুন PHOTOS
প্রসঙ্গত, কোভিড অতিমারির প্রথম পর্যায় প্রায় টানা সাত মাস বন্ধ থাকার পর, গত বছর অক্টোবর মাসে সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্স খোলার অনুমতি মেলে। নিউ নর্মালে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে, এই আশা করে পুনরায় সিনেমা হল খুলেছিলেন হল মালিকেরা। কিন্তু পুজোর সময় কিছুটা টিকিট বিক্রি হলেও তারপর হাতেগোনা দর্শক, আর ক্ষতির বোঝা বাড়তে থাকে তাঁদের।
আরও পড়ুন: দাম্পত্যে ফাটল দেবলীনা- তথাগতর! নেপথ্যে তৃতীয় ব্যক্তি, এই অভিনেত্রী
সবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছিল কিন্তু ফের অশনি সংকেতের ন্যায় হাজির হয় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। সিনেমা হলের পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত শ্যুটিং... ফের করোনার প্রকোপ কিছুটা কমতেই আবারও কাজে ফেরেন সকলে। তবে আগে থেকে আঁচ পাওয়া এই সমস্যার হয়তো কিছুটা সুরাহা মিলতে পারে যদি আক্ষরিক অর্থে একজোট হয় টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। ভাল হোক বাংলা ছবির। ভাল হোক ইন্ডাস্ট্রির। কারণ আখেরে এটাই সকলের চাওয়া -পাওয়া।